যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী সচিব ড্যান ড্রিসকল আবুধাবিতে রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর একটি সম্ভাব্য পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠক করছেন। তবে আলোচনার প্রস্তাবটি প্রকাশ্যে আসার পরই ইউক্রেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে—তাদের কিছু অনড় শর্ত বা ‘রেড লাইন’ রয়েছে, যা কোনোভাবেই অতিক্রম করা যাবে না।
মার্কিন পক্ষের খসড়া শান্তি প্রস্তাবে বলা হয়েছে—যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে ইউক্রেনকে দনবাসের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অঞ্চল রাশিয়ার হাতে তুলে দিতে হবে। তাদের সেনাবাহিনীর আকারও ছোট করতে হবে এবং ন্যাটোতে যোগ না দেওয়ার অঙ্গীকার করতে হবে। ট্রাম্পের প্রস্তাবিত এই শর্তগুলো অবশ্য রাশিয়ার দাবির সঙ্গে অনেকাংশেই মিলে যায়।
তবে দনবাস অঞ্চলকে ইউক্রেনের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। তাই এই অঞ্চল ছাড় না দেওয়ার বিষয়ে অনড় অবস্থানে রয়েছে কিয়েভ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি অতীতেও এমন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন, যেখানে দনবাসের অঞ্চল ছাড়ার বিনিময়ে খেরসন ও জাপোরিজঝিয়ার কিছু দখলকৃত অংশ ফেরত নিতে বলা হয়েছিল।
এদিকে, গত রোববার (২৩ নভেম্বর) ইউরোপীয় ইউনিয়নও শান্তি-আলোচনায় তিনটি ‘রেড লাইন’-এর মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েনের ভাষ্যমতে সেই রেড লাইনগুলো এমন—ইউক্রেনের সীমানা শক্তি প্রয়োগ করে পরিবর্তন করা যাবে না। ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতা সীমিত করার কোনো শর্ত গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এতে দেশটি ভবিষ্যৎ হামলার ঝুঁকিতে পড়বে এবং ইউরোপের নিরাপত্তাও হুমকিতে পড়বে। শান্তি-প্রক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে এবং ইউক্রেনকে নিজের ভবিষ্যৎ—বিশেষ করে তার ইউরোপমুখী পথ স্বাধীনভাবে বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দিতে হবে।
ফন ডার লিয়েন আরও বলেন, ইউক্রেন ইতিমধ্যে ইউরোপীয় ভবিষ্যৎকেই বেছে নিয়েছে এবং সেটি শক্তিশালী হবে দেশটির পুনর্গঠন ও ইউরোপীয় বাজার ও প্রতিরক্ষা শিল্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযুক্তির মাধ্যমে।
যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং রাশিয়ার ত্রিমুখী আলোচনার মধ্যে এই নতুন অবস্থান আন্তর্জাতিক পরিসরে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনাকে আরও জটিল করে তুলেছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।