ঢাকা: গত সপ্তাহে সৌদি আরবের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, মসজিদে উচ্চশব্দে মাইক বাজানো যাবে না। মসজিদের লাউডস্পিকারের ভলিউম সর্বোচ্চ তিন ভাগের এক ভাগ পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। এই নির্দেশনাটি ওয়াজ মাহফিল বা অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পরিবর্তে বিশেষ করে আজানে সময় লাউডস্পিকারের ভলিউম নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে।
সৌদি সরকারের এমন সিদ্ধান্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে। সমালোচকেরা হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে রেস্তোরাঁ ও ক্যাফেতে উচ্চশব্দে মিউজিক বাজানো নিষিদ্ধ করার দাবি তুলতে শুরু করেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছেন সৌদি আরবের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী আবদুল লতিফ আল-শেখ।
মন্ত্রী বলেন, যাঁদের কাছ থেকে অভিযোগ এসেছে তাঁদের মধ্যে অনেকে সন্তানের বাবা–মাও রয়েছেন। তাঁরা বলছেন, মসজিদের লাউডস্পিকারের কারণে শিশুদের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে। বয়স্কদেরও সমস্যা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘যাঁরা নামাজ পড়তে চান তাঁদের ইমামের ডাকের জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন হয় না। তাঁদের আগেভাগেই মসজিদে হাজির হওয়ার কথা।’
মন্ত্রী লতিফ আল-শেখ বলেন, কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলেও আজান সম্প্রচার করা হয়। সে হিসেবে মসজিদের লাউডস্পিকারের খুব কমই দরকার পড়ে বলে মনে করেন তিনি।
সৌদি আরবে ১০ হাজারের বেশি মসজিদ রয়েছে। মসজিদের লাউডস্পিকারের ভলিউম কমানোর এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, যাঁরা এই নীতির সমালোচনা করছেন তাঁরা দেশের শত্রু। তাঁরা জনমতে একটা অস্থিরতা তৈরি করার পাঁয়তারা করছেন।
মসজিদের মাইকের ভলিউম কমানো সৌদি আরবের কার্যত রাষ্ট্রপ্রধান যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ব্যাপকভিত্তিক উদারীকরণ পদক্ষেপেরই একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সৌদির সমাজে উন্মুক্তকরণের নতুন এই যুগকে অনেকে ধর্মের ওপর জোর দেওয়ার নীতি থেকে সরে যাওয়া হিসেবেও দেখছেন।
অত্যন্ত রক্ষণশীল সৌদি সমাজের অনেক বিধিনিষেধ শিথিল করেছেন যুবরাজ। সিনেমা হল, নারীদের গাড়ি চালানো এবং সংগীত ও খেলাধুলার গ্যালারিতে নারী–পুরুষ একসঙ্গে বসার অনুমতি দিয়েছেন তিনি। সামাজিক বিধিনিষেধ শিথিল করার এই নীতি অনেক নাগরিকই সানন্দে গ্রহণ করেছেন। দেখা গেছে, ৩০ বছরের কম বয়সীদের দুই তৃতীয়াংশই নতুন নীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন।
সূত্র: আল জাজিরা