হোম > বিশ্ব > যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা

আমি আগের তুলনায় এখন আরও বেশি প্রাণবন্ত—বলেই মন্ত্রিসভায় ঘুমিয়ে পড়লেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

বারবার বাইডেনকে ঘুমকাতুরে বলে উপহাস করা ট্রাম্প এখন নিজেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঘুমাচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত

ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ঠিক বারোটার কিছু পর মন্ত্রিসভার বৈঠক শুরু হয়। সেখানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বভাবমতোই প্রথমে ‘ঘুমকাতুরে জো’ বাইডেনকে নিয়ে কিছু কথা বলেন। এরপরই তিনি দাবি করেন, তিনি ২৫ বছর আগে যতটা বিচক্ষণ–প্রাণবন্ত ছিলেন, এখন তার চেয়েও অনেক বেশি। এবং এই কথা বলার কিছুক্ষণ পরেই তিনি বৈঠকের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়েন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন–এর খবর, গত সপ্তাহে নিউইয়র্ক টাইমস ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করে। যেখানে বলা হয় ৭৯ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে কিছুটা ধীর হয়ে গেছেন। ট্রাম্প সেই রিপোর্টের কড়া সমালোচনা করেই বলেন, তিনি নাকি ‘২৫ বছর আগের চেয়েও এখন অনেক বেশি বিচক্ষণ ও প্রাণবন্ত।’ নিউইয়র্ক টাইমসকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প ঝরঝরে, কিন্তু ওরা ঝরঝরে নয়।’

এ সময় ট্রাম্প সাংবাদিকদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন। কারণ, তিনি মনে করেন—তাঁর স্বাস্থ্য এবং কর্মক্ষমতা নিয়ে তাঁর সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা সবাই পাগল।’ কিন্তু এর পরের দেড় ঘণ্টা ধরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ট্রাম্পের নিজেকে ‘ঝরঝরে’ এবং ‘প্রাণবন্ত’ দাবি করার প্রমাণ দিতে রীতিমতো সংগ্রাম করেছেন।

তাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল তিনি যেন মধ্যদুপুরের ভাতঘুমের সঙ্গে এক দীর্ঘ ও প্রায়শই হেরে যাওয়া লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি তাঁর মন্ত্রিসভা যখন তাঁর প্রিয় কাজ—মানে ট্রাম্পের প্রশংসা করা—নিয়ে ব্যস্ত, তখনো তাঁকে বারবার চোখ বুজে ঘুমে ঢলে পড়তে দেখা গেল।

মজার বিষয় হলো—একসময় ট্রাম্প নিজেই বাইডেনের এ ধরনের দৃশ্য দেখে উপহাস করে বলতেন এটা প্রেসিডেন্টের কাজের শক্তি ও যোগ্যতার অভাবের প্রমাণ। নিজের স্বাস্থ্য এবং কাজের ক্ষমতা নিয়ে রিপোর্টের বিরুদ্ধে কথা বলার প্রায় ১৫ মিনিট পর, ট্রাম্পের নিজ চোখ খোলা রাখতে কষ্ট হচ্ছিল। ঠিক তখন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক তাঁর বাণিজ্য যুদ্ধের প্রশংসা করে বলছিলেন, ‘সর্বকালের সেরা প্রেসিডেন্টের জন্য সর্বকালের সেরা মন্ত্রিসভা।’

এরপর আবাসন ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী স্কট টার্নার এবং কৃষিমন্ত্রী ব্রুক রোলিনসের কথা শোনার সময় ট্রাম্পের চোখের পাতা আরও ধীরে নামতে থাকল। যখন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট, শ্রমমন্ত্রী লরি চাভেজ-ডেরেমেড এবং পরিবেশ রক্ষা সংস্থার প্রশাসক লি জেলডিন কথা বলছিলেন, তখন তাঁর ঘুম ঠেকানোর লড়াই আরও কঠিন হলো।

শিক্ষামন্ত্রী লিন্ডা ম্যাকমাহন এবং স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবামন্ত্রী রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়রের কথা বলার সময়, ট্রাম্পকে ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ডের জন্য চোখ বন্ধ করে নিশ্চল থাকতে দেখা গেল। এরপর তিনি চোখ নাড়ালেন বা মাথা নেড়ে সম্মতি জানালেন।

দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটের ঠিক আগে, যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও কথা বলছিলেন, তখনো ট্রাম্প ঘুমে ঢুলছিলেন। রুবিও যখন যুদ্ধ শেষ করার জন্য ট্রাম্পের চেষ্টার প্রশংসা করছিলেন, তখন ট্রাম্পের এই ঘুমিয়ে পড়াটা আরও বেশি চোখে পড়ল। কারণ তিনি রুবিওর ঠিক পাশেই বসেছিলেন এবং ক্যামেরা দুজনের ওপর জুম করা ছিল।

মঙ্গলবারের এই দৃশ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট দাবি করেন, ট্রাম্প ‘মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন এবং পুরো তিন ঘণ্টার বিশাল মন্ত্রিসভার বৈঠক পরিচালনা করছিলেন।’

এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ট্রাম্পকে এত স্পষ্ট করে ঘুমের সঙ্গে লড়তে দেখা গেল। এর আগের ঘটনাটি ছিল ৬ নভেম্বর, ওভাল অফিসে। সেবার ওয়াশিংটন পোস্ট একাধিক ভিডিও দেখে হিসাব করেছিল যে ট্রাম্প প্রায় ২০ মিনিট চোখ খোলা রাখতে সংগ্রাম করেছিলেন।

এক সময় যে ট্রাম্প তাঁর পূর্বসূরি বাইডেনকে ঘুমকাতুরে বলে তিরস্কার করতেন সেই ট্রাম্পই আজ নিজের তৈরি করার মানদণ্ডে নিজেই ফেঁসে যাচ্ছেন। ২০২১ সালে স্কটল্যান্ডের জলবায়ু সম্মেলনে বাইডেনকে ঘুমিয়ে পড়তে দেখার পর ট্রাম্প এক ই–মেইলে বলেছিলেন, ‘যে কেউ কোনো বিষয়ে সত্যি সত্যি উৎসাহী ও বিশ্বাসী হবে, সে কখনো ঘুমিয়ে পড়বে না!’

এইচ-১বি ভিসার ফি বাড়ানোর পর এবার যাচাই প্রক্রিয়াও কঠোর করল ট্রাম্প প্রশাসন

সোমালি অভিবাসীদের ‘আবর্জনা’ বললেন ট্রাম্প

বাইডেনের ‘অটোপেনে’ সই করা সব নথি বাতিল করছেন ট্রাম্প

গ্রিন কার্ড থেকে নাগরিকত্ব—১৯ দেশের অভিবাসীদের সব আবেদন থামিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র

নিউইয়র্কে শ্রম আইন লঙ্ঘন: ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার জরিমানা দিচ্ছে স্টারবাকস

ট্রাম্পের এমআরআই পরীক্ষার রিপোর্টে যা আছে

‘শিগগির ক্ষমতা ছাড়’—মাদুরোকে ট্রাম্পের আলটিমেটাম

আমার মাথায় সমস্যা নেই, বিশ্বাস না হলে এমআরআই রিপোর্ট দেখাব—সাংবাদিকদের ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে হোয়াইট হাউসে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন ট্রাম্প

ট্রাম্পের কারণে বিদেশি শিক্ষার্থী হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিলিয়ন ডলার ক্ষতি