ঢাকা: ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগামী ১৮ জুন। ২০১৭ সালের সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চেয়ে এবারের নির্বাচন অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিতভাবে হচ্ছে। প্রায় ৬০০ প্রার্থী থেকে মাত্র সাতজনকে মনোনয়ন দিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। তাই এ নির্বাচনে জনরায়ের প্রতিফলন ঘটছে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।
সাত প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজন রক্ষণশীল, আর বাকি দুজন মধ্যমপন্থী। রক্ষণশীলদের মধ্যে ইবরাহিম রাইসি সবচেয়ে প্রভাবশালী। দেশটির বর্তমান প্রধান বিচারক রাইসি সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিরও পছন্দের লোক। খামেনিই তাকে ২০১৯ সালে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন।
এই রাইসি সেই চার বিচারকের একজন যে ১৯৮৮ সালে গণফাঁসির রায় দিয়েছিলেন। ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ওই বছর দেশটিতে অনুষ্ঠিত সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ দমন করতে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল। তা ছাড়া ২০০৯ সালের গণবিক্ষোভ ঠেকাতে বড় ভূমিকা ছিল তার।
দীর্ঘ দিন ধরে পশ্চিমাদের কড়া নিষেধাজ্ঞায় থাকা ইসলামিক রিপাবলিকটির সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ খারাপ। নিত্যপণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়া, চাকরি নেই, মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই ইত্যাদি। এ অবস্থায় আসন্ন সাজানো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ মানুষ, উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্লেষক ও পশ্চিমা দেশগুলো।
এদিকে নির্বাচনী ইশতেহারে অর্থনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি রাইসি। তবে ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে করা পারমাণবিক চুক্তিতে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এটার মধ্য দিয়ে অবরোধ কিছুটা শিথিল হতে পারে। তা ছাড়া চীন ও রাশিয়ার সঙ্গেও তিনি সম্পর্ক জোরদার করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
দেশটির গত কয়েকটি নির্বাচনে সংস্কারবাদী অংশ নিতে পারলেও এবার নির্বিচারে তাদের নির্বিচারে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাই বঞ্চিতরা নির্বাচন বয়কটের ডাক দিয়েছেন। কিন্তু তা না করে, এবার যে দুজন মধ্যমপন্থী প্রার্থী রয়েছে তাদের পেছনে পরিবর্তনকামীদের এককাট্টা হতে আহ্বান করেছেন মেহেদি কাররোবী।
এ রাজনীতিবিদ ২০০৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। নির্বাচনী ফলকে চ্যালেঞ্জ করায় তাকে গৃহবন্দী করা হয়েছিল। আসন্ন নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন নজিরবিহীন হলেও এতে সংস্কারপন্থীদের এক জোট হওয়ার বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।