রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের মোড় বারবার বদলে যাচ্ছে। সম্প্রতি বড় বড় শহরে ব্যাপক ড্রোন হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই যুদ্ধের আশু কোনো পরিণতি কেউ দেখা পাচ্ছেন না।
আপাতদৃষ্টিতে এক দীর্ঘ যুদ্ধের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। গোটা বিশ্বেই কমবেশি এর প্রভাব পড়ছে। কোভিডের পর এমন একটি যুদ্ধ অর্থনীতির ক্ষত পূরণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে একটি বিষয় ক্রমেই পরিষ্কার হয়ে উঠছে যে, যুদ্ধে সব পক্ষই হাঁপিয়ে উঠেছে। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের ‘গোপন পদক্ষেপে’ তেমন ইঙ্গিতই মিলছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টে গতকাল শনিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাইডেন প্রশাসন রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার জন্য ইউক্রেনের নেতাদের খোলা মন নিয়ে থাকার জন্য গোপনে উৎসাহিত করছে। পুতিন ক্ষমতা থেকে সরে না যাওয়া পর্যন্ত কোনো শান্তি আলোচনায় বসা হবে না—বারবার প্রকাশ্যে এমন অবস্থান ব্যক্ত করা থেকে সরে এসে আলোচনার জন্য একটি উদার অবস্থান নেওয়ার জন্য উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।
ইউক্রেনীয় নেতাদের সঙ্গে এ সম্পর্কিত আলাপ এবং শান্তি আলোচনায় উৎসাহিত করার বিষয়ে ওয়াকিবহাল কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শান্তি আলোচনায় উৎসাহ দেওয়া মানে কিন্তু ইউক্রেনকে ‘সমঝোতার টেবিলে’ ঠেলে দেওয়াই মার্কিন কর্মকর্তাদের লক্ষ্য নয়। বরং যুক্তরাষ্ট্রের ওই কর্মকর্তারা এই পদক্ষেপকে কিয়েভের প্রতি অন্যান্য দেশের সমর্থন নিশ্চিত করার একটি কৌশল হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন। যেখানে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা থেকে অনেক দেশের সরকারই রাজনৈতিক ময়দানে বেশ চাপের মুখে পড়ছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে একের পর এক শহর দখল করতে থাকে রাশিয়া। তবে একটা পর্যায়ে দৃশ্যপট বদলে যায়। ব্যাপক পশ্চিমা সহযোগিতা নিয়ে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং রুশ সেনাদের হটিয়ে একের পর এক শহর পুনরুদ্ধার করে। এরপরই অবশ্য ভিন্ন কৌশলে আগান রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এতে ইউক্রেনের অনেক শহর বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। প্রধান প্রধান শহরে নির্বিচারে ড্রোন হামলাও চলছে। রীতিমতো বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পুরো ইউক্রেনের নাগরিক জীবন।