হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

গাজায় ৩ জনকে হত্যা, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

পশ্চিম তীরের বেইত লিদ গ্রামে অবৈধ ইসরায়েলি দখলদার সেটলাররা ফিলিস্তিনিদের একটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় যুদ্ধবিরতি চললেও তা খুব কম সময়ের জন্যই মানছে ইসরায়েল। দেশটি প্রতিনিয়ত যুদ্ধবিরতি ভেঙে চলেছে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছে। একই সময়ে দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা ফিলিস্তিনি গ্রামগুলোতে হামলা বাড়িয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অপর দিকে গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার হওয়া ৩৫ অজ্ঞাত ফিলিস্তিনির মরদেহ আল-শিফা হাসপাতালে নিয়ে গেছে। সেখানে তাদের পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের যুদ্ধের পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬৯ হাজার ছাড়িয়েছে। সরকারি হিসাবে অন্তত ৬৯ হাজার ১৮২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৯৪ জন আহত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী অন্তত ২৪৫ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।

ধারণা করা হচ্ছে, ইসরায়েলের এই দুই বছরের গণহত্যার পরও গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে হাজারো নিখোঁজ মানুষের মরদেহ রয়ে গেছে। আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজযুম জানান, ‘গাজার পরিবারগুলো এখনো স্বজনদের খুঁজে ফিরছে। তারা নাসের হাসপাতাল, মরচুয়ারি ও শনাক্তকরণ কক্ষে ছুটে বেড়াচ্ছে। ভাঙা শরীরের অংশ, পোশাক, দাগ বা কোনো চিহ্ন দেখে প্রিয়জনকে চিনে ফেলার চেষ্টা করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে আছেন। মরদেহ পচে গেছে, ডিএনএ পরীক্ষার সরঞ্জামও নেই। এতে পরিবারগুলো ভয়াবহ অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে, বিশেষ করে মায়েরা, যাঁরা প্রতিদিন হাসপাতালে ঘুরেফিরে আশায় বুক বাঁধেন, কিন্তু শেষে ভাঙা হৃদয় নিয়ে আশ্রয়ে ফিরে যান।’

গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় জানিয়েছে, ১০ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি অন্তত ২৮২ বার লঙ্ঘন করেছে। বিমান হামলা, গোলাবর্ষণ ও সরাসরি গুলিবর্ষণের মাধ্যমে এসব হামলা চালানো হয়েছে। আল জাজিরার বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির সময় ৩১ দিনের মধ্যে ২৫ দিনই ইসরায়েল গাজায় আক্রমণ চালিয়েছে। অর্থাৎ মাত্র ছয় দিন কোনো সহিংসতা, মৃত্যু বা আহতের ঘটনা ঘটেনি।

তবু যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, যুদ্ধবিরতি এখনো ‘চলমান।’ অন্যদিকে দখলকৃত পশ্চিম তীরে মঙ্গলবার ডজনখানেক মুখোশধারী ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী দুটি ফিলিস্তিনি গ্রামে হামলা চালায়। তারা গাড়ি ও সম্পত্তিতে আগুন ধরিয়ে দেয়, এতে চারজন ফিলিস্তিনি আহত হন।

হামলাগুলো ঘটে বেইত লিদ ও দেইর শারাফ গ্রামে। বসতি স্থাপনকারীরা সেখানে চারটি দুগ্ধবাহী ট্রাক, কৃষিজমি, টিনের ঘর ও এক বেদুইন সম্প্রদায়ের তাঁবু পুড়িয়ে দেয়। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা মুয়াইয়াদ শা’বান বলেন, এসব হামলা ফিলিস্তিনিদের জমি থেকে উচ্ছেদ করার বড় পরিকল্পনার অংশ। তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল সরকার বসতি স্থাপনকারীদের রক্ষা ও ছাড় দিচ্ছে।

ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, ‘চরমপন্থী সহিংসতার’ অভিযোগে চার ইসরায়েলিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আল জাজিরার ফ্যাক্টচেক ইউনিট সানাদের যাচাই করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি গাড়ি জ্বলছে, ফিলিস্তিনিরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে। মঙ্গলবারই ইসরায়েলি সৈন্যদের ওপরও বসতি স্থাপনকারীরা হামলা চালায়। এতে একটি সামরিক গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইউরোপের সঙ্গে ‘পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে’ আছে ইরান: পেজেশকিয়ান

নামাজরত ফিলিস্তিনির ওপর গাড়ি চালিয়ে দিলেন ইসরায়েলি সেনা

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেই বড়দিনের আনন্দ খুঁজছে ক্ষুদ্র খ্রিষ্টান সম্প্রদায়

শানলিউরফা: নবীদের যে নগরে মিলেছে তিন ধর্মের মানুষ

৭ অক্টোবরের দায় এড়াতে ফন্দি খোঁজার দায়িত্ব দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু: সাবেক মুখপাত্র

মসজিদে নববির মুয়াজ্জিন শেখ ফয়সাল নোমান আর নেই

ইসরায়েল আর ‘কখনোই গাজা ত্যাগ করবে না’

তুরস্কে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে লিবিয়ার ‘জাতীয় ঐক্যের সরকারের’ সেনাপ্রধান নিহত

গাজায় ৭৩ দিনে ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ডের শিকার ৪১১ ফিলিস্তিনি, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন ৮৭৫ বার

যুদ্ধের মধ্যেই গাজায় দুবার সন্তান প্রসবের ভয়াবহ স্মৃতি হাদিলের