হোম > বিশ্ব > যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা

নিজ নামে ২ ‘সর্ববৃহৎ ব্যাটলশিপ’ নির্মাণ করছেন ট্রাম্প, সব মিলিয়ে ২৫টির পরিকল্পনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

মার–এ–লাগোর সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও অন্যান্যরা। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, মার্কিন নৌবাহিনীর জন্য তিনি এক নতুন শ্রেণির যুদ্ধজাহাজ বা ‘ব্যাটলশিপ’ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। অতি শক্তিশালী অস্ত্রে সজ্জিত এই জাহাজগুলোর নাম রাখা হবে তাঁর নিজের নামেই। মূলত মার্কিন নৌবাহিনীকে ঢেলে সাজানোর যে উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা তিনি নিয়েছেন, তার নাম দিয়েছেন ‘গোল্ডেন ফ্লিট।’

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ক্লাস ইউএসএস ডিফায়েন্ট—নামের এই বিশেষ যুদ্ধজাহাজগুলোর নির্মাণকাজ খুব দ্রুতই শুরু হতে যাচ্ছে। ট্রাম্প বুক ফুলিয়ে দাবি করেছেন, আগামী আড়াই বছরের মধ্যে এই রণতরিগুলো সাগরে দাপিয়ে বেড়ানোর জন্য পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই ঘোষণার পেছনে রয়েছে মার্কিন নৌবাহিনীকে এক বিশাল আকৃতি দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা। সেখানে যেমন থাকবে মনুষ্যচালিত বিশাল সব যুদ্ধজাহাজ, তেমনি থাকবে চালকহীন ছোট ছোট নৌযানও। এই বহরে যুক্ত হবে বড় আকারের ক্ষেপণাস্ত্রবাহী রণতরি এবং ছোট গতির নৌকা।

মার্কিন সরকারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা বেশ কিছুদিন ধরে একটা সতর্কবার্তা দিয়ে আসছেন। তাঁদের দুশ্চিন্তা চীন। জাহাজ নির্মাণের সক্ষমতা এবং মোট উৎপাদনের হিসাবে আমেরিকা এখন চীনের চেয়ে বেশখানিকটা পিছিয়ে পড়েছে। ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো গলফ ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প যখন এই নতুন পরিকল্পনার কথা বলছিলেন, তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং নৌবাহিনী সচিব জন ফেলান। সোমবারের সেই সভায় ট্রাম্প জানান, প্রাথমিকভাবে তিনি দুটি ব্যাটলশিপ তৈরির অনুমোদন দিয়েছেন। তবে তাঁর আসল লক্ষ্য হলো, এমন অন্তত ২৫টি জাহাজ নির্মাণ করা।

নিজের পরিকল্পনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘এই জাহাজগুলো হবে ইতিহাসের দ্রুততম এবং দীর্ঘতম। এযাবৎকালের পৃথিবীতে যত ব্যাটলশিপ তৈরি হয়েছে, তার চেয়ে অন্তত ১০০ গুণ বেশি শক্তিশালী হবে এগুলো।’ তিনি আরও জানান, এই দানবীয় জলযানগুলোতে মোতায়েন করা হবে হাইপারসনিক মিসাইল এবং এমন সব মারণাস্ত্র, যা এর আগে কেউ দেখেনি। ট্রাম্পের ভাষায় এগুলো হবে মার্কিন নৌবাহিনীর ‘ফ্ল্যাগশিপ’ বা প্রধান গর্ব।

বক্তব্যের সময় ট্রাম্পের দুই পাশে ঝোলানো ছিল বড় বড় পোস্টার, যেখানে সেই ‘ট্রাম্প ক্লাস’ জাহাজের কাল্পনিক সব ছবি আঁকা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই জাহাজগুলো দেশের মাটিতেই তৈরি হবে। যার ফলে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নৌবাহিনী সচিব জন ফেলান একটি মজার তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানান, ট্রাম্প নিজে থেকে তাঁর কাছে একটি ‘বিশাল ও সুন্দর’ ব্যাটলশিপ তৈরির আবদার করেছিলেন। সেই বহরে আরও থাকবে কয়েক ডজন সহায়ক ও পণ্যবাহী নৌযান।

১৯ ডিসেম্বর মার্কিন নৌবাহিনী আরও একগুচ্ছ নতুন নৌযানের ঘোষণা দিয়েছিল, যেগুলো তৈরি হবে কোস্ট গার্ডের লিজেন্ড-ক্লাস ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাটারের আদলে। নৌ অপারেশনপ্রধান ড্যারিল কডল এক ভিডিও বার্তায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, লোহিত সাগর থেকে শুরু করে ক্যারিবীয় অঞ্চল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের যে অপারেশন চলছে, তাতে আমাদের হাতে থাকা ছোট যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা চাহিদার তুলনায় মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। অর্থাৎ পানির নিচে বা ওপরে ছোট নৌযানের ঘাটতি এখন আর অস্বীকার করার উপায় নেই। ড্যারিল কডল মনে করেন, বড় যুদ্ধজাহাজগুলোকে বড় লড়াইয়ের জন্য বাঁচিয়ে রাখতে হলে ছোটখাটো মোকাবিলায় এই ধরনের গতির জাহাজগুলোর খুব প্রয়োজন।

তবে মুদ্রার উল্টো পিঠও আছে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ‘কনস্টেলেশন-ক্লাস ফ্রিগেট’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বারবার কাজ পিছিয়ে যাওয়া আর খরচ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ২০২৪ সালে সেটি বাতিল হয়ে যায়। দেখা গেছে, প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার খরচ করার পরও মাত্র দুটি জাহাজ পাওয়ার আশা ছিল। এদিকে সমুদ্রের দখল নিয়ে আমেরিকার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীন ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছরে সারা বিশ্বের জাহাজ নির্মাণের যত অর্ডার এসেছে, তার ৬০ শতাংশের বেশি গেছে চীনের দখলে। চীনের নৌবাহিনী এখন সংখ্যার বিচারে বিশ্বের বৃহত্তম।

জানুয়ারিতে ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প তাঁর দেশের জাহাজশিল্পকে টেনে তোলার কথা বলে আসছেন। গত মার্চে তিনি আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘একসময় আমরা কত জাহাজ বানাতাম! এখন প্রায় বানাই না বললে চলে। কিন্তু আমরা আবার খুব দ্রুত জাহাজ বানানো শুরু করব। দেখবেন, এর প্রভাব হবে বিশাল।’ সেই ধারাবাহিকতায় অক্টোবরে ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাবের সঙ্গে ট্রাম্প একটি চুক্তি করেছেন। আমেরিকা ফিনল্যান্ডের নকশা করা ১১টি আইসব্রেকার বা বরফ কাটার জাহাজ কিনবে, যার সাতটিই তৈরি হবে আমেরিকার মাটিতে ফিনিশ কারিগরি জ্ঞান ব্যবহার করে।

ট্রাম্পের এই যুদ্ধজাহাজ তৈরির ঘোষণাটি এমন এক সময়ে এল, যখন ভেনেজুয়েলার সঙ্গে উত্তেজনা তুঙ্গে থাকায় ক্যারিবীয় সাগরে মার্কিন নৌ ও বিমান শক্তি বাড়ানো হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর থেকে মাদক পাচারের সন্দেহে আমেরিকা বেশ কিছু নৌযানে আক্রমণ শুরু করেছে, যেখানে অন্তত ১০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সাংবাদিকদের সামনে ট্রাম্প দাবি করেন, এই কড়া পদক্ষেপের ফলে মাদক চোরাচালান বন্ধ হয়েছে এবং হাজার হাজার আমেরিকান নাগরিকের প্রাণ বেঁচেছে। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞ এই হামলার আইনি ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মতে, এই ধরনের সরাসরি আক্রমণ আন্তর্জাতিক যুদ্ধ আইনের পরিপন্থী হতে পারে।

ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের আলোচনা প্রকৃত ফলাফলের খুব কাছাকাছি: জেলেনস্কি

ভারতে নারী সরকারি কর্মকর্তাকে ‘রিল তারকা’ বলায় ৪ কলেজশিক্ষার্থী আটক

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

উ. কোরিয়ার এজেন্ট সন্দেহে ১৮০০-এর বেশি চাকরি আবেদন বাতিল করল আমাজন

যুক্তরাষ্ট্র-চীনও মোদিকে ভয় পায়, বাংলাদেশ নিয়ে চুপ থাকবেন না তিনি: বিজেপি নেতার হুঁশিয়ারি

গ্রিনল্যান্ড ‘আমাদের পেতেই হবে’, ‘অভিযান’ চালাতে দূত পাঠাচ্ছেন ট্রাম্প

নতুন করে শতাধিক আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে চীন: পেন্টাগন

গাজায় ৭৩ দিনে ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ডের শিকার ৪১১ ফিলিস্তিনি, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন ৮৭৫ বার

লিবিয়ার হাফতারকে যুদ্ধবিমানসহ ৪০০ কোটি ডলারের বেশি সামরিক সরঞ্জাম দিচ্ছে পাকিস্তান