ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যেখানে পারিবারিক সম্পর্ক, সফর, নেতৃত্ব ও সাহচর্যের প্রতিটি ক্ষেত্রে রয়েছে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ ও সুন্নাহ।
মহানবী (সা.)-এর পারিবারিক জীবনে দেখা যায়, তিনি স্ত্রীদের মর্যাদা দিতেন, তাঁদের মতামত গ্রহণ করতেন এবং প্রয়োজনীয় সফরে তাঁদের কাউকে সঙ্গী করতেন। শুধু দাম্পত্য সম্পর্ক নয়, বরং নবীজির সফরসঙ্গী হিসেবে স্ত্রীর উপস্থিতি ছিল শিক্ষা, পরামর্শ ও সম্মান প্রদর্শনের নিদর্শন।
ষষ্ঠ হিজরিতে রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন বনি মুস্তালিক মতান্তরে মুরাইসি যুদ্ধে যান, তখন স্ত্রীদের মধ্য থেকে হজরত আয়েশা (রা.)-কে সঙ্গে নিয়ে যান। এই যুদ্ধের আগে পর্দার বিধান নাজিল হয়েছিল। হজরত আয়েশা (রা.)-কে উটের পিঠে পালকির ওপর বসিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই যুদ্ধে হজরত আয়েশা (রা.)-কে বড় অপবাদও দেওয়া হয়েছিল, যার প্রতিবাদে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে আয়াত নাজিল করেছেন। (সহিহ বুখারি)
এ ছাড়া অন্যান্য সফরে অন্য স্ত্রীদের সঙ্গে নেওয়ার কথাও হাদিসে এসেছে। হুদাইবিয়ার সন্ধির সফরে নবীপত্নী উম্মে সালামা (রা.) তাঁর সঙ্গে ছিলেন। কুরাইশদের সঙ্গে এই সন্ধি করতে রাজি ছিলেন না অনেক সাহাবি, তাই এই চুক্তির পর সাহাবিরা বিমর্ষ ছিলেন। হজরত উম্মে সালামা (রা.)-এর পরামর্শেই তাঁদের শান্ত করেছিলেন মহানবী (সা.)। (সহিহ বুখারি)
সফরে স্ত্রীকে সঙ্গে নেওয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর একটি সুস্পষ্ট সুন্নত, যা তিনি শুধু প্রেম-ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে নয়, বরং পারিবারিক বন্ধনকে দৃঢ় রাখার একটি পন্থা হিসেবেও পালন করতেন। আজকের দিনে এই সুন্নাহগুলো শুধু জানলে হবে না, চর্চাও করতে হবে, যেন আমাদের দাম্পত্যজীবনে ভালোবাসার গভীরতা বৃদ্ধি পায়। পরিবারে নেমে আসে অনাবিল শান্তি।