হোম > বিশ্ব > ইউরোপ

রাশিয়া থেকে পালিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলেন তরুণী—কে হত্যা করল তাঁকে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

ছবি: বিবিসি

নিয়ন্ত্রণ আর দমনের ভেতরে বন্দী ছিল রাশিয়ার চেচনিয়া প্রজাতন্ত্রের ২৩ বছর বয়সী তরুণী আইশাত বাইমুরাদোভার জীবন। পারিবারিক নিয়ন্ত্রণ, জোর করে বিয়ে, ঘর থেকে বের হতে নিষেধ—এসব থেকে মুক্তির আশায় চলতি বছরের শুরুর দিকে নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে তিনি আর্মেনিয়ায় চলে যান। সেখানে তিনি চুল ছোট করেন, হিজাব খুলে ফেলেন এবং ভ্রু প্লাক করে নিজের পছন্দমতো ছবি পোস্ট করেন সামাজিক মাধ্যমে। নতুন বন্ধুদের বলেছিলেন—এই প্রথম তিনি মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে পারছেন।

রোববার (২৩ নভেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, আইশাত বাইমুরাদোভার সেই স্বপ্ন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। গত অক্টোবরে আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভানে ভাড়া করা ফ্ল্যাট থেকে আইশাতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, এটি স্পষ্টত হত্যাকাণ্ড।

সিসিটিভিতে দেখা যায়—দুজন ব্যক্তি ওই ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে এক তরুণীও ছিলেন, কয়েক সপ্তাহ আগেই যার সঙ্গে অনলাইনে পরিচিত হয়েছিলেন আইশাত। সন্দেহভাজন ওই দুই ব্যক্তি পরে রাশিয়া ফিরে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চেচনিয়া দীর্ঘদিন ধরেই মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, নির্যাতন এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের হত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত। অঞ্চলটির শক্তিশালী নেতা রমজান কাদিরভের প্রতি আনুগত্য আইন-কানুনের ঊর্ধ্বে চলে গেছে—এমন অভিযোগ বহুবার উঠেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে। বিদেশের মাটিতে চেচেন নেতার সমালোচকদের হত্যার ঘটনাও এর আগে ঘটেছে। তবে আইশাতই প্রথম তরুণী, যিনি চেচনিয়া থেকে পালিয়ে আসার পর এমন সন্দেহজনক হত্যার শিকার হলেন।

মৃত্যুর আগে আইশাত জানিয়েছিলেন, পরিবার তাঁকে নজরদারিতে রাখত, ফোন ব্যবহার নিষেধ ছিল, এমনকি জোর করে তাঁকে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এসকে-এসওএস নামে একটি সহায়তাকারী সংস্থার মাধ্যমে তিনি আর্মেনিয়ায় পৌঁছেছিলেন। শুরুতে আর্মেনিয়ার ছোট্ট একটি শহরে কাজ শুরু করলেও পরে তিনি আরও স্বাধীনতার খোঁজে ইয়েরেভানে চলে আসেন। পালিয়ে আসা অনেক নারী যেখানে মুখ লুকিয়ে বাঁচেন, আইশাত সেখানে প্রকাশ্যে নিজের মতো করে বাঁচতে চেয়েছিলেন।

এসকে-এসওএস সংস্থাটি জানিয়েছে, আইশাতের পরিবার তাঁকে ফিরে যেতে চাপ দিলেও শেষ পর্যন্ত তাঁরা তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। অপরদিকে পরিবারের এক সদস্য স্থানীয় গণমাধ্যমে দাবি করেছেন—আইশাতের মৃত্যুর সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পর্ক নেই।

মৃত্যুর রাতে আইশাতের ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যাওয়া নারীটি রাশিয়ার দাগেস্তান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়। এ ছাড়া ফ্ল্যাট থেকে বের হওয়া অন্য ব্যক্তিটি চেচেন বংশোদ্ভূত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি চেচনিয়ার নেতা রমজান কাদিরভের ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীর আত্মীয়।

চেচেন কর্তৃপক্ষ অবশ্য আইশাতকে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলছে, এসব তথ্য সন্ত্রাসী প্রচারের অংশ। তবে আর্মেনিয়া এখনো দুই সন্দেহভাজনকে নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

এই ঘটনায় ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে রাশিয়া থেকে পালিয়ে আসা অন্যান্য চেচেন নারীদের মধ্যে। অনেকেই বলছেন—নাম-পরিচয় গোপন করে, ভাষা না বলে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অদৃশ্য থেকেও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নেই। পালিয়ে আসা এক নারী বলেন—‘পালানো যায়, কিন্তু মুক্ত হওয়া যায় না।’

ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

এক বছরে ইউক্রেনের ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা দখলের দাবি রাশিয়ার

রাশিয়ার দখলে থাকা ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্রিপ্টোমাইনিংয়ে কাজে লাগাতে চান ট্রাম্প: পুতিন

ক্রিসমাসের প্রার্থনায় পুতিনের মৃত্যু চাইলেন জেলেনস্কি

মস্কোতে বিস্ফোরণ, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত তিন

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত জেলেনস্কির

পুতিনের সঙ্গে সিরিয়ার মন্ত্রীদের বৈঠক, আলোচনায় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা

ইউক্রেনের আরও এক শহর রাশিয়ার দখলে, মস্কোয় ড্রোন হামলা

ফিলিস্তিনপন্থী প্ল্যাকার্ড হাতে এবার লন্ডনে গ্রেপ্তার গ্রেটা থুনবার্গ

রেড স্কয়ারে কেন গায়ে আগুন দিলেন রুশ প্রতিরক্ষা কারখানার মালিক