হোম > জীবনধারা > ভ্রমণ

মাধবকুণ্ড ঝরনার পানিতে বিরল ঝরনাপাখি

নাকিব বাপ্পি

ঝরনাপাখি। নামে যার সঙ্গে ঝরনা জড়িয়ে, তার সঙ্গে ঝরনার সম্পর্ক যে নিবিড় হবে, সেটা না বললেও চলে। এই অপার্থিব সুন্দর পাখির বাহারি বাংলা নামের তালিকাও বেশ সমৃদ্ধ—নীলাম্বর জলখঞ্জরী, নীল পানগির্দি, ঝরনাপাখি, নীল কপালিগির্দি, নীলচে লালগির্দি ইত্যাদি।

ইংরেজিতে এর নাম প্লাম্বিয়াস ওয়াটার রেডস্টার্ট; আর দাঁতভাঙা বৈজ্ঞানিক নাম ফিনিকিউরাস ফুলিগিনোসাস।

ডিসেম্বরের শুরুর দিকের ঘটনা। মৌলভীবাজারের মাধবকুণ্ডে এই পাখির আগমন ঘটেছে—খবরটি পেয়েই মন অস্থির হয়ে উঠল। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বেশ কয়েকজন আলোকচিত্রী এর ছবি পোস্ট করে যেন সেই অস্থিরতার আগুনে ঘি ঢেলে দিলেন। ভাবছি কী করা যায়! ঠিক তখন কাকতালীয়ভাবে সিলেট থেকে অতি প্রিয় এক আলোকচিত্রীর কল পেলাম। আমি কল রিসিভ করতেই তিনি বললেন, ‘চলে আসো।’ তারপর জানালেন কারা কারা থাকবেন, কখন উপস্থিত হবেন ইত্যাদি তথ্য।

পরদিন রাতের বাসে কয়েকজন মিলে রওনা দিলাম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে।

ভোরে পৌঁছে দেখি, ফটোগ্রাফার শামীম ভাই আর তাঁর সঙ্গী-সাথিরা ছবি তোলা শুরু করে দিয়েছেন। ফলে ‘মহাশয়কে’ খুঁজে পেতে বিশেষ বেগ পেতে হলো না। দীর্ঘ সময় নিয়ে মন-প্রাণ ভরে ছবি তুললাম। মাঝেমধ্যে ক্যামেরার শাটার চাপা থামিয়ে চর্মচক্ষু দিয়েও তার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভুলিনি।

আকারে অত্যন্ত ছোট এই পাখির পুরুষ প্রজাতির গড় ওজন প্রায় ২২ গ্রাম আর স্ত্রী পাখির ১৮ গ্রাম। এত হালকা শরীরে কী পাহাড়সম সৌন্দর্যই না বয়ে বেড়ায় এরা!

শীতকালে পাহাড়ি নদীর ধারে এই ঝরনাপাখি অস্থায়ী নীড় বানায়। শীত বিদায় নিতেই চলে যায় গ্রীষ্মের গন্তব্যে। সেখানে পৌঁছেই সংসার গড়ায় মনোযোগী হয়। মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত এদের প্রজননকাল। স্ত্রী নীল পানগির্দি সাধারণত তিন অথবা চারটি হালকা গোলাপি-ধূসর কিংবা হালকা হলদে রঙের ডিম পাড়ে। ডিমে তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সে একাই দায়িত্ব পালন করে। তবে ছানা লালন-পালনের দায়িত্ব পুরুষটির কাঁধেও সমানভাবে বর্তায়।

বাংলাদেশ ছাড়াও আফগানিস্তান, ভুটান, চীন, ভারত, লাওস, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে এদের দেখা মেলে।

সবশেষে সেখান থেকে বিদায় নিয়ে সাগরনালে নীলপরীর সন্ধানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো, যা প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির ভিন্ন এক গল্প। সেটি অন্য সময়ের জন্য তোলা থাক।

ক্যামেরা ব্যাগে নেওয়ার আগমুহূর্তে পাখিটি পানি আর মাটির সীমানাস্থলে এমনভাবে এসে বসল, দৃশ্যটা যেন এক ইলিউশন। মনে হলো, একটি পাখি হুট করে দুটো পাখি হয়ে গেছে। মনে মনে ‘ঝরনার জলে কার ছায়া গো’ বলতে বলতে সেদিনের মতো ক্লিক করলাম ঝরনাপাখির শেষ ছবিটি।

ছবি ও লেখা: নাকিব বাপ্পি

ডায়াবেটিসের রোগীদের কেন সময় মতো খাবার খাওয়া জরুরি

গ্রামের নাম মহিষখোলা

বাংলাদেশের পর্যটক কমায় ভারতে নিম্নমুখী আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীর সংখ্যা

আজকের রাশিফল: আত্মীয়রা কাঠি করবে, খিটখিটে মেজাজ বিচ্ছেদের কারণ হবে

আকাশে ঘুরে বেড়ানো এক নিঃসঙ্গ বাবার গল্প

হোটেল রুমের পরিচ্ছন্নতা ও শিষ্টাচার

পাঁচ তারকা হোটেলগুলোর আয়ের উৎস বেড়েছে

ভ্রমণে এক ব্যাগে সবকিছু রাখলে বিপদ হতে পারে, দেখে নিন কী করবেন

আদার কত গুণ, খাওয়ার আগে জেনে নিন

রাশি অনুযায়ী ত্বকের যত্ন নিচ্ছেন তো