হোম > বিশ্ব > যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা

ট্রাম্পের সামনে বড় বিপদ স্টর্মি ড্যানিয়েলস

হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর সবচেয়ে বড় আইনি বিপদের মুখে পড়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পর্নস্টার স্টর্মি ড্যানিয়েলস যৌন সম্পর্কের কথা ফাঁস করার পর তাঁর মুখ বন্ধ করার জন্য অর্থ দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। 

সেই মামলায় মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে গত শনিবার ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেওয়ার পর সরগরম আলোচন চলছে। ট্রাম্পের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক আছে বলে পাঁচ বছর আগে প্রকাশ্যে দাবি করেন স্টর্মি ড্যানিয়েলস। 

ওই দাবি অস্বীকার করলেও ঘটনার ধারাবাহিকতায় পরে ট্রাম্প ‘হাশ মানি’ হিসেবে স্টর্মিকে অর্থ দেওয়ার বিষয়ে বক্তব্য পাল্টে দিয়েছেন।  

ট্রুথ সোশ্যালের পোস্টে এই অভিযোগের প্রতিবাদ জানাতে সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরও টুইটারে পোস্ট দিয়ে একই ধরনের আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। তখন ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গাও করেন তাঁরা।

ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কিত ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলেছে, ট্রাম্প এই পোস্ট করেছেন সম্পূর্ণ অনুমানের ভিত্তিতে। কারণ তিনি গণমাধ্যমের খবরে দেখেছিলেন, অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগের কার্যালয় নিরাপত্তা চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। 

স্টর্মি ডানিয়েলসকে ‘হাশ মানি’ দেওয়ার ২০১৬ সালের মামলায় আজ সোমবার নিউইয়র্কের গ্র্যান্ড জুরি এক সাক্ষীর শুনানি করবে বলে জানা গেছে। সুতরাং মঙ্গলবার ট্রাম্পের গ্রেপ্তার হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ অভিযোগের কাগজপত্রের খসড়া তৈরিতে অতিরিক্ত কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে। 

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ট্রাম্পের পক্ষের কৌঁসুলি দলের অনুরোধে আদালতে সাক্ষ্য দিতে হাজির হচ্ছেন সাক্ষী রবার্ট জে কস্টেলো। একসময় ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেনের আইনি উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। 

তাহলে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হতেন পারেন, এমন পোস্ট দেওয়ার অর্থ কী ডোনাল্ড ট্রাম্পের? সূত্রগুলো বলছে, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে চান। সেই উদ্দেশ্যে এখন থেকেই সামাজিক মাধ্যমে নানাভাবে প্রচারাভিযান চালাতে শুরু করেছেন তিনি। ট্রাম্পের মিত্ররা তাঁকে পরামর্শ দিয়েছেন যে, এই মুহূর্তে স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে গোপনে অর্থ দেওয়ার মামলাটি তাঁকে রাজনৈতিকভাবে উপকৃত করবে। 

তবে অনেক রিপাবলিকান বলছেন, ট্রাম্প এই মামলা নিয়ে ভীষণ আতঙ্কের মধ্যে আছেন। গত সপ্তাহে এই মামলা নিয়ে আলোচনাও করেছেন। তিনি ম্যানহাটন ফৌজদারি আদালতে সশরীরে উপস্থিত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। 

তবে তাঁর আইনজীবীরা নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ট্রাম্পকে আদালতে উপস্থিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং আত্মসমর্পণের তারিখ নিয়ে আলোচনার পরামর্শ দিয়েছেন। 

ট্রাম্পের আইনজীবীরা বলেছেন, ২০১২ সালে ডেমোক্রেটিক সিনেটর জন অ্যাওয়ার্ডসের বিরুদ্ধে অনুরূপ একটি মামলার বিচার ব্যর্থ হয়েছিল। তারপরও ট্রাম্পকে একটি কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হবে, তাতে সন্দেহ নেই। 

দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ট্রাম্পের আইনজীবীরা মামলাটি প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানাতে ম্যান হাটনের ডিস্ট্রিক অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগের নেচেলেস ব্র্যাগের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। তবে তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। এ থেকে প্রমাণিত হয়, তিনি মামলাটি এগিয়ে নেবেন। 

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে মামলা করেন স্টেফানি গ্রেগরি ক্লিফোর্ড, যিনি পেশার ক্ষেত্রে স্টর্মি ড্যানিয়েলস নামে পরিচিত। এক টুইটার পোস্টে তিনি লেখেন, ‘নীরব থাকার যে চুক্তি ট্রাম্পের সঙ্গে স্টেফানির হয়েছিল, তা মূলত অকার্যকর। কারণ এতে ট্রাম্প স্বাক্ষর করেননি।’

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, স্টেফানির মুখ বন্ধ রাখতে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক মাস আগে ট্রাম্প তাঁকে ১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার দিয়েছিলেন। পরে স্টেফানিকে অর্থ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও এর সঙ্গে ট্রাম্প বা তাঁর প্রচারণা দলের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না বলে দাবি করেছিলেন ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের আইনজীবী মাইকেল কোহেন। 

স্টেফানি মামলায় অভিযোগ করেন, ২০০৬ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলে প্রার্থিতার লড়াইয়ে ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর যখন একের পর এক নারী তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনছিলেন, স্টেফানি তখনই মুখ খুলতে চেয়েছিলেন। 

পরে ট্রাম্পের নির্দেশে কোহেন মুখ বন্ধ রাখার চুক্তির (নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট) খসড়া প্রস্তুত করেন। এই খসড়ায় এসেনশিয়াল কনসালট্যান্টস- এলএলসি নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে স্টেফানির নীরবতার বিনিময়ে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। মামলায় এই চুক্তির একটি কপিও সংযুক্তি হিসেবে দিয়েছেন স্টেফানি। তাঁর নথিতে এই পর্নস্টার আরও বলেন, এলএলিসর সঙ্গে চুক্তিতে ডেভিড ডেনিসন ও পেগি পিটারসন ছদ্মনামে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প ও স্টেফানি। 

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, ডেইলি মেইল, বিবিসি ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল

ভিত্তিহীন অভিযোগে হার্ভার্ডের অধ্যাপককে গ্রেপ্তার করল মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ

মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে ভেনেজুয়েলা ছাড়তে বলল স্টেট ডিপার্টমেন্ট

এইচ-১বি ভিসার ফি বাড়ানোর পর এবার যাচাই প্রক্রিয়াও কঠোর করল ট্রাম্প প্রশাসন

সোমালি অভিবাসীদের ‘আবর্জনা’ বললেন ট্রাম্প

আমি আগের তুলনায় এখন আরও বেশি প্রাণবন্ত—বলেই মন্ত্রিসভায় ঘুমিয়ে পড়লেন ট্রাম্প

বাইডেনের ‘অটোপেনে’ সই করা সব নথি বাতিল করছেন ট্রাম্প

গ্রিন কার্ড থেকে নাগরিকত্ব—১৯ দেশের অভিবাসীদের সব আবেদন থামিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র

নিউইয়র্কে শ্রম আইন লঙ্ঘন: ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার জরিমানা দিচ্ছে স্টারবাকস

ট্রাম্পের এমআরআই পরীক্ষার রিপোর্টে যা আছে

‘শিগগির ক্ষমতা ছাড়’—মাদুরোকে ট্রাম্পের আলটিমেটাম