হোম > জীবনধারা

‘বৃষ্টির ছবি এঁকেছি...’

ফজলুল কবির

ঢাকা: ‘এসো করো স্নান নবধারা জলে বলবে কে আর/শহুরে বৃষ্টিজল কাদামাখা নোংরা দেদার।’ খুবই সত্য এই কথা। তবু গ্রাম হোক কিংবা শহর, বৃষ্টি বাঙালির মন দোলাবেই। বৃষ্টির ছাঁট মুখোশ সরিয়ে ঠিকই মুখটিকে বাইরে নিয়ে আসে। সজল হাওয়ায় মন গলে যায়। এই বঙ্গে মেঘ শব্দের নেতিবাচক ব্যবহার আকছার থাকলেও বাস্তবে মেঘ সবার মনের বাড়ির এক গোপন দরজা খুলে দেয়। আর বৃষ্টি! ইউরোপ এ নিয়ে দূর ছাই করলে করতে পারে, বাঙালি কখ্খনো নয়। তাহলে কবির সুমন কী বলছেন এসব? 

সুমনের গানের এই লাইন বুঝতে হলে আপনাকে হতে হবে শহুরে কর্মজীবী। একে তো ‘ঝরঝর মুখর বাদল দিনে’ কিছুতেই কোনো কাজে মন লাগে না, তার ওপর ওই যে শহুরে বৃষ্টিজল, যা ‘জলাবদ্ধতা’ হয়ে ভ্রুকুটি দেয়। ফলে প্যান্ট গুটিয়ে, লুঙ্গি উঁচিয়ে জলের সঙ্গে অনিচ্ছার সখ্য গড়তে পথেই নামতে হয়। কাজে মন না লাগা মন নিয়েই ছুটতে হয় কাজে। ফলে মান হওয়া তো স্বাভাবিক। 

আজ এই মুখ ভার করা আকাশ দেখেও যারা শেষতক কাজের উদ্দেশে বেরিয়েছেন পথে, তাঁরা পড়ে নিতে পারেন শহীদ কাদরীর কবিতা ‘বৃষ্টি, বৃষ্টি’। একটু সান্ত্বনা মিলতে পারে। অন্তত রবীন্দ্রনাথের মতো করে উদাস বর্ষা উপভোগ করতে না পারার ক্ষোভ কিছুটা হলেও কমবে। আর যারা ঘরে আছেন, মাথার ওপরে আছে নিরাপদ ছাদ, নেই রোগ বা জরা, তাঁরা জানালাটা একটু ফাঁক করে সজল হাওয়ার স্বাদ নিতেই পারেন। 

যখন বৃষ্টি ঝরছে, আর আপনি বসে আছেন জানালাটার পাশ ঘেঁষেই, তখন কিছুটা সময় বের করে রসুইয়ের দিকেও মনোযোগ দিতে পারেন। চুলায় বৃষ্টিদিনের মানিকজোড় খিচুড়ি বসিয়ে জানালা কিংবা বারান্দায় বসে রসিয়ে রসিয়ে উপভোগ করুন বৃষ্টি। রেসিপি জানতে চাইবেন না যেন। ওটা অন্যদের দপ্তর। এ ক্ষেত্রে সংগত পেতে আপনাকে খুব একটা পরিশ্রম করতে হবে না। সেই কালিদাস থেকে রবীন্দ্রনাথ হয়ে আজকের দিনের যেকোনো শিল্পীকে বেছে নিয়ে বৃষ্টিদিনের গান ছেড়ে দিতে পারেন। বাঙালি কবিতা লিখেছে বা গান করেছে, আর তাতে বৃষ্টি নেই—এটা অসম্ভব। 

আর যদি সেই শুরুতে উল্লেখ করা অভাগার দলেই থাকেন আপনি। তবে সবার কপাল এমন নয়। আসলে অধিকাংশেরই সত্যি কপালের আকার ছোটই বলতে হবে। বৃষ্টি দেখেও তাদের উদাস হওয়া চলে না। কাজে যোগ দিতে বের হতে হয় পথে। আর সে পথ যদি হয় ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম শহরের, তবে তো কথাই নেই। এ দুই শহরেই বৃষ্টিদিনে বেড়াতে আসে মানুষের হাতে খুন হওয়া নদীদের প্রেতাত্মারা। প্রতিটি রাস্তায় থাকে তাদের দীর্ঘশ্বাসের অনুলিপি। প্রমোটার তো কখনো বর্ষার গান শোনে না। আর তাই ক্রমাগত ঠাসবুনটের এই শহরে আরও ঠাসাঠাসি ভিড় জমে। হায় রিয়েল এস্টেট তো কখনো মেঘমল্লার শোনে না। ফলে আমাদের হাতে নিহত নদীর দল প্রতি বছর বর্ষায় শহরের অলিগলি, রাজপথে অতর্কিতে ঢুকে পড়ে আমাদের মনে করিয়ে দেয়—কী ভুল আমরা করেছি ও করে চলেছি। পাতাল থেকে তাবৎ বর্জ্য তুলে এনে আমাদের ভাসিয়ে নেয় তারা। আমরা নাক টিপে, নানা কসরত করে হেঁটে চলি। চলি কর্মক্ষেত্রের উদ্দেশে। শহুরে কর্মজীবীর কাছে কৃষ্টি দিনের মাধুর্য স্মৃতিকথা ছাড়া আর কিছুই নয়। কালো কুচকুচে এঁদো জল পেরিয়ে কাজে যাওয়ার নাম শুনলেই গায়ে জ্বর আসে। এর মধ্যে যখন লকডাউনের মতো বাস্তবতা থাকে, তখন তো হুজ্জতের আর সীমা থাকে না। রাস্তায় বাস–গাড়ি নেই, আছে করোনার চোখ রাঙানি। তবুও যেতেই হবে। কারণ, হরিপদ কেরানিদের তো আর ছুটির কপাল নেই। 

তাই ওই কথাতেই ফিরতে হয় বারবার। কবির সুমন শুনুন আর, না–ই শুনুন, রবী ঠাকুরের মন নিয়ে রবীবন্দনার বদলে দীর্ঘশ্বাস চেপে রেখে, ঘরে রাখা কোমল কাঁথার কথা ভাবতে ভাবতে অফিস যাত্রাই এই দিনে গড়পড়তা চাকরিজীবীদের বাস্তবতা। এমন দিনে তাই আর কিছুই বলা যায় না। একরাশ খেদ নিয়ে ময়লা জলে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে শুধু বলা যায়—‘রবীন্দ্রনাথ বৃথাই ভেজেন বৃথাই ভেজান।’ 

গৃহকর্মী নিয়োগের আগে যে বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে পারেন

শীতে পানিশূন্যতা দূর করবেন যেভাবে

বিশ্ব স্বাদের মঞ্চে সেরা ১০০ রন্ধনশৈলী, বাংলাদেশের স্থান কততম

আজকের রাশিফল: বাবা-মা আজ আবদার রাখবেন, সিঙ্গেলরা দ্রুত প্রোফাইল পিক বদলান

আজকের লাল-সবুজ খাবার

আবুধাবি ভ্রমণের আগে যা জানা জরুরি

যেসব বিপজ্জনক খাবার মৃত্যুর কারণ হতে পারে

সাজি ভালোবাসার লাল-সবুজে

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

শীতে চামড়া বা কাপড়ের জুতা পরুন