পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। এর মধ্যে আজ সোমবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উভয় দেশকে ‘সর্বোচ্চ সংযমী’ এবং ‘যুদ্ধের পথ থেকে সরে আসার’ আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে’ পৌঁছেছে এবং বর্তমানে তা ‘চরম উত্তপ্ত অবস্থায়’ রয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের উদ্দেশে গুতেরেস বলেন, সাম্প্রতিক উত্তেজনার কারণে প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্ক ‘উত্তপ্ত অবস্থায় রয়েছে’। তিনি ২২ এপ্রিলের পেহেলগাম হামলার নিন্দা করেন এবং দোষীদের ‘আইনসম্মত উপায়ে’ বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এই সংকটপূর্ণ সময়ে সংঘাত যেকোনো মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। তাই যেভাবেই হোক এই সংঘাত এড়াতে হবে।’ তিনি দুটি দেশের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এখন সময় যুদ্ধের পথ থেকে সরে এসে সর্বোচ্চ সংযমী হওয়া।’
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের সমাপ্তি হলে উপমহাদেশ থেকে বিভক্ত হওয়া দুই দেশ পাকিস্তান ও ভারত একাধিক যুদ্ধে জড়িয়েছে। এসব যুদ্ধ প্রতিবেশী দুই দেশকে চরম শত্রুতে পরিণত করেছে। তবে উত্তেজনা কমাতে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ—উভয়ের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানো হয়েছে। ১৯৮৯ সাল থেকে বিদ্রোহীরা কাশ্মীরে বিদ্রোহ করছে।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ এক হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগ ছিলেন পর্যটক। ২০০০ সালের পর ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে এটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাগুলোর একটি। ভারত এ হামলার জন্য কোনো প্রমাণ ছাড়া পাকিস্তানকে দায়ী করে। তবে ইসলামাবাদ এমন অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
এ ঘটনার পর থেকে পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। পাকিস্তান সম্ভাব্য আগ্রাসনের আশঙ্কায় সীমান্তে সেনা মোতায়েন জোরদার করেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীও সেনাবাহিনীকে ‘অপারেশনাল ফ্রিডম’ দিয়েছেন। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যেকোনো ধরনের আগ্রাসনের ‘তাৎক্ষণিক জবাব দিতে তারা প্রস্তুত’। একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করছে দেশটি। গত পরশুর পর আজ পরীক্ষামূলকভাবে একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে পাকিস্তান।