বাবা একটি পরিবারের অভিভাবক, ছায়াস্বরূপ এবং শক্তির প্রতীক। সন্তানের জীবনে বাবার অবদান অপরিসীম ও তুলনাহীন। বাবা ভালোবাসার ছায়া। নির্ভরতার আশ্রয়স্থল। অনুশাসনের শৃঙ্খল। বাবার ছায়া সন্তানের জন্য বড় রহমত। তিনি নীরবে-নিভৃতে সন্তানদের সুখ-শান্তির জন্য পরিশ্রম করেন, কখনো অভিযোগ করেন না, কখনো ক্লান্তি প্রকাশ করেন না। বাবার আত্মত্যাগ আর নিভৃত ভালোবাসার কারণে ইসলামে তার মর্যাদা অপরিসীম। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বাবার প্রতি যত্নশীল হওয়া, তার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা এবং তাকে সম্মান করার কথা এসেছে বারবার। বাবার প্রতি ভালো ব্যবহার শুধু দায়িত্ব নয়, জান্নাতের পথও বটে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন—তাঁকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত কর না এবং মা-বাবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হন; তবে তাদের ‘উহ’ শব্দটিও বলো না, তাদের ধমক দিও না এবং তাদের সঙ্গে শিষ্টাচারপূর্ণ কথা বল। (সুরা বনি ইসরাইল: ২৩)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) একবার নবীজি (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় কাজ কোনটি?’ নবীজি বললেন, ‘সময়মতো নামাজ পড়া।’ তিনি জানতে চাইলেন, ‘তারপর কোনটি?’ আল্লাহর রাসুল বললেন, ‘পিতা-মাতার সঙ্গে উত্তম আচরণ করা।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)। বাবার পাশাপাশি বাবার বন্ধুদের সঙ্গেও ভালো ব্যবহারের কথা বলেছে ইসলাম। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘সৎ কাজগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা সৎ কাজ হলো কোনো ব্যক্তির তার বাবার বন্ধুদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা।’ (সহিহ্ মুসলিম)।
বাবা শুধু উপার্জনকারী নন, তিনি সন্তানদের নৈতিক শিক্ষা, শৃঙ্খলা ও আদর্শের ভিত্তি গড়ে তোলেন। বাবার স্নেহ মায়ের মতো প্রকাশ্য না হলেও, তার ভালোবাসা গভীর ও নির্ভরতার প্রতীক। বাবা না থাকলে জীবন এক শূন্যতায় পরিণত হয়। বাবা হলেন সেই অদৃশ্য আশীর্বাদ, যিনি সব সময় আমাদের জন্য চিন্তা করেন।