মানুষ সামাজিক জীব। তারা একাকিত্ব পছন্দ করে না। বন্ধুত্ব তাই মানবজীবনের অপরিহার্য অংশ। মানুষের জীবনে বন্ধুর স্বভাব-চরিত্রের প্রভাব প্রতিফলিত হয় নিদারুণভাবে। বন্ধু ভালো হলে সে সৎকাজের সহযোগী হয়, খারাপ হলে অবৈধ, ঘৃণিত, পাপাচার ও অসামাজিক কার্যকলাপে উদ্বুদ্ধ করে। এ জন্য বন্ধু নির্বাচনে ইসলামের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা।
বন্ধুত্বের উপমা: ভালো বন্ধু ও খারাপ বন্ধুর উপমা বোঝাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘উত্তম বন্ধু আতর বিক্রেতার মতো। যদি তুমি তার থেকে কিছু নাও পাও, তবে অন্তত আতরের সুঘ্রাণ পাবে। আর খারাপ বন্ধু কামারের মতো। যদি তার গায়ের কালি তোমার শরীরে নাও লাগে, তবু কিছু ধোঁয়া হলেও লাগবে।’ (ইবনে হিব্বান: ৫৭৯)
খারাপ বন্ধু গ্রহণের পরিণতি: খারাপ বন্ধুর প্রভাবে পথভ্রষ্ট ব্যক্তিরা পরকালে এর জন্য আফসোস করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘জালেম সেদিন আপন হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায়! আমি যদি রাসুলের সঙ্গে সৎপথ অবলম্বন করতাম। হায় দুর্ভাগ্য! আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। আমার কাছে উপদেশ আসার পর সে আমাকে তা বিভ্রান্ত করেছিল।’ (সুরা ফুরকান: ২৭-২৯)
বন্ধু যেমন হবে: একজন ইমানদারের জন্য কেমন বন্ধু নির্বাচন করা উচিত, সে সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা হলো বন্ধু হবে সে, যে সৎকাজে সহযোগিতা এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী পরস্পর একে অপরের সহযোগী। তারা সৎকর্মের নির্দেশ দেয় এবং অসৎকর্ম থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা তাওবা: ৭১)।
হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, সাহাবায়ে-কেরাম একদিন নবীজি (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, কেমন ব্যক্তির সাহচর্য গ্রহণ করা আমাদের জন্য ভালো? তিনি বললেন, ‘যার দিকে তাকালে সে তাকানো তোমাদের আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যার কথা তোমাদের ইলম বৃদ্ধি করে এবং যার আমল তোমাদের আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।’ (শুআবুল ইমান: ৯০০০)
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।