নেপালে জেন-জি বিক্ষোভে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ জনে। আজ শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) নেপাল পুলিশের মুখপাত্র ডিআইজি বিনোদ ঘিমিরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিনোদ ঘিমিরে জানান, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২১ জন বিক্ষোভকারী, তিনজন পুলিশ কর্মী, নয়জন বন্দী, ১৮ জন অন্যান্য ও একজন ভারতীয় নারী রয়েছেন।
এর আগে স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা মন্ত্রণালয়ের সচিব বিকাশ দেবকোটা জানান, বর্তমানে সারা দেশের ৫২টি বিভিন্ন হাসপাতালে ২৮৪ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি আরও জানান, ১ হাজার ৭৭১ জনেরও বেশি আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
গত সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীসহ পোখরা, বুটওয়াল, ভৈরবাওয়া, ভারতপুর, ইতাহারি, দমকসহ বিভিন্ন শহরের তরুণেরা দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেন।
কাঠমান্ডুর নিউ বানেশ্বর এলাকা থেকে বিক্ষোভ ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। একপর্যায়ে তরুণ বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন। পুলিশ তাঁদের ঠেকাতে বল প্রয়োগ করে। পরে স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ৩টার পর কারফিউ জারি করে কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, ওই সময় শুধু কাঠমান্ডুর বিভিন্ন হাসপাতালে কমপক্ষে ১৭ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে জাতীয় ট্রমা সেন্টারে আটজন, এভারেস্ট হাসপাতালে তিনজন, সিভিল হাসপাতালে তিনজন, কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজে দুজন এবং ত্রিভুবন টিচিং হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
সুনসারির ইতাহারিতে বিক্ষোভের সময় গুলিতে আহত দুজন মারা গেলে দেশব্যাপী নিহত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯-এ। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কমপক্ষে ৩৪৭ জন আহত বিক্ষোভকারী চিকিৎসাধীন।
একাধিক হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, বহু রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন। এভারেস্ট হাসপাতালের অনিল অধিকারী বলেন, চারজনের অবস্থা গুরুতর আর ট্রমা সেন্টারের চিকিৎসক দীপেন্দ্র পাণ্ডে জানান, ১০ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন। তাঁদের মাথা ও বুকে গুলির ক্ষত রয়েছে।
বানেশ্বরে বিক্ষোভকারীরা ফেডারেল পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে জমায়েত হন। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে পুলিশ। একই ধরনের বিক্ষোভ দেশের বড় শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এক বিবৃতি দিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের উভয় পক্ষকে সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। কমিশন বলেছে, সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইন শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়। তারা ভাঙচুর ও অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে।