হোম > বিশ্ব > এশিয়া

বেঁচে ফিরে ভয়ংকর অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিলেন এভারেস্টের অভিযাত্রীরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

ছবি: সংগৃহীত

প্রতি বছরই চীনের গোল্ডেন উইক ছুটির এই সময়টিতে পর্যটকের ঢল নামে এভারেস্ট পর্বতের তিব্বত অংশে। কিন্তু এবার হঠাৎ অপ্রত্যাশিত তুষারঝড়ে সেখানে বিপর্যয় নেমে এসেছে। প্রবল তুষারপাতের কারণে অন্তত ২০০ জন পর্যটক এখনো পাহাড়ে আটকে আছেন। তবে ইতিমধ্যেই প্রায় ৩৫০ জনকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উদ্ধার হওয়া অভিযাত্রীরা বিভিন্ন মাধ্যমে নিজেদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিচ্ছেন।

সোমবার (৬ অক্টোবর) চীনা কর্তৃপক্ষের বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানায়, এভারেস্টের পূর্ব ঢালে অবস্থিত ‘এভারেস্ট সিনিক এরিয়ায়’ এই দুর্যোগে শত শত মানুষ আটকা পড়েছিলেন। চীনের আট দিনের দীর্ঘ ছুটির সময়টিতে হাজার হাজার পর্যটক তিব্বতের এই এলাকায় ভ্রমণে গিয়েছিলেন। কিন্তু গত ৩ ও ৪ অক্টোবর রাতে অস্বাভাবিক ভারী তুষারপাতের ফলে ৪ হাজার ৯০০ মিটার বা প্রায় ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত ক্যাম্প সাইটগুলোতে শত শত মানুষ আটকা পড়েন।

অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে চীনা ট্রেকার ডং শুচাং সামাজিক মাধ্যম ওয়েইবো-তে লিখেছেন—‘আমার জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ আবহাওয়া ছিল এটি। এভারেস্টের পূর্ব ঢালে এক ধরনের হিংস্র তুষারঝড় বইছিল।’ অপর এক ট্রেকার বলেছেন, ‘রাতে ঘুম ভেঙে দেখি, তুষার আমাদের তাঁবুর প্রায় চূড়া পর্যন্ত ঢেকে দিয়েছে। প্রথমবার মনে হলো—হয়তো জীবন্তই কবর হব।’

আরেক অভিযাত্রী বলেন, ‘শনিবার রাতে (৪ অক্টোবর) আমরা ঘুমানোর সাহস পাইনি। প্রতি দেড় ঘণ্টা পরপর তাঁবুর চারপাশের বরফ সরাতে হচ্ছিল। অবশেষে রোববার নেমে আসার সিদ্ধান্ত নিই।’ তিনি আরও বলেন, ‘পথে আমাদের গাইডের বাবার সঙ্গেও দেখা হয়—তিনি ছেলেকে খুঁজতে পাহাড়ে উঠেছিলেন। নিচের গ্রামেও ভারী তুষারপাত ছিল, আর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় স্থানীয়রা দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন।’

তিব্বতের দিকটি নেপালের চেয়ে তুলনামূলক সহজে আরোহণযোগ্য হওয়ায় এখানে ভ্রমণকারীর সংখ্যা বেশি থাকে, যদিও তাঁরা চূড়ায় ওঠেন না। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া চলমান দুর্যোগের ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে—বরফে ঢেকে গেছে তাঁবুগুলো, আর ট্রেকারেরা কোমর-সমান বরফের মধ্য দিয়ে অনেক কষ্টে নিচে নামছেন।

এক অভিযাত্রী বলেন, ‘বরফ এত গভীর ছিল যে হাঁটতেই কষ্ট হচ্ছিল। অনেকেই পড়ে যাচ্ছিলেন, আহত হচ্ছিলেন। তবু সবাই শেষ পর্যন্ত অনেকেই নিরাপদে নেমে আসতে পেরেছেন।’

পর্যটকদের বাঁচাতে ঘোড়া ও মালবাহী অন্যান্য পশুদের নিয়ে এগিয়ে আসেন গ্রামবাসীরা। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

রোববার বিকেল পর্যন্ত প্রায় ৩৫০ জন নিরাপদে চুদাং নামের একটি ছোট শহরে পৌঁছান। তবে ২০০ জনের বেশি এখনো পাহাড়ে আটকা রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানিয়েছে চীনা গণমাধ্যম। উদ্ধারকর্মীরা এখন বরফ সরিয়ে পথ পরিষ্কার করতে কাজ করছেন।

গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ওই অঞ্চলটি চীনা সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় স্বাধীনভাবে সংবাদ সংগ্রহের সুযোগ সীমিত। স্থানীয় ব্যবসায়িক ফোন যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে। ট্রেকারদের ভাষ্যমতে, দুর্যোগের কারণ চুদাং এখন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন।

অক্টোবর সাধারণত এই অঞ্চল ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে ভালো মৌসুম। কিন্তু এবারের আবহাওয়া ‘একেবারেই অস্বাভাবিক’ বলে জানান ট্রেকার চেন গেশুয়াং। তিনি বলেন, ‘আমাদের গাইড বললেন, জীবনে কখনোই তিনি অক্টোবর মাসে এমন আবহাওয়া দেখেননি।’

এ অবস্থায় গত শনিবার থেকেই এভারেস্ট সিনিক এরিয়ায় পর্যটন কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। এদিকে, প্রতিবেশী নেপালেও ভারী বৃষ্টিপাতে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৪৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

৮০ হাজার মানুষের সামনে শিশুকে দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করাল তালেবান, জাতিসংঘের নিন্দা

মিয়ানমারে আফিম চাষ বেড়েছে বহুগুণ, সংঘাত ও দারিদ্র্যে চোরাচালানে জড়াচ্ছেন কৃষকেরা

এশিয়ার চার দেশে বন্যা-ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা ১১০০ ছাড়াল

এশিয়াজুড়ে বন্যা–ভূমিধসের তাণ্ডব, মৃতের সংখ্যা ৯০০ ছাড়াল

প্রথমবারের মতো কাঠমান্ডুতে মৎস্য মেলার আয়োজন করল বাংলাদেশ

বন্যায় বিপর্যস্ত দক্ষিণ এশিয়া, চার দেশে ৬০০ জনের প্রাণহানি

ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় নিহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়াল

বিদেশে থাকা নাগরিকেরা ফিরতে চাইলে স্বাগত জানানো হবে: মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান

ঘূর্ণিঝড়ে শ্রীলঙ্কায় মৃত বেড়ে ১৫৩, আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রার্থনা

থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা, ভ্রমণের আগে পর্যটকদের যা জানা দরকার