হোম > জীবনধারা > ফিচার

চ্যাটজিপিটি কি ‘বিশ্বাসযোগ্য’ চিকিৎসক

ফিচার ডেস্ক

চ্যাটজিপিটি সব সময় সঠিক, নতুন বা ব্যক্তিগত তথ্য দেয় না। ছবি: পেক্সেলস

আজকাল যেকোনো কিছুতে চ্যাটজিপিটিই যেন ভরসা। যেকোনো কিছু জানতে, শিখতে এমনকি বন্ধু হিসেবেও মানুষ চ্যাটজিপিটিকে বেছে নিচ্ছেন। রান্নাঘরের রেসিপি থেকে শুরু করে অফিসের কাজ—সবকিছুর জন্য আমরা ছুটে যাই এই স্মার্ট চ্যাটবটের কাছে। কিন্তু যখন স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আসে, তখন কি এই এআই বন্ধুটির ওপর ভরসা করা যায়? এই ডিজিটাল চিকিৎসকের ভালো-মন্দ দিকগুলো একটু ঘেঁটে দেখা উচিত নয় কি? চ্যাটজিপিটি হলো একধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবট। ২০২২ সালের নভেম্বরে আসার পর থেকে প্রতি ছয়জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন এটিকে মাসে একবার অন্তত স্বাস্থ্য তথ্যের জন্য ব্যবহার করেন। কারণ, এটি দ্রুত, বিনা মূল্যে ও ব্যক্তিগতভাবে তথ্য দেয়।

জানতে হবে ঝুঁকি

সুবিধা থাকলেও চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করার আগে কিছু বড় বিপদ সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, এর তথ্য সব সময় নির্ভুল হবে না। চ্যাটজিপিটি সব সময় সঠিক, নতুন বা ব্যক্তিগত তথ্য দেয় না। এর নির্ভুলতার হার ২০ থেকে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। তাই শুধু এর ওপরে নির্ভর করে রোগ নির্ণয় করা উচিত নয়। তাকে সঠিকভাবে জিজ্ঞাসা করতে না পারলে সে নিজে থেকে নির্ভুল পরামর্শ দিতে পারে না। তাই আপনার প্রশ্নও ঠিক হতে হবে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি যেমন আরও প্রশ্ন করে তারপরে সব মিলিয়ে একটা তথ্য দেন, চ্যাটজিপিটি আপনাকে সেভাবে উত্তর দেবে না। এ ছাড়া এটিকে যে তথ্য দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, তা সব সময় সাম্প্রতিক বা প্রখ্যাত চিকিৎসা জার্নাল থেকে আসে না। ফলে তার দেওয়া তথ্য অনেক সময় পুরোনো হতে পারে।

অনেক সময় এটি এমনভাবে মিথ্যা তথ্য বা সোর্স তৈরি করতে পারে, যা দেখলে মনে হবে, সব ঠিক আছে। এই অলীক কল্পনাগুলো সহজে ধরা যায় না এবং বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। এটি আপনার ব্যক্তিগত ইতিহাস, পারিবারিক স্বাস্থ্য বা শারীরিক পরীক্ষা করতে পারে না। ফলে আপনার অবস্থার জন্য সুনির্দিষ্ট ও ব্যক্তিগত পরামর্শ দেওয়া এটির পক্ষে সম্ভব নয়। এ ছাড়া আপনি একই প্রশ্ন বারবার করলে এটি প্রতিবার একই উত্তর নাও দিতে পারে।

চ্যাটজিপিটি ব্যবহারের ভালো দিক

চ্যাটজিপিটিকে স্বাস্থ্য তথ্যের জন্য ব্যবহার করার কিছু চমৎকার সুবিধা রয়েছে। যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গা থেকে আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিনা মূল্যে তথ্য পেতে পারেন। অ্যাপয়েন্টমেন্টের ঝামেলা নেই, অপেক্ষাও করতে হয় না। এ ছাড়া ব্যক্তিগত বা বিব্রতকর স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে একজন মানুষের সঙ্গে কথা বলার চেয়ে চ্যাটবটের সঙ্গে আলোচনা করা অনেক সহজ। এ ছাড়া এই চ্যাটবট জটিল বিষয় সহজে বুঝিয়ে দিতে সাহায্য করে। কঠিন কঠিন মেডিকেল টার্ম বা রোগ সম্পর্কে তথ্য সহজে সরল বাংলায় বুঝে নিতে পারবেন। চিকিৎসক কী বলেছেন, তা স্পষ্ট করতে এটি শিক্ষকের মতো কাজ করে।

কঠিন কঠিন মেডিক্যাল টার্ম বা রোগ সম্পর্কে তথ্য সহজে সরল বাংলায় বুঝে নিতে পারবেন। ছবিঃ পেক্সেলস

আপনার যদি কোনো রোগ ধরা পড়ে, তবে কিছু বিষয়ে এর সহায়তা নিতে পারেন। যেমন:

  • ওষুধের রিমাইন্ডার দেওয়া।
  • উপসর্গগুলোর অগ্রগতি খেয়াল রাখা।
  • মানসিক চাপ বা উদ্বেগ মোকাবিলা করার কৌশল জানা
  • মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য এটি কিছু প্রাথমিক পরামর্শ ও সমাধান দিতে পারে। তবে এটি মানুষের মতো সহানুভূতি দেখাতে পারে না।

ভরসা করবেন কি না

বিশ্বাস একটি বড় বিষয়। চিকিৎসক-রোগীর সম্পর্ক যেখানে বিশ্বাস আর ভরসার ওপর গড়ে ওঠে, সেখানে একটি মেশিনের ওপর ভরসা করা কঠিন। এটি কার্যকর তথ্য দিলেও মানুষের মতো আন্তরিকতা ও অভিজ্ঞতা এর নেই। চ্যাটজিপিটি থেকে পাওয়া স্বাস্থ্য তথ্যকে আপনি কেবল একটি প্রথম ধাপের পরামর্শ হিসেবে নিতে পারেন। এরপর এটিকে অবশ্যই অন্যান্য নামকরা স্বাস্থ্য ওয়েবসাইট ও চিকিৎসকের কাছ থেকে যাচাই করে নেবেন।

চ্যাটজিপিটির কাছে সঠিক উত্তর পেতে হলে এটিকে স্মার্টভাবে প্রশ্ন করতে হবে। ছবিঃ পেক্সেলস

ব্যবহারের সহজ টিপস

চ্যাটজিপিটি থেকে সেরা উত্তর পেতে হলে এটিকে স্মার্টভাবে প্রশ্ন করতে হবে। আপনার প্রম্পট বা প্রশ্ন দেওয়ার সময় এ বিষয়গুলো মনে রাখুন:

  • সুনির্দিষ্ট জিজ্ঞাসা: প্রশ্ন একেবারে টু দ্য পয়েন্টে হতে হবে। আমার মুখ চুলকাচ্ছে না বলে বলুন, আমার তালু চুলকাচ্ছে। যেখানে যা সমস্যা, স্পষ্ট করে সেটাই উল্লেখ করতে হবে। যত স্পষ্ট হবেন, উত্তর তত ভালো হবে।
  • প্রসঙ্গিক তথ্য দিন: আপনি কেমন অনুভব করছেন, কী ওষুধ খাচ্ছেন, কোনো অ্যালার্জি আছে কি না, এই তথ্যগুলো দিন। এটি আপনার পরিস্থিতি বুঝতে সাহায্য করবে।
  • তথ্যসূত্র যাচাই করুন: একে বলুন, ‘তোমার দেওয়া তথ্যের জন্য নির্ভরযোগ্য মেডিকেল জার্নালের সোর্স দাও।’ এরপর সেই সোর্সগুলো নিজে থেকে পরীক্ষা করে নিন।
  • বিনয়ী হয়ে জিজ্ঞাসা করুন: আপনি চাইলে এটিকে বলতে পারেন, ‘অনুগ্রহ করে বিষয়টি সহজ ও বন্ধুসুলভ ভাষায় ব্যাখ্যা করো।’

সূত্র: হেলথলাইন

ফুলে ফুলে রঙিন হোক বারান্দা

জেনে নিন, স্থায়ীভাবে কোন জায়গাগুলোর ওপর দিয়ে বিমান চলে না

ডিজনির রাজকুমারীরা: রূপকথার হাত ধরে প্রজন্মের শিক্ষা

হাওয়া বদল: সুস্থ থাকার ম্যাজিক দাওয়াই কি হারিয়ে গেল?

বিয়ে করলে নাগরিকত্ব পাবেন যেসব দেশের

ডলারের জন্ম যে শহরে

মন শান্ত রাখে ইনডোর প্ল্যান্ট

রুক্ষতা থেকে চুলকে বাঁচাবেন যেভাবে

বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী ‘রাষ্ট্রপ্রধান’ ড্যানিয়েল জ্যাকসনের দেশের নাম কী?

পাসপোর্টের ইতিকথা: লাল, নীল কিংবা সবুজ বইটি যেভাবে এল