যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং সৌদি আরবের যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার একাধিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। এসব চুক্তি প্রতিরক্ষা থেকে বেসামরিক পারমাণবিক প্রযুক্তি পর্যন্ত দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা সম্পর্ক পর্যন্ত বিস্তৃত বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করছে। তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এসব চুক্তি ‘যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি কৌশলগত অংশীদারত্বকে গভীর করবে, উচ্চ বেতনে আমেরিকানদের চাকরির সুযোগ বাড়াবে, গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ শৃঙ্খলকে শক্তিশালী করবে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে। আর এসব ক্ষেত্রে সব সময় আমেরিকান কর্মী, শিল্প ও নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’
যুবরাজ বিন সালমান আগেই ঘোষণা করেছিলেন যে সৌদি আরব মে মাসে ঘোষিত যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি বাড়িয়ে তা প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করেছে। এটি ছিল মঙ্গলবারের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের একটি মূল চাওয়া।
ট্রাম্পের পক্ষ থেকে সৌদি আরবকে তিনি ‘শীর্ষ মানের’ এফ-৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমান সরবরাহেরও ঘোষণা দিয়েছেন। তবে হোয়াইট হাউস জানায়নি যে কতগুলো যুদ্ধবিমান বিক্রি হবে বা কোন ভেরিয়েন্ট সৌদি আরবকে দেওয়া হবে। তবে তারা স্বীকার করেছে যে এগুলো একটি ‘বড় প্রতিরক্ষা বিক্রয় প্যাকেজের’ অংশ।
হোয়াইট হাউসের ভাষ্য অনুযায়ী, এই প্রতিরক্ষা চুক্তি ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করবে এবং নিশ্চিত করবে যে সৌদি আরব আমেরিকান পণ্যই কিনতে থাকবে।’ খবরে বলা হয়েছিল, সৌদি আরব দুই ডজন এফ-৩৫ চাইছে। চুক্তির মোট অর্থের পরিমাণ প্রকাশ করা হয়নি এবং এতে অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য প্রতিরক্ষা সামগ্রী তালিকাভুক্ত করা হয়নি।
ট্রাম্প ও বিন সালমান বেসামরিক পারমাণবিক সহযোগিতার একটি চুক্তিতেও চূড়ান্ত স্বাক্ষর করেছেন, যা দীর্ঘমেয়াদি পারমাণবিক শক্তি অংশীদারত্বের ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং ‘যুক্তরাষ্ট্র ও মার্কিন কোম্পানিগুলোকে সৌদি আরবের নাগরিক পারমাণবিক সহযোগিতার প্রাধান্যপ্রাপ্ত অংশীদার হিসেবে নিশ্চিত করে।’ চুক্তি আরও বলেছে, ‘সব সহযোগিতা শক্তিশালী স্থিতিস্থাপক নীতি অনুযায়ী পরিচালিত হবে।’
যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব একটি আলাদা চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেছে, যা গুরুত্বপূর্ণ খনিজের ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়াতে এবং জাতীয় কৌশলগুলোকে সমন্বয় করে ‘গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ শৃঙ্খলাকে বৈচিত্র্যময় করতে’ সহায়তা করবে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত একটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষর করেছেন দুই নেতা। এই সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, ‘সৌদি আরব বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আমেরিকান সিস্টেমগুলোতে প্রবেশাধিকার পাবে, একই সঙ্গে বিদেশি প্রভাব থেকে মার্কিন প্রযুক্তি রক্ষা পাবে, যা নিশ্চিত করবে যে আমেরিকান উদ্ভাবকেরা বৈশ্বিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎ গড়বে।’ চুক্তিগুলোর পূর্ণাঙ্গ কপি এখনো প্রকাশিত হয়নি।