মেক্সিকোর মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ১০ জন। আহত হয়েছেন অন্তত ৬১ জন। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার একটি মালবাহী ট্রেন সরাসরি ধাক্কা মারে একটি ডাবল ডেকার যাত্রীবাহী বাসে। ট্রেন পরিচালনাকারী সংস্থা জানিয়েছে, বাসটি চলন্ত ট্রেনের সামনে দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রেলওয়ে সংস্থা কানাডিয়ান প্যাসিফিক কানসাস সিটি দে মেক্সিকো নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক জানিয়েছে। পাশাপাশি চালকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন সড়কচিহ্ন ও রেলক্রসিংয়ে দেওয়া থামার নির্দেশ মেনে চলেন।
বাসের মালিক প্রতিষ্ঠান হেরাদুরা দে প্লাতা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। দুর্ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, বাসের সামনের অংশ ও ওপরের তলা একেবারে ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। লোহার কাঠামো মারাত্মকভাবে বেঁকে গেছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে একটি শিল্পাঞ্চলে। মেক্সিকো সিটি থেকে প্রায় ১১৫ কিলোমিটার (৭১ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত আত্লাকোমুলকো শহর ও পাশের মিচোয়াকান অঙ্গরাজ্যের মারাভাতিও শহরের মাঝের মহাসড়কে এ সংঘর্ষ হয়।
মেক্সিকো রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সাতজন নারী ও তিনজন পুরুষ রয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ গুরুতর অবস্থায় আছেন, আবার কেউ দ্রুত হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। তবে সঠিক সংখ্যা জানানো হয়নি।
লাতিন আমেরিকায় মারাত্মক বাস দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে। মেক্সিকো সরকারের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু ২০২৩ সালে দেশটির মহাসড়কে ১২ হাজার ৯৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ডলারের বেশি। আহত হয়েছেন প্রায় ৬ হাজার ৪০০ জন। নিহত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৯০০ জন।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ মেক্সিকোতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। পর্যটন শহর কানকুন থেকে তাবাসকো যাচ্ছিল একটি যাত্রীবাহী বাস। পথে সেটি একটি ট্রেলারের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আগুন ধরে যায়। ওই ঘটনায় মারা যান ৪০ জনেরও বেশি মানুষ।
মেক্সিকোতে যাতায়াতের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো বাস। দেশটিতে মালবাহী ট্রেন নিয়মিত চলাচল করলেও যাত্রীবাহী ট্রেনের সংখ্যা এখনো সীমিত। তবে প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউমের সরকার যাত্রীবাহী রেলপথ দ্রুত সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে। এর মাধ্যমে উত্তর ও মধ্য মেক্সিকোর বিভিন্ন অঞ্চলকে সংযুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।