ইউক্রেন দাবি করেছে, মাত্র কয়েক শ ডলারের ড্রোন ব্যবহার করে তারা রাশিয়ার ভেতরে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু উড়িয়ে দিয়েছে। ইউক্রেনের খারকিভ সীমান্ত থেকে কাছাকাছি এই সেতুগুলো রুশ বাহিনী সৈন্য ও সরঞ্জাম সরবরাহের কাজে ব্যবহার করছিল।
ইউক্রেনীয় সেনারা জানিয়েছে, রুশ সেনারা ওই সেতুগুলোর নিচে প্রচুর মাইন ও গোলাবারুদ মজুত করেছিল। হয়তো তাদের ভাবনায় ছিল, কোনোভাবে ইউক্রেনের বাহিনী রাশিয়ায় ঢুকে পড়লে এই সেতুগুলো উড়িয়ে অগ্রযাত্রা ঠেকানো হবে। কিন্তু এই মজুত শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনেরই কাজে এসেছে।
শুক্রবার সিএনএন জানিয়েছে, ওই সেতু দুটির আশপাশে অস্বাভাবিক নড়াচড়া লক্ষ করার পর বিশেষ ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালায় ইউক্রেনের ৫৮তম মোটরাইজড ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড। সাধারণ নজরদারি ড্রোন সেখানে কাজ করছিল না, তাই ফাইবার অপটিকস যুক্ত ফার্স্ট-পারসন-ভিউ ড্রোন ব্যবহার করা হয়। এতে দেখা যায়, সেতুর নিচে প্রচুর অ্যান্টি-ট্যাংক মাইন ও গোলাবারুদ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এরপর সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে আঘাত হানা হয়।
ড্রোনে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, বিস্ফোরণের আগে সেতুর নিচে কাপড়ে ঢাকা অবস্থায় মাইন রাখা ছিল। ড্রোন সেগুলোয় আঘাত করলে প্রবল বিস্ফোরণ ঘটে এবং সেতুটি ধ্বংস হয়।
সিএনএন ঘটনাস্থলটির ভৌগোলিক অবস্থানও নিশ্চিত করেছে। এটি রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় বেলগোরোদ এলাকায় এবং ইউক্রেন সীমান্তের কাছেই। একইভাবে দ্বিতীয় সেতুতেও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
ইউক্রেনীয় সেনাদের ভাষায়, ‘আমরা সুযোগ দেখেছি, আর কাজে লাগিয়েছি।’
এই ধরনের সাফল্য যুদ্ধের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে কিয়েভের জন্য বিরল ইতিবাচক খবর। বর্তমানে ফ্রন্টলাইনে ইউক্রেন কঠিন চাপে রয়েছে। রুশ বাহিনী ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধবিরতি আলোচনায় সময়ক্ষেপণ করছেন। আর রাশিয়া প্রায় প্রতিদিন ইউক্রেনের শহরগুলোয় বিমান হামলা চালিয়ে সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করছে।
সেতু ধ্বংসের বিষয়ে রাশিয়া এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সামরিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই হামলা ইউক্রেনীয় ড্রোন ব্যবহারের দক্ষতার বড় উদাহরণ।
অবিশ্বাস্যভাবে কম খরচে এই অভিযানের সাফল্য এসেছে। প্রতিটি ড্রোনের দাম ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার হৃভনিয়া, ডলারে যা প্রায় ৬০০ থেকে ৭২৫।
এর আগে গত জুনেও ইউক্রেন একই ধরনের ছোট ড্রোন ব্যবহার করে রাশিয়ার একাধিক সামরিক বিমান ধ্বংস করেছিল। সব মিলিয়ে এই হামলা প্রমাণ করেছে, কম খরচের প্রযুক্তিই কখনো কখনো যুদ্ধক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।