হোম > জীবনধারা > ভ্রমণ

বিশ্বভ্রমণের রেকর্ড ভাঙার দিন

ফিচার ডেস্ক

এলিজাবেথ ককরেন সিম্যান। ছবি: সংগৃহীত

৮০ দিনের কম সময়ে বিশ্বভ্রমণ। এমনই এক অদ্ভুত ইচ্ছা নিয়ে ৭২ দিন ৬ ঘণ্টা ১১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে বিশ্ব ভ্রমণ করে এক বিশাল আন্তর্জাতিক আলোড়ন তৈরি করেছিলেন এক নারী। এলিজাবেথ ককরেন সিম্যান নামের এই নারী পেশায় ছিলেন সাংবাদিক। নেলি ব্লাই ছিল তাঁর ছদ্মনাম। এই নামে তিনি লিখতেন এবং জনপ্রিয় ছিলেন।

মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, ৮০ দিনের কম সময়কে কেন বেছে নেওয়া হলো। তাহলে জানতে হবে একটি গল্প; ফিলিয়াস ফগ নামের এক ইংরেজ ভদ্রলোকের এক অদ্ভুত গল্প। একটি বাজিতে জিততে মাত্র ৮০ দিনে বিশ্ব ভ্রমণ করার দুঃসাহসিক অভিযাত্রায় বের হন ফিলিয়াস। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পাসপারতু নামের এক ব্যক্তি।

তাঁরা লন্ডন থেকে যাত্রা শুরু করেন। ফগ ও পাসপারতু ভারত এবং অন্যান্য স্থানে বিভিন্ন বিপদের সম্মুখীন হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছার পর ফগ নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে নিউইয়র্ক থেকে জাহাজে যাত্রা করেন ইংল্যান্ডের পথে। লিভারপুলে মিসটার ফিক্স নামের একজন গোয়েন্দা তাঁকে গ্রেপ্তার করলেও আসল ডাকাত ধরা পড়ায় ফগ মুক্তি পান। তিনি লন্ডনে পৌঁছান নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মিনিট পরে এবং বাজিতে হেরে যান বলে মনে করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জানা যায়, তিনি আসলে বাজিটি জিতে গেছেন। আর এই গল্পই ছিল ‘অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডেইজ’ নামের এক উপন্যাসের।

এই উপন্যাসের যেখানে শেষ, সেখান থেকে শুরু হয় নেলি ব্লাইয়ের বাস্তব গল্প। নেলির এই ভ্রমণ ছিল জুল ভার্নের ১৮৭৩ সালে প্রকাশিত সেই উপন্যাস ঘিরে।

উপন্যাসের ফিলিয়াসের ৮০ দিনের রেকর্ডটি ভাঙার প্রচেষ্টা থেকেই নেলি বিশ্বভ্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। এই যাত্রা শুরু করার জন্য নেলিকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল। কারণ, সেই যুগে একজন নারীর পক্ষে একা এত বড় ভ্রমণে বের হওয়া ছিল নজিরবিহীন।

নেলি ছিলেন একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক। তিনি কাজ করতেন ‘নিউইয়র্ক ওয়ার্ল্ড’ নামের একটি পত্রিকায়। তাঁর এই বিশ্বভ্রমণের প্রস্তাব পত্রিকার সম্পাদককে জানানো হলে প্রথমে তাঁকে ‘অসম্ভব’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন সম্পাদক। কারণ, তিনি মনে করেছিলেন, একজন নারীর জন্য একজন ‘সুরক্ষক’ দরকার হবে এবং বেশি মালপত্র থাকার কারণে তাঁর গতি কমে যাবে। কিন্তু একসময় এসবের সমাধান করে ফেলেন নেলি। তিনি প্রধানত স্টিমার ও ট্রেনে ভ্রমণ করেছিলেন। গল্পের ফিলিয়াসের মতো অসংখ্য স্যুটকেস না নিয়ে, নেলি শুধু হাতে বহন করার মতো একটি ছোট ব্যাগে নিয়ে নেন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।

এলিজাবেথ ককরেন সিম্যান পেশায় ছিলেন সাংবাদিক। নেলি ব্লাই ছিল তাঁর ছদ্মনাম। তাঁর বিশ্বভ্রমণের যাত্রা শুরু হয় ১৮৮৯ সালের ১৪ নভেম্বর, নিউ জার্সির হোবোকেন থেকে।

নেলি ব্লাই পূর্ব দিকে ভ্রমণ শুরু করেন। ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, সুয়েজ খাল, সিলন (শ্রীলঙ্কা), সিঙ্গাপুর, হংকং এবং জাপানে বিরতি নেন। এরপর প্রশান্ত মহাসাগর পার হয়ে সানফ্রান্সিসকোতে পৌঁছান। ইংল্যান্ডে থাকাকালীন জুল ভার্নের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন নেলি।

রেল ও স্টিমারের ওপর তাঁকে নির্ভর করতে হয়েছিল। সে কারণে তাঁকে মাঝেমধ্যে সংযোগকারী জাহাজ বা ট্রেন ধরার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। এতে তাঁর অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। এশিয়ায় তিনি কিছুটা পিছিয়ে পড়েন।

নেলি ব্লাই স্টিমার, ট্রেন, টাগবোট ও রিকশা ব্যবহার করেছিলেন তাঁর ভ্রমণে। তিনি ১৮৯০ সালের ২৫ জানুয়ারি নিউ জার্সিতে ফিরে যান। আর এই কাল্পনিক রেকর্ড ভেঙে দিয়ে একটি বাস্তব বিশ্ব পরিভ্রমণের জন্য একটি নতুন বিশ্ব রেকর্ড স্থাপন করেন।

নেলির জন্ম ১৮৬৪ সালের ৫ মে। ১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি নিউমোনিয়ার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

কেমন দেখতে চাই দেশের পর্যটনশিল্প

২০২৬ সালে ভ্রমণে যেসব ট্রেন্ড থাকবে

ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোন দেশ ব্যয়বহুল, সাশ্রয়ীর তালিকায় রয়েছে কারা

সেরা দশের শীর্ষে ব্যাংকক, তলানিতে কে?

স্বল্প খরচে নেপাল ভ্রমণের ১১ পরামর্শ

নেপালের মহাপরিকল্পনায় এভারেস্ট রক্ষা পাবে তো?

উত্তরের হিম রাজ্যে তুষারবিলাসের রোমাঞ্চ, হিমাঙ্কের নিচে তপ্ত রাত

গ্রামের নাম মহিষখোলা

মাধবকুণ্ড ঝরনার পানিতে বিরল ঝরনাপাখি

বাংলাদেশের পর্যটক কমায় ভারতে নিম্নমুখী আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীর সংখ্যা