যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও গাজায় গড়ে প্রতিদিন দুজন শিশু নিহত হচ্ছে। আজ শুক্রবার এ তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। সংস্থাটি বলছে, হত্যাকাণ্ড বন্ধের উদ্দেশ্যে চুক্তি হলেও গাজায় সহিংসতা থামেনি।
জেনেভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ইউনিসেফের মুখপাত্র রিকার্দো পাইরেস বলেন, ‘১১ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৭ জন শিশু নিহত হয়েছে এবং আরও কয়েক ডজন শিশু আহত হয়েছে।’
তিনি জানান, এর মানে হলো যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এবং হত্যাকাণ্ড থামানোর চুক্তি হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুজন শিশু নিহত হয়েছে।
পাইরেস আরও বলেন, প্রতিটি সংখ্যার আড়ালে এমন একটি শিশু রয়েছে, যার জীবন সহিংসভাবে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি পুনরাবৃত্তি করেন, এগুলো নিছক পরিসংখ্যান নয়।
ইউনিসেফ কর্মীরা গাজায় যা দেখছেন, তাঁর বর্ণনা দিয়ে পাইরেস বলেন, সেখানে অঙ্গহানি নিয়ে খোলা আকাশের নিচে ঘুমাচ্ছে শিশুরা, অনেকে এতিম হয়ে গেছে এবং জলমগ্ন অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ভয়ে কাঁপছে।
তিনি বলেন, ‘আমি গত আগস্টে যখন সেখানে ছিলাম, তখন নিজেই এটি দেখেছি। তাদের জন্য কোনো নিরাপদ স্থান নেই এবং বিশ্ব তাদের এই দুর্ভোগ দেখে নিশ্চুপ থাকতে পারে না।’
সম্প্রতি গাজায় ইউনিসেফ তাদের কার্যক্রম বাড়িয়েছে। কিন্তু সেখানে কাজ করা কর্মীরা স্বীকার করেছেন, তাদের প্রচেষ্টা এখনো অপ্রতুল।
আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাসকারী কয়েক লক্ষ বাস্তুচ্যুত শিশুর জন্য আসন্ন শীতকালীন পরিস্থিতি এবং তা থেকে সৃষ্ট সম্মিলিত ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেন পাইরেস। তিনি বলেন, সামনে বিপদ আরও অনেক বেশি।
পাইরেস জানান, শিশুদের গরম কাপড়ের ব্যবস্থা নেই। ফলে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বাড়ছে এবং দূষিত জল ডায়রিয়া ছড়িয়ে দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘ধ্বংসাবশেষের ওপর দিয়ে শিশুরা এখনো খালি পায়ে হাঁটছে।’
তিনি বিশ্বকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধের সময় বহু শিশু সর্বোচ্চ মূল্য দিয়েছে। যুদ্ধবিরতির মধ্যেও বহু শিশুকে এখনো সেই মূল্য দিতে হচ্ছে। বিশ্ব তাদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে যুদ্ধ থামবে এবং আমরা তাদের রক্ষা করব। কিন্তু সেই অনুযায়ী কোনো কাজই হচ্ছে না। গাজার শিশুদের অপেক্ষায় আমাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করতে হবে।’