মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের’ অংশ হিসেবে লাতিন আমেরিকায় মাদক চক্রগুলোর বিরুদ্ধে স্থল অভিযান শুরু করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। তাঁর এই ঘোষণা মূলত এই অঞ্চলে সামরিক পদক্ষেপ সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দেয়। তবে তিনি কখন বা কোথায় আক্রমণ শুরু হবে তা নির্দিষ্ট করেননি।
দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম চোশুন ইলবোর খবরে বলা হয়েছে, গতকাল ১২ ডিসেম্বর ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সমুদ্রপথে প্রবেশকারী ৯৬ শতাংশ মাদক আটকে দিয়েছি। আমরা এখন স্থল অভিযান শুরু করব, আর স্থলভাগ অনেক সহজ। এটি শিগগির ঘটবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর বা যুদ্ধ মন্ত্রণালয় (মিনিস্ট্রি অব ওয়ার) সেপ্টেম্বর থেকে ভেনেজুয়েলার নিকটবর্তী ক্যারিবীয় সাগর এবং পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরসহ লাতিন আমেরিকার অন্যান্য উপকূলীয় জলসীমায় ‘মাদক পরিবহনকারী জাহাজ’ হিসেবে চিহ্নিত জাহাজ ডুবিয়ে দিয়ে আসছে। এতে বিপুল প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।
এর আগে গত আগস্টে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ‘বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মাদক পাচারকারী’র তকমা দেন ট্রাম্প। তাঁকে আটকের তথ্যের জন্য পুরস্কার ২৫ মিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৫০ মিলিয়ন ডলার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প সমুদ্রপথের চাপ ছাড়াও বারবার স্থল অভিযানের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছেন। যদিও আগে এই ধরনের মন্তব্য মাদুরো সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। ট্রাম্প এবার বলেছেন যে স্থল হামলা শুধু ভেনেজুয়েলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। তিনি বলেন, ‘লক্ষ্য যে ভেনেজুয়েলাই হতে হবে, এমনটি নয়। যারা আমাদের দেশে মাদক নিয়ে আসে, তাদের সবাইকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে।’
ট্রাম্প প্রশাসন মাদক সমস্যাকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় হিসেবে দেখছে এবং মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইকে কার্যত একটি ‘যুদ্ধ’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে সামরিক পদক্ষেপের বৈধতা বারবার তুলে ধরেছে। ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, যদি মাদকের অতিরিক্ত মাত্রায় মৃত্যুর সংখ্যাকে যুদ্ধের হতাহতের মতো করে গণনা করা হয়; তবে ‘এটি একটি তুলনাহীন যুদ্ধ হবে।’
ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে স্থল হামলা চালাবে কি না, তা এখনো অনিশ্চিত। মার্কিন কংগ্রেসের কিছু সদস্য এর আগে ‘সামরিক অভিযানের জন্য সুস্পষ্ট আইনি ভিত্তির অভাব’ উল্লেখ করেছেন। ব্লুমবার্গ মূল্যায়ন করেছে যে ‘স্থল হামলা লাতিন আমেরিকান অঞ্চলে পরিস্থিতির গুরুতর বৃদ্ধি বোঝাবে।’
এই বিষয়ে মাদুরো বলেছেন, ‘যদি আমরা কোনো বিদেশি আক্রমণের মুখোমুখি হই, তবে শ্রমিক শ্রেণিকে সাধারণ ধর্মঘট ও গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আরও উগ্র বিপ্লব অনুসরণ করতে হবে।’