গণবিক্ষোভের মুখে সপরিবার নৌঘাঁটিতে পালালেন শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিঙ্কোমালি নৌঘাঁটিতে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে।
এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত একটি সূত্র এনডিটিভিকে জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারকে হেলিকপ্টারে করে নৌঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হেলিকপ্টারে করে সেখানে যাওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে মাহিন্দা রাজাপক্ষের সপরিবার পালিয়ে যাওয়ার খবর প্রকাশ হওয়ার পরপরই রাজধানী কলম্বো থেকে ২৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ওই নৌঘাঁটির বাইরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটকে কেন্দ্র করে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের একজন এমপিও রয়েছেন। বিক্ষোভের মধ্যে পড়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন জানা গেছে।
বিক্ষোভকারীদের দমাতে দেশটিতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। মাহিন্দা রাজপক্ষের পদত্যাগের পর গতকাল সোমবারই শ্রীলঙ্কায় প্রায় দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাজাপক্ষের সরকারি বাসভবনের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করার পর সেনাসদস্যরা তাঁকে সরিয়ে নেন।
শ্রীলঙ্কার একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, রাজাপক্ষের সরকারি বাসভবনের কম্পাউন্ডে অন্তত ১০টি পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করা হয়।
১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার পর এখন সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। যদিও দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপক্ষে এখনো পদত্যাগ করেননি।
শ্রীলঙ্কার প্রধান বিরোধী দল সমগি জনা বালাওয়েগয়া (এসজেবি) প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তী সরকারের অংশ হওয়ার প্রস্তাবকে ফিরিয়ে দিয়েছে। দলটি শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করেছে।
মাহিন্দা রাজপক্ষের সমর্থকেরা গতকাল লাঠিসোঁটা নিয়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালালে সহিংসতা শুরু হয়।