হোম > বিশ্ব > এশিয়া

আগামী পাঁচ বছর ১০% প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে চায় ভিয়েতনাম, যোগাযোগসহ যেসব খাতে জোর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

ভিয়েতনাম সরকার আগামী পাঁচ বছর টানা ১০ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনামের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি আগামী পাঁচ বছরে প্রতিবছর অন্তত ১০ শতাংশ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে আরোপ করা ২০ শতাংশ শুল্কসহ একাধিক ‘গুরুতর’ চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও তারা এই উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য স্থির করেছে। আর এই লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে দেশটি প্রাধান্য দিচ্ছে যোগাযোগ অবকাঠামো খাতকে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এই লক্ষ্যমাত্রার বিষয়টি ভিয়েতনাম কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিভি) প্রস্তুত করা একটি খসড়া নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে। আসন্ন পার্টি কংগ্রেসের জন্য তৈরি করা ওই নথি গত বুধবার প্রকাশিত হয়।

প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অনুষ্ঠিত এই কংগ্রেসেই দেশটির পরবর্তী মেয়াদের নীতি নির্ধারণ করা হয়। পাশাপাশি সরকার ও দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে নতুন নেতৃত্বও নির্বাচিত হয়। আগামী বছরের শুরুর দিকে কংগ্রেসটি অনুষ্ঠিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও সঠিক তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি।

রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ভিয়েতনামের গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। দেশটির সরকার আশা করছে, চলতি বছরে প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের বেশি হবে। তবে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস কিছুটা কম। তাদের সর্বশেষ ‘ইস্ট এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক ইকোনমিক আউটলুক’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরে ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি হবে প্রায় ৬.৬ শতাংশ।

তবু আগামী ২০২৫ ও ২০২৬ সালে অঞ্চলের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে ভিয়েতনামই সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, উৎপাদন খাতে পুনরুত্থান, ভোক্তা ব্যয় বৃদ্ধি, কার্যকর মুদ্রানীতি, নিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতি ও কোভিড-পরবর্তী সহায়তা কর্মসূচির কারণে দেশটি ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে।

সিপিভির ওই নথিতে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৮ হাজার ৫০০ ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যও নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২৪ সালে ভিয়েতনামের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ৪ হাজার ৭০০ ডলার এবং চলতি বছরের শেষে তা ৫ হাজার ডলারের বেশি হবে বলে আশা করছে হ্যানয়। এটি ২০২১–২০২৫ মেয়াদের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।

বার্ষিক ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য দেশটির জন্য এক ধরনের আত্মবিশ্বাসের ইঙ্গিত বহন করে। গত দুই দশকে ধারাবাহিকভাবে শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও সাম্প্রতিক নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এমন উচ্চ লক্ষ্য দেশটির আত্মবিশ্বাসকে প্রতিফলিত করে।

নথিতে বলা হয়েছে, এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে আগস্টে কার্যকর হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ২০ শতাংশ শুল্ক, পূর্বাভাসের চেয়ে দ্রুত জনসংখ্যার বার্ধক্য, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি, আর দুর্নীতি—যা মোকাবিলায় পার্টি ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

রয়টার্স উদ্ধৃত নথিতে বলা হয়েছে, ‘আগামী পাঁচ বছরে আমাদের দেশ নানা রকম কঠিন ও জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে। এর মধ্যে কিছু চ্যালেঞ্জ আগের সময়ের চেয়ে আরও গুরুতর হতে পারে।’ তবুও সিপিভি যে কেবল প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাই নয়, বরং তা আরও বাড়ানোর লক্ষ্য স্থির করেছে, সেটি ভিয়েতনামের অর্থনীতির ভিত ও সম্ভাবনার প্রতি তাদের আস্থারই প্রতিফলন। অবকাঠামো, উচ্চপ্রযুক্তি শিল্প এবং অভ্যন্তরীণ ভোগের বাজারে দেশটির এখনো বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে এবং বাণিজ্য থেকে সম্ভাব্য রাজস্ব ঘাটতি পুষিয়ে নিতে সিপিভি আগামী পাঁচ বছরে বাজেট ঘাটতি বাড়িয়ে মোট জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে, যা ২০২১–২০২৫ মেয়াদে ছিল ৩.১—৩. ২ শতাংশের মধ্যে। এই অর্থ ঋণনির্ভর অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে।

পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে রয়েছে ৫ হাজার কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, চীনা সীমান্তবর্তী লাও কাই পর্যন্ত হ্যানয় ও হাই ফংকে যুক্ত করা ৮০০ কোটি ডলারের রেলপথ প্রকল্প এবং হ্যানয় ও হো চি মিন সিটিতে মেট্রোরেল নির্মাণ। বর্তমানে ভিয়েতনামের সরকারি ঋণের পরিমাণ জিডিপির মাত্র ৩৫ শতাংশের নিচে, যা দেশটিকে বড় অঙ্কের বিনিয়োগের সুযোগ দিচ্ছে।

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে নতুন করে দাঁড় করানোর প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। তবে এসব প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নেওয়া যোগাযোগ খাতে সবচেয়ে বড় প্রকল্প ছিল পদ্মাসেতু। বাংলাদেশের একটি দৈনিকে ২০২২ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, পদ্মা সেতু নিয়ে যে প্রাথমিক সমীক্ষা করা হয়েছিল, তাতে প্রাক্কলন করা হয়েছিল যে অর্থনীতিতে পদ্মা সেতুর ইতিবাচক প্রভাবে দেশের জিডিপিতে ১ দশমিক ২ শতাংশ বাড়তি সংযোজন হবে।

পদ্মাসেতুতে রেল সংযোগের কারণে জিডিপিতে যুক্ত হবে আরও ১ দশমিক শূন্য শতাংশ। নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত হওয়ার কারণে যানবাহন পারাপার বর্তমানের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যাবে। কর্মসংস্থান হবে সাড়ে সাত লাখ মানুষের। সে অর্থে ৪৩০ বিলিয়ন ডলারের জিডিপিতে ১০ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত যোগ হবে, যা গুণক আকারে বাড়বে। কিন্তু পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের এক বছর পেরিয়ে গেলেও তা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে খুব বেশি অবদান রেখেছে এমন কোনো প্রতিবেদন এখনো প্রকাশিত হয়নি।

এ ছাড়া দেশটি হো চি মিন সিটি ও দা নাংয়ে আন্তর্জাতিক আর্থিক কেন্দ্র গড়ে তুলবে। পাশাপাশি দা নাং ও হাই ফংসহ প্রধান শহরগুলোতে ‘নতুন প্রজন্মের মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল’ স্থাপন করা হবে। এতে বিনিয়োগ আকর্ষণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর লক্ষ্য রয়েছে বলে বুধবার জাতীয় সংসদের এক কমিটির বৈঠকে জানিয়েছেন উপ-অর্থমন্ত্রী নুয়েন ডুক চি।

এশিয়ার চার দেশে বন্যা-ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা ১১০০ ছাড়াল

এশিয়াজুড়ে বন্যা–ভূমিধসের তাণ্ডব, মৃতের সংখ্যা ৯০০ ছাড়াল

প্রথমবারের মতো কাঠমান্ডুতে মৎস্য মেলার আয়োজন করল বাংলাদেশ

বন্যায় বিপর্যস্ত দক্ষিণ এশিয়া, চার দেশে ৬০০ জনের প্রাণহানি

ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় নিহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়াল

বিদেশে থাকা নাগরিকেরা ফিরতে চাইলে স্বাগত জানানো হবে: মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান

ঘূর্ণিঝড়ে শ্রীলঙ্কায় মৃত বেড়ে ১৫৩, আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রার্থনা

থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা, ভ্রমণের আগে পর্যটকদের যা জানা দরকার

থাইল্যান্ডে বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ১৬২, ব্যর্থতা স্বীকার করলেন প্রধানমন্ত্রী

বিয়ে করে ইতিহাস গড়লেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ