কম্পিউটারের অক্ষরগুলো ছাপার অক্ষরের মতো নয়। ছাপার অক্ষর দেখার জন্য সহজেই চোখ ফোকাস করা যায়। অন্যদিকে মনিটরের অক্ষরগুলোর মধ্যভাগ ভালো দেখা গেলেও পার্শ্বভাগের ঘনত্ব কম হওয়ায় পরিষ্কারভাবে ফোকাস করা যায় না। মনিটরের অক্ষরগুলোর এই ফোকাসের অসমতার জন্য চোখের কাছে দেখার যে প্রক্রিয়া, তা ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। এভাবে দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করলে চোখের নানা উপসর্গ দেখা দেয়। চোখে ব্যথা, চোখ জ্বালাপোড়া করা, চোখের ক্লান্তি, ঝাপসা দেখা, মাঝেমধ্যে একই জিনিস দুটি দেখা এবং মাথাব্যথা কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম রোগের উপসর্গ।
- চোখের ব্যায়াম
কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখ কিছুক্ষণ বন্ধ রাখুন। তারপর ঘন ঘন পলক ফেলুন কয়েকবার। এবার বন্ধ চোখ চক্রাকারে ঘোরান–একবার যেদিকে ঘুরিয়েছেন, পরেরবার উল্টো দিকে ঘোরান। এতে চোখের ভালোই ব্যায়াম হয়।
- কাজের অবসরে চোখ ম্যাসাজ
কাজের অবসরে চোখ বন্ধ করে দুই হাতের তালু দিয়ে চোখ ঢেকে রাখুন ১ মিনিট। এবার ছেড়ে দিন। প্রতি অবসরে অন্তত একবার এটা করুন।
- পরিষ্কার পানির ঝাপটা
কাজের ফাঁকে চোখে পরিষ্কার পানির ঝাপটা দিন। চোখ জ্বালা করলেই এ কাজটি করা উচিত। কাজের সময় চোখের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলেও এটা করা উচিত।
- একটু হাঁটুন
কাজের বিরতিতে বসে থেকে বিশ্রাম না নিয়ে একটু হাঁটুন। হাঁটলে চোখের উপকার পাবেন। বসে থাকা অবস্থায় চোখের অবস্থান একরকম থাকে আর হাঁটার সময় চোখ অন্য রকম পরিবেশ পাবে।
- স্ক্রিন প্রটেক্টর
মনিটরের গায়ে স্ক্রিন প্রটেক্টর ব্যবহার করুন অথবা চোখে জিরো পাওয়ার এআর কোটিং চশমা ব্যবহার করুন। কম্পিউটারে কাজ করতে চোখের জন্য উপকারী এমন চশমা পাবেন বিভিন্ন ভালো সানগ্লাসের দোকানে।
- মনিটর থেকে নিরাপদ দূরত্ব
মনিটর থেকে চোখের দূরত্ব দুই ফুট হতে হবে। এতে মনিটর থেকে বের হওয়া আলোকরশ্মি চোখে প্রভাব ফেলতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে এলসিডি বা এলইডি মনিটর ব্যবহার ভালো।
- পেছনে আলো রাখুন
দীর্ঘ সময় মনিটরের সামনে বসার পরিকল্পনা থাকলে অবশ্যই আপনার ঠিক পেছনে পিঠ বরাবর আলোর ব্যবস্থা রাখুন। সেই আলো মনিটরের আলোর তীব্রতাকে বাধা দেবে।
- অন্ধকারে মনিটর ব্যবহার নয়
কখনোই অন্ধকার ঘরে বসে কম্পিউটারে কাজ করা উচিত নয়। আলোর ব্যবস্থা কম থাকলে মনিটরের উজ্জ্বলতা কমিয়ে নিন।
- বিশেষ পাওয়ারের চশমা
চক্ষু বিশেষজ্ঞরা কম্পিউটারে কাজ করার জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই করে বিশেষ পাওয়ারের চশমা দিয়ে থাকেন। ৩৫ বছরের কম বয়সী মানুষের ইউনিফোকাল বা শুধু একটি পাওয়ারের চশমা দিলেই চলে। কিন্তু পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের জন্য কোনো কোনো সময় মাল্টি ফোকাল চশমা ব্যবহার করতে হতে পারে।
লেখক: সাবেক ফ্যাকাল্টি ও প্রশিক্ষক, চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র