কৃষি আমদানির ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই সঙ্গে তিনি জানান, মার্কিন কৃষকদের জন্য ১২ বিলিয়ন ডলারের ভর্তুকিও রেখেছেন তিনি। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন। অন্য দেশের সুরক্ষামূলক কৃষি নীতির সমালোচনা করে এই ঘোষণা দেন তিনি। ট্রাম্প জানান, শুল্ক আয় থেকেই এই ১২ বিলিয়ন ডলারের তহবিলে অর্থের যোগান দেওয়া হবে।
ট্রাম্প বলেন, ‘এই সহায়তা কৃষকদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। এর সহায়তায় তারা এ বছরও ফসল বাজারে আনতে পারবে এবং আগামী বছরের ফসলের প্রস্তুতিও করতে পারবে। পাশাপাশি মার্কিন ভোক্তাবাজারে পণ্যের দাম কমানোর প্রচেষ্টায়ও কাজে আসবে।
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘কৃষকেরা সাহায্য চায় না। তারা চায় সমান সুযোগের মাঠ। আমরা কৃষকদের এত শক্তিশালী করব যে এটি কৃষকদের জন্য স্বর্ণযুগের মতো হবে।’
কৃষি সচিব ব্রুক রোলিন্স জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের জন্য ‘ব্রিজ পেমেন্ট’ হিসেবে ১১ বিলিয়ন ডলার দেওয়া হবে, যা এককালীন। বাকি তহবিল অন্যান্য ফসলের জন্য পরবর্তীতে নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী দেওয়া হবে।
এই অর্থ ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিতরণ করা হবে বলে জানান রোলিন্স। তিনি বলেন, কত অর্থের জন্য আবেদন করতে পারবেন তা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কৃষকদের জানানো হবে।
চীন ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে কৃষি আমদানি নিয়ে বাণিজ্য বিরোধ এবং একটি অস্থির শুল্ক প্রক্রিয়ার প্রভাবের কারণে যে ক্ষতি তা পোষাতে এই তহবিল দেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট এখন যাচাই করছে, এই শুল্ক প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইনের আওতায় প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা অতিক্রম করছে কি না।
তবে চীন সম্প্রতি আবার যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সয়াবিন কেনা শুরু করেছে। এর আগে তারা আর্জেন্টিনার মতো অন্যান্য উৎপাদক থেকে সরবরাহ নিয়েছিল। গত অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি করেন। ওই চুক্তির ফলে মূলত শুল্কের হার পুনর্নির্ধারিত হয়। বিনিময়ে বেইজিং অবৈধ ফেন্টানিল চালানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।
তবে ট্রাম্প এখনো শুল্ক নীতিকে অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন এবং এটি নিয়ে প্রশংসাবাক্য উচ্চারণ করেন। কৃষকদের সমস্যার কারণ হিসেবে এ বিষয়টির কথা বলা হলে তিনি বলেন, ‘তারা আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ মুদ্রাস্ফীতি ও জ্বালানি, পানি এবং অগণিত কৃষিজীবনের অপরিহার্য জিনিসপত্রের ক্রমাগত সীমাবদ্ধতার কারণে পীড়িত হয়েছে।’
উল্লেখ্য, সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেনের শাসনামলে মুদ্রাস্ফীতি ৪৮ বছরের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল, যা ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এক বছর ধরে হ্রাস পেতে শুরু করে।
২০১৮ সালে প্রথম মেয়াদে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বিরোধের সময় কৃষকদের জন্য ১২ বিলিয়ন ডলারের ভর্তুকি ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। এই তহবিল তারই পুনরাবৃত্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।