হোম > জীবনধারা > ভ্রমণ

বিশ্বে পকেটমারি ও প্রতারণায় শীর্ষে যেসব শহর

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 

বিশ্বের ৭৫টির বেশি পর্যটন শহরের পর্যটক রিভিউ সংগ্রহ করে ‘কম্পেয়ার দ্য মার্কেট’ পকেটমার, প্রতারণা ও চুরির হার বেশি থাকা শহরগুলোর একটি তালিকা তৈরি করেছে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

ব্যাংকককে ঘিরে বিশ্বের পর্যটকদের আগ্রহ নতুন নয়। রাজপ্রাসাদ, বৌদ্ধমন্দির, নদী ভ্রমণ থেকে শুরু করে স্ট্রিট ফুড—সব মিলিয়ে শহরটি ভ্রমণপিয়াসিদের জনপ্রিয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে বেশ আগেই। তবে এই শহরের আরেকটি পরিচয় সামনে এনেছে ভ্রমণ বিমা প্রতিষ্ঠান ‘কম্পেয়ার দ্য মার্কেট’। তাদের এ বছরের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পর্যটকদের পকেটমারি ও প্রতারণার দিক থেকে ব্যাংকক এখন বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শহর।

ব্যাংককের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো

ব্যাংককের বহুল পরিচিত গ্র্যান্ড প্যালেসে ঘুরতে পাওয়া যতটা আকর্ষণীয়, জায়গাটি ঝুঁকির দিক থেকেও ততটা উল্লেখযোগ্য। এই জায়গায় বিশ্বের যেকোনো পর্যটনকেন্দ্রের তুলনায় পকেটমারি ও প্রতারণা ঘটনা তুলনামূলক বেশি ঘটে। পর্যটকদের রিভিউ বিশ্লেষণ করে জানা যায়, সেখানে ভিড়ের মধ্যে ব্যাগ কাটা, মানিব্যাগ নিয়ে যাওয়া, ভুয়া টিকিট বিক্রি বা অতিরিক্ত দাম দাবি করার মতো ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে। শুধু গ্র্যান্ড প্যালেস নয়, ওয়াট ফো এবং চাতুচক উইকেন্ড মার্কেটও একই রকম অবস্থা। বিশেষ করে চাতুচক মার্কেটের মতো জায়গায় মোবাইল ফোন চুরি, ব্যাগ টেনে নেওয়া বা কেনাকাটায় প্রতারণার অভিযোগ সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তালিকার শীর্ষে আছে ব্যাংকক। শহরটির পয়েন্ট ৮৩ দশমিক ৪৫। ছবি: উইকিপিডিয়া

ঝুঁকি যেভাবে নির্ধারণ করা হলো

কম্পেয়ার দ্য মার্কেট বিশ্বের ৭৫টির বেশি শহরের পর্যটক রিভিউ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করেছে, যে শহরগুলোতে পকেটমার, প্রতারণা ও চুরির মতো অভিজ্ঞতা উল্লেখ করেছিল পর্যটকেরা। এসব ঘটনার ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি শহরের স্কোর নির্ধারণ করা হয়। স্কোর যত বেশি, শহরটি তত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত। এই পদ্ধতি শুধু চুরির হার নয়, পর্যটকদের ভয় ও উদ্বেগকেও তুলে ধরে। যেসব জায়গা নিয়ে পর্যটকেরা বেশি সতর্কবার্তা দিয়েছে, সেগুলোই উঠে এসেছে তালিকার শীর্ষে।

ব্যাংককের পরেই প্যারিস ও প্রাগ

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে এসেছে প্যারিস। এই নগরী প্রেম, শিল্প ও সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত হলেও পর্যটকদের মানিব্যাগ রক্ষায় যথেষ্ট মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্যারিসে পকেটমারের ঘটনা প্রতারণার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেশি ঘটে বলে বিশ্লেষণে দেখা গেছে। তৃতীয় স্থানে আছে চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগ। শহরের বড় পর্যটন স্থানগুলোতে, বিশেষ করে মোবাইল ফোন চুরি খুব সাধারণ ঘটনা। ভিড়ের মধ্যে দ্রুত হাত থেকে ফোন টান দিয়ে নিয়ে যাওয়া যেন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রাগে।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে প্যারিস। শহরটির পয়েন্ট ৬৮.৮১। ছবি: উইকিপিডিয়া

চীনের সাংহাইয়ে প্রতারণার হার বেশি

চতুর্থ স্থানে থাকা সাংহাইয়ের চিত্র কিছুটা ভিন্ন। সেখানে পকেটমারির ঘটনা ততটা বেশি নয়। তবে শহরটিতে প্রতারণার হার উল্লেখযোগ্য। ভুয়া ট্যুর গাইড, নকল চা বিক্রি, অতিরিক্ত বিলের ফাঁদসহ নানান কৌশলে পর্যটকদের টার্গেট করা হয় সাংহাইতে।

কোন অঞ্চল সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ

সমগ্র র‍্যাংকিং লক্ষ করলে দেখা যায়, ইউরোপ ও এশিয়া অপরাধের দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল। এশিয়ার ২৪টি এবং ইউরোপের ২৭টি শহর এ তালিকায় জায়গা পেয়েছে। অন্যদিকে আমেরিকার মাত্র ছয়টি শহর র‍্যাংকিংয়ে থাকলেও এদের অবস্থান তালিকার শেষের দিকে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ও মেলবোর্ন শহর দুটি আছে এই তালিকায়।

তৃতীয় স্থানে আছে চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগ। শহরটির পয়েন্ট ৫২.১৬। ছবি: উইকিপিডিয়া

ভ্রমণের সময় কীভাবে ঝুঁকি কমাবেন

বিশেষজ্ঞদের মতে, পকেটমারি ও প্রতারণা থেকে রক্ষা পেতে কয়েকটি সাধারণ সতর্কতা বড় বিপদ এড়াতে কাজে দিতে পারে। এগুলো হলো—

  • ভিড়ের মধ্যে ব্যাগ সামনে রেখে হাঁটা।
  • ব্যাকপ্যাকের চেইনে ছোট তালা লাগানো।
  • অপরিচিত বা অননুমোদিত ট্যাক্সি না নেওয়া।
  • রাস্তায় যেকোনো সহজ প্রলোভন বা অতিরিক্ত বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণে সতর্ক থাকা।

এ ছাড়া প্রতিটি শহরে কোন ধরনের প্রতারণা বেশি হয়, সেটি আগে থেকে জেনে গেলে সহজে সন্দেহজনক পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

পকেটমারি ও প্রতারণার হারে ২০২৫ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০ শহর ও তাদের পয়েন্ট—

১. ব্যাংকক: ৮৩.৪৫

২. প্যারিস: ৬৮.৮১

৩. প্রাগ: ৫২.১৬

৪. সাংহাই: ৫১.৮৩

৫. আগ্রা: ৪৭.৪৮

৬. রোম: ৪৫.৫৩

৭. পাতায়া: ৪৪.৪৩

৮. ফুকেট: ৪০.৫২

৯. শেনজেন: ৩৯.৫১

১০. মুম্বাই: ৩৬.৮৬

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ভ্রমণ মানুষের জীবনে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। তবে আকর্ষণীয় শহরগুলো যতই মনোমুগ্ধকর হোক, অপরাধের ঝুঁকি সব সময় বিবেচনায় রাখতে হবে। ব্যাংকক, প্যারিস বা প্রাগের মতো শহরগুলো দারুণ সৌন্দর্য, সংস্কৃতি আর ইতিহাসে ভরপুর। কিন্তু সামান্য অসতর্কতা বড় সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই সচেতনতা এবং নিজের জিনিসপত্রের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

সূত্র: ভিএন এক্সপ্রেস

প্রজনন স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পুরুষদের যে ৭টি অভ্যাস বদলানো উচিত

আজকের রাশিফল: বহু যত্নে লালিত স্বপ্ন সত্যি হবে, সাবধানে মুখ খুলুন

কাজুবাদাম দিয়ে গরুর মাংসের ঝাল রসা

ফিরে ফিরে আসে ষাটের দশকের মেকআপ

ঘুরে আসুন কাউয়ার চর

দেশে সরকার অনুমোদিত পাঁচ তারা ২০টি হোটেল

আজকের রাশিফল: প্রিয়জন-বেষ্টিত থেকেও নিঃসঙ্গ লাগবে, মানুষ চেনার অধ্যায় শুরু

২০২৬ সালে ভ্রমণ করার নিরাপদ দেশগুলো

ট্যুর মুরল্যান্ডের ১৪তম বর্ষপূর্তি

সামনেই বিয়ে? ত্বকের প্রস্তুতি শুরু হোক এখন থেকেই