ফিলিপাইনে তাপমাত্রা বাড়ায় বড় একটি বাঁধের পানি অনেকটাই শুকিয়ে গিয়ে জেগে উঠেছে প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো এক শহরের ধ্বংসাবশেষ। ১৯৭০ সালে সেখানে বাঁধ তৈরি করার ফলে পান্তাবাঙ্গন নামের শহরটি পানির নিচে তলিয়ে যায়। কিন্তু শুষ্ক আবহাওয়ায় বাঁধের পানি শুকিয়ে গেলে শহরটি দৃশ্যমান হয়—যা এক বিরল ঘটনা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
ফিলিপাইনের অর্ধেক অংশই এখন খরার সম্মুখীন। এল নিনোর প্রভাবে সেখানে গরমের তীব্রতা বেড়েছে। এতে জলাধারের পানিও শুকিয়ে যাচ্ছে। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। কিছু জায়গায় তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে (১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) পৌঁছেছে।
দেশটির বাঁধ পরিচালনাকারী রাষ্ট্রীয় সংস্থার প্রকৌশলী মারলন প্যালাডিন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, বাঁধটি নির্মাণের পর থেকে এবারই সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে শহরটি দৃশ্যমান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, পান্তাবাঙ্গন এবং অন্যান্য এলাকাসহ আমাদের বাঁধের পানির স্তর কমে যাচ্ছে।’
ফিলিপাইনের সরকারি হিসেব অনুযায়ী, সত্তরের দশকে নির্মিত জলাধারটির পানির স্বাভাবিক উচ্চতা ২২১ মিটার। তবে এখন পানির স্তর প্রায় ৫০ মিটার নেমে গেছে।
তীব্র গরমে ব্যাহত হচ্ছে দেশটির লাখ লাখ মানুষের দৈনন্দিন জীবন। কয়েক দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অফিসের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্র পরিচালিত আবহাওয়া ব্যুরো পাগাসার আবহাওয়াবিদ বেনিসন এস্তারেজা বিবিসি নিউজকে বলেছেন, সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘ফিলিপাইনে জলবায়ু পরিবর্তনের সাধারণ প্রভাব হলো উষ্ণ তাপমাত্রা। আমরা যে তাপ অনুভব করছি, তা আগামী দিনে ক্রমাগত হারে বাড়তে পারে।’
ফিলিপাইনে এখন উষ্ণ এবং শুষ্ক ঋতুর মাঝামাঝি চলছে। এল নিনো অর্থাৎ, প্রশান্ত মহাসাগরের ভূপৃষ্ঠের পানির উষ্ণতা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটির তাপমাত্রা এখন অসহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। দেশটির সমগ্র পূর্ব উপকূল প্রশান্ত মহাসাগরের মুখোমুখি অবস্থিত।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অন্যতম। আর্দ্র মৌসুমে দেশটিতে দানবীয় ঝড় হওয়ার রেকর্ড রয়েছে। এর আগে, ২০১৩ সালে হওয়া সুপার টাইফুন হাইয়ান ইতিহাসের অন্যতম শক্তিশালী ঝড়।