হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

গাজায় ৭৩ দিনে ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ডের শিকার ৪১১ ফিলিস্তিনি, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন ৮৭৫ বার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত একটি এলাকা। ছবি: আনাদোলু

ফিলিস্তিনি অবরুদ্ধ ছিটমহল গাজায় ইসরায়েল গত ৭৩ দিনে অন্তত ৮৭৫ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটি অন্তত ৪১১ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। গাজার সরকারি জনসংযোগ বিভাগের বরাতে লেবানিজ সংবাদমাধ্যম আল-মায়েদিনের প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

গাজা সরকারি জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী ৭৩ দিন ধরে ক্রমাগত এবং পরিকল্পিতভাবে তা লঙ্ঘন করে চলেছে। তাদের এই কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং চুক্তির মানবিক প্রটোকলকে চরমভাবে অবজ্ঞা করছে।

সোমবার এক বিবৃতিতে দপ্তর জানায়, সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলো ‘ইসরায়েল’-এর পক্ষ থেকে মোট ৮৭৫টি লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। এর মধ্যে সামরিক নাগরিকদের ওপর সরাসরি গুলির ঘটনা ২৬৫টি, আবাসিক এলাকায় সামরিক যানের অনুপ্রবেশ ৪৯টি, ফিলিস্তিনি ও তাদের ঘরবাড়ি লক্ষ্য করে ৪২১টি গোলাবর্ষণ ও হামলার ঘটনা এবং বেসামরিক ভবন ও স্থাপনা ধ্বংস ও গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ১৫০টি।

বিবৃতি অনুযায়ী, এসব যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনায় ৪১১ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ হাজার ১১২ জন আহত হয়েছে। এ ছাড়া ৪৫ জনকে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এদিকে মানবিক সহায়তার বিষয়ে জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, সহায়তা প্রবেশের ক্ষেত্রে ইসরায়েল প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। নির্ধারিত ৪৩ হাজার ৮০০টি ট্রাকের বদলে ওই সময়ে গাজায় মাত্র ১৭ হাজার ৮১৯টি সহায়তার ট্রাক প্রবেশ করতে পেরেছে, যা মোট প্রতিশ্রুতির মাত্র ৪১ শতাংশ।

জ্বালানি সরবরাহেও মারাত্মক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী ৩ হাজার ৬৫০টি ট্রাক আসার কথা থাকলেও এসেছে মাত্র ৩৯৪টি, যা মাত্র ১০ শতাংশ। এর ফলে হাসপাতাল, বেকারি, পানি শোধনাগার এবং পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

জনসংযোগ বিভাগ আরও সতর্ক করেছে, তাঁবু ও ভ্রাম্যমাণ ঘর (মোবাইল হোম) প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় আশ্রয় সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। সাম্প্রতিক শীতকালীন ঝোড়ো হাওয়ায় এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ৪৬টি ঘর ধসে পড়েছে এবং ভেতরে আশ্রয় নেওয়া ১৫ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

এ ছাড়া, বাস্তুচ্যুতদের তাঁবুতে প্রচণ্ড ঠান্ডায় দুই শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ১ লাখ ২৫ হাজারের বেশি তাঁবু ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, যার ফলে প্রায় ১৫ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ কোনো প্রকার সুরক্ষা ছাড়াই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বিশেষ করে সামনে যখন হাড়কাঁপানো ঠান্ডার সময় তথা ‘চল্লিশ দিনের’ সময় ঘনিয়ে আসছে, তখন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, এই চলমান লঙ্ঘনগুলো যুদ্ধবিরতি চুক্তির সঙ্গে এক বিপজ্জনক প্রতারণা। তারা ইসরায়েলকে অবদমন, অনাহার এবং জবরদস্তির নীতি চাপিয়ে দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছে। একটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তি বজায় রাখার কথা থাকলেও এই মানবিক বিপর্যয়ের সময় যে পরিমাণ প্রাণহানি এবং পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে, তার জন্য ইসরায়েলকেই সম্পূর্ণ দায়ী করা হয়েছে।

যুদ্ধের মধ্যেই গাজায় দুবার সন্তান প্রসবের ভয়াবহ স্মৃতি হাদিলের

আসাদের খালি হয়ে যাওয়া কুখ্যাত কারাগারগুলো ভরে উঠছে আবার

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

ফিলিস্তিনিদের প্রলোভনে ফেলে গাজা খালি করার মিশনে ইসরায়েলঘনিষ্ঠ ভুয়া সংস্থা

গাজায় নতুন শাসনকাঠানো কার্যকর শিগগির: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পাঠদান শুরু

ইসরায়েলি সেটেলারদের আগ্রাসন ঠেকাতে ফিলিস্তিনি গ্রামে মানবঢাল একদল স্বেচ্ছাসেবক

সিরিয়ায় একযোগে ৭০ স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা

সমুদ্র উপকূলে পাওয়া গ্যাস বিক্রি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের

আরব বসন্তে ক্ষমতাচ্যুত একনায়কেরা এখন কোথায় কেমন আছেন