হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

পশ্চিম তীরে এক বছরে ১৫০০ বাড়ি ভেঙেছে ইসরায়েল, ভাঙবে আরও ২৫টি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও নূর শামস ক্যাম্পে উচ্ছেদ অভিযান চালায় ইসরায়েল। সে সময় উচ্ছেদের শিকার একটি পরিবারের সদস্যরা বের হয়ে যাচ্ছেন বাড়ি থেকে। ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর অবৈধ কার্যক্রম কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। দখলদার বাহিনী বিগত এক বছরে অঞ্চলটিতে ১ হাজার ৫০০টি বাড়ি ভেঙে দিয়েছে। এ সপ্তাহে আরও ২৫টি বাড়ি ভাঙার পরিকল্পনা করছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এ সপ্তাহে অধিকৃত পশ্চিম তীরের নূর শামস শরণার্থীশিবিরে ২৫টি আবাসিক ভবন ভেঙে দেবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। নূর শামস তুলকারেম গভর্নরেটের অন্তর্ভুক্ত। এই অঞ্চলের গভর্নর আবদুল্লাহ কামিল গতকাল সোমবার এএফপিকে জানান, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কো-অর্ডিনেটর অব গভর্নমেন্ট অ্যাকটিভিটিজ ইন দ্য টেরিটরিজ-সিওজিএটি তাঁকে এই পরিকল্পিত ধ্বংসের বিষয়ে অবহিত করেছে।

নূর শামসের কাছেই অবস্থিত তুলকারেম ক্যাম্পের কমিটির প্রধান ফয়সাল সালামা বলেন, এই ধ্বংসের নির্দেশে প্রায় ১০০টি পরিবারের ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইসরায়েল গত জানুয়ারিতে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ‘অপারেশন আয়রন ওয়াল’ শুরু করে। তাদের দাবি—এই অভিযান উত্তর-পশ্চিম তীরের শরণার্থীশিবিরগুলোতে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য পরিচালিত হচ্ছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েল গণহত্যার যুদ্ধে যে ধরনের কৌশল ব্যবহার করেছিল, পশ্চিম তীরজুড়ে ভূখণ্ড দখল ও নিয়ন্ত্রণের জন্য একই ধরনের অনেক কৌশল ব্যবহার করছে।

রামাল্লা থেকে আল জাজিরার নূর ওদেহ বলেন, ‘এটি এক বৃহত্তর অভিযানের অংশ, যা প্রায় এক বছর ধরে চলছে। এই অভিযানে তিনটি শরণার্থীশিবিরকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে এবং গত এক বছরে সব মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ৫০০টি বাড়ি হয় ধ্বংস করা হয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৩২ হাজার ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে।’

ফিলিস্তিনি এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এ ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ ফিলিস্তিনিদের ‘খাঁচায় পুরে ফেলার’ এবং পশ্চিম তীরের মানচিত্রে পরিবর্তন আনার একটি প্রচেষ্টা। সোমবার নূর শামসের কয়েক ডজন বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা তাদের ক্যাম্পে ফিরে যাওয়ার পথে বাধা দেওয়া ইসরায়েলি সামরিক সাঁজোয়া যানের সামনে একটি বিক্ষোভ করে। তারা ধ্বংসের আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় এবং তাদের বাড়িতে ফেরার অধিকার দাবি করে।

ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি জাতীয় কাউন্সিলের প্রধান রুহি ফাত্তুহ বলেছেন, ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্ত ‘জাতিগত নির্মূল এবং অবিরাম জোরপূর্বক স্থানচ্যুতির’ অংশ। ব্রাউন ইউনিভার্সিটির হলোকাস্ট এবং গণহত্যা অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ওমের বারতোভ বলেছেন, ইসরায়েল দখলকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি জনসংখ্যাকে ‘মানবেতর’ করে তুলছে।

তিনি বলেন, ‘এটি একধরনের সামাজিক মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা ১৯৩০-এর দশকে জার্মানিতে ইহুদি জনসংখ্যার ক্ষেত্রে যা ঘটেছিল। অর্থাৎ আপনার (ফিলিস্তিনি জনগণ, ইসরায়েলি ইহুদি জনগণ এবং অন্যপক্ষের মানুষের সঙ্গে ক্রমবর্ধমানভাবে কোনো যোগাযোগই রাখতে পারছে না এবং তারা যেন অস্তিত্বহীন, সেভাবে আছে, সেভাবেই থাকবে।’

শিবিরের বাসিন্দা আয়েশা দামার চার তলা পারিবারিক বাড়িও ভেঙে দেওয়া হবে। এই বাড়িতে প্রায় ৩০ জন লোক থাকত। তিনি এএফপিকে বলেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে তিনি নিজেকে একা অনুভব করছেন। তিনি বলেন, ‘যেদিন এটা ঘটে (ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়), সেদিন কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি বা আমাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেনি।’

শিবিরের আরেক বাসিন্দা সিহাম হামায়েদ বলেন, ‘আমার ভাইদের সবগুলো বাড়িঘর ধ্বংস করা হবে। আর আমার সবাই এরই মধ্যে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছি।’ পশ্চিম তীরের অন্যান্য শরণার্থীশিবিরের মতো নূর শামসও ১৯৪৮ সালের নাকবার পর প্রতিষ্ঠিত হয়। সে সময় বর্তমান ইসরায়েলি ভূখণ্ড থেকে লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করা হয়।

বৃষ্টি, বন্যা আর আবর্জনা: গাজাবাসীর অন্তহীন শীতের রাতের দুঃসহ বেদনা

গাজায় হামলা চালিয়ে হামাসের শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের

সিরিয়ায় আইএসের হামলায় দুই মার্কিন সেনা এবং এক দোভাষী নিহত

এবার ডিজেলবাহী ট্যাংকার জব্দ করল ইরান, বাংলাদেশিসহ ১৮ ক্রু আটক

ইরানে দুইবার সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে ওয়াশিংটন: মার্কিন দূত

জানুয়ারিতেই হতে পারে গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, সেনা প্রস্তুত করছে ইন্দোনেশিয়া

তীব্র শীতে গাজায় প্রাণ সংহারকারীর ভূমিকায় ‘বায়রন’, নিহত অন্তত ১৪

ইরানে নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মাদি গ্রেপ্তার

এবার গাজাবাসীর নতুন হুমকি ঘূর্ণিঝড় বায়রন, ঝুঁকিতে সাড়ে ৮ লাখ মানুষ

ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের শর্তে গাজায় এক দশকের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব হামাসের