রান্না করে তিন বেলা খাবার পরিবেশন করতে বেশ ঘাম ঝরাতে হয়। আপাতদৃষ্টিতে কাজটি সহজ মনে হলেও রাঁধুনি মাত্রই জানেন রান্না ও ঘড়ির কাঁটার সম্পর্ক কতটা গভীর। রান্নার প্রক্রিয়া চলার ফাঁকে ফাঁকেই জেনে নিতে হয় ‘কয়টা বাজে?’ যত দিন পেট আছে, তত দিন রান্না থেকে মুক্তি নেই। তবে আপনি চাইলে রান্নার কাজে সময় বাঁচানো সম্ভব। প্রযুক্তির সহায়তা নিলে অনেক কাজই দ্রুত শেষ করা যাবে।
এয়ার ফ্রায়ার
এয়ার ফ্রায়ারে খাবার ভাজতে খুবই কম তেল লাগে। সাধারণভাবে কিছু ভাজতে গেলে যত তেল লাগে, তার চেয়ে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কম তেলে ভাজা যায় এয়ার ফ্রায়ারে।
একবার এয়ার ফ্রায়ারে খাবার দিলে আর কোনো চিন্তা নেই। এতে কম তেলে খাবার ভাজার যেমন সুবিধা আছে, তেমনি খাবার গরম করার সুবিধাও আছে। গরম করলেও মচমচে ভাব বজায় থাকে। এয়ার ফ্রায়ারে একটি ট্রে থাকে। ট্রের ভেতরে খাবার রেখে দিতে হয়। হিটারের পেছনেই থাকে ফ্যান। সেই ফ্যানের বাতাসে খাবার রান্না হয়। স্বয়ংক্রিয়ভাবে সবকিছু ভাজা হয়ে যাবে এতে। এয়ার ফ্রায়ারে তাপমাত্রা ও সময় সেট করে দেওয়া যায়। খুব কম তেল ব্যবহার করা হয় বলে খাবারে তেলও ঢোকে কম। তেল ছিটে হাতে ফোসকা পড়ার ঝুঁকিও থাকে না। এয়ার ফ্রায়ার ব্র্যান্ডভেদে মিলবে সাড়ে ৫ হাজার থেকে সাড়ে ২৯ হাজার টাকার মধ্যে।
অনেকেই আছেন, যাঁরা রাঁধতে পছন্দ করেন। কিন্তু কাটাকাটি করতে গেলে অনেকটা সময় যায় বলে রাঁধতে চান না। আবার অনেকেই আছেন বঁটিতে কাটতে পারদর্শী নন। তাঁরা ছুরির ওপর নির্ভর করেন। ছুরি দিয়ে চপিং বোর্ডের ওপরে আলু, পেঁয়াজ বা গাজর কাটতে অনেক সময় লাগে। এ সমস্যাগুলো থেকে বাঁচতে একটু খরচ করে কিনতে পারেন ফুড প্রসেসর। এ যন্ত্র দিয়ে প্রায় সব ধরনের সবজি কাটা যায়। একেক সবজি একেকভাবে কাটতে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের ব্লেড। ভালো মানের ফুড প্রসেসর কিনতে খরচ পড়বে সাড়ে ৬ হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা।
স্ট্যান্ড মিক্সচার
যাঁরা কেক বানান, তাঁরা জানেন ডিম ফেটে নিতে কত সময় দিতে হয়। টানা ১৫ মিনিট ধরে ডিম ও চিনি একসঙ্গে ফেটে নিতে হাত ব্যথা হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে সহজ সমাধান হতে পারে স্ট্যান্ড মিক্সচার। ডিম ফেটাতে কিংবা রুটির খামির তৈরি করতে চাইলে কিনে নিতে পারেন স্ট্যান্ড মিক্সচার। এর নিচে একটি বাটির মতো অংশ থাকে। ওপরের অংশে থাকে হ্যান্ড মিক্সচার। এটি আলাদাভাবে খুলেও ব্যবহার করা যায়। ভালো মানের স্ট্যান্ড মিক্সচার পাওয়া যাবে ৬ হাজার টাকার মধ্যে।
মিট গ্রাইন্ডার
মাংস কিমা করতে এখন আর শিল-পাটা ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। একটি মিট গ্রাইন্ডার হলেই কাজ চলে। কাবাব, কোফতা, বার্গার, সসেজ বানাতে চাইলে মিট গ্রাইন্ডার সহজ সমাধান। এই গ্রাইন্ডার বাসায় থাকলে বাইরে গিয়ে আর ফাস্ট ফুড খাওয়ার প্রয়োজন নেই। কম সময়ে ঘরেই বানাতে পারবেন ফাস্ট ফুড আইটেম। মিট গ্রাইন্ডারের দাম পড়বে ৭ হাজার টাকার আশপাশে।
অনেক এলাকাতেই গ্যাসের সংকট আছে। তবে এ সংকট থেকে সহজে উত্তরণের পথ নেই ভাবলে ভুল হবে। গ্যাসের চুলারও বিকল্প আছে। আগে একটা সময় কেরোসিনের চুলা ব্যবহৃত হতো। তবে সেই চুলা ব্যবহারের ঝামেলা ছিল অনেক। তাই কেরোসিনের বদলে ফ্ল্যাটবাড়িতে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ইন্ডাকশন চুলা। আগুন ছাড়াই রান্না হয় এতে। ফলে চুলা অন করে যেকোনো জায়গায় রান্না করা সম্ভব। ইন্ডাকশন চুলা পাওয়া যাবে ৫ হাজার টাকার মধ্যে।
ইলেকট্রিক কেটলি
চা-কফি বানাতে এখন অফিস ও বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত হচ্ছে ইলেকট্রিক কেটলি। এতে পানি গরম করলে সময় বাঁচে। গরম পানি গায়ে পড়ার আশঙ্কাও থাকে না। শীতকালে
গরম পানির প্রয়োজন বেশি হয়। আবার পানি গরম করে রাখলে সেটা রান্নার কাজেও লাগানো যায়। ইলেকট্রিক কেটলির সুইচ টিপলেই পানি গরম হতে থাকে। গরম
হয়ে গেলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বন্ধ হয়ে যায়। ইলেকট্রিক কেটলি ১ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে।