হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

গাজায় বর্বরতা: আন্তর্জাতিক মিত্র হারাচ্ছে ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

গাজায় ভূখণ্ড দখল করতে পারলেও মিত্র হারাচ্ছে ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল গাজায় অবিরাম হামলা চালিয়ে যাওয়ায় ও জরুরি মানবিক সহায়তা বন্ধ করায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অনেক ঘনিষ্ঠ মিত্র প্রকাশ্যে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার পর হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষেত্রে নেতানিয়াহুর অভূতপূর্ব আন্তর্জাতিক বৈধতা ছিল। কিন্তু যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমর্থন কমতে কমতে এখন তা কূটনৈতিক সুনামিতে পরিণত হয়েছে।

মার্চ মাসে যুদ্ধবিরতি বাতিল এবং গাজায় খাদ্য, পানি ও ওষুধের সমস্ত সরবরাহ বন্ধ করার পর গত দুই মাসে নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া পশ্চিমা বিশ্বের বাকি বন্ধুদের হারিয়েছেন। এ মাসের শুরুতে জিম্মিদের মুক্ত করতে এবং যুদ্ধ শেষ করার চুক্তি গ্রহণ না করে গাজা পুনরায় দখল ও ধ্বংস করার জন্য অভিযান শুরু করলে চাপ তীব্রভাবে বাড়ে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তাঁর শীর্ষ সহযোগীরা নেতানিয়াহুকে যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং সাহায্য পাঠানোর অনুমতি দিতে ইঙ্গিত দিয়েছেন, যদিও ট্রাম্প তাঁর উদ্বেগ বেশির ভাগ সময় ব্যক্তিগত পর্যায়েই রেখেছেন। তবে অনেক নেতাই প্রকাশ্যে কথা বলেছেন।

গত ১৯ মে একটি যৌথ বিবৃতিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, ‘নেতানিয়াহু সরকার এই জঘন্য কাজগুলো চালিয়ে গেলে, আমরা তা মেনে নেব না। ইসরায়েল যদি নতুন করে সামরিক আক্রমণ বন্ধ না করে এবং মানবিক সহায়তার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেয়, তবে আমরা এর প্রতিক্রিয়ায় আরও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেব।’

এই সিদ্ধান্তের বিপরীতে নেতানিয়াহু ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এক ভিডিও বিবৃতিতে এই তিনজনকে হামাসের হয়ে কাজ করার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘তাঁরা চায়, ইসরায়েল পিছু হটুক এবং মেনে নিক যে—হামাসের গণহত্যাকারীদের সেনাবাহিনী বেঁচে থাকবে, পুনর্গঠিত হবে এবং ৭ অক্টোবরের গণহত্যা বারবার ঘটাবে কারণ হামাস সেটাই করার শপথ নিয়েছে।’

নেতানিয়াহু তাঁর ভিডিওতে বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট মাখোঁ, প্রধানমন্ত্রী কার্নি এবং প্রধানমন্ত্রী স্টারমারকে বলছি—যখন গণহত্যাকারী, ধর্ষক, শিশু হত্যাকারী এবং অপহরণকারীরা আপনাকে ধন্যবাদ জানায়, তখন আপনি ন্যায়ের ভুল দিকে। আপনি মানবতার ভুল দিকে এবং আপনি ইতিহাসের ভুল দিকে।’

তবে বাস্তবতা হলো—ইসরায়েলের বিচ্ছিন্নতা বাগাড়ম্বরকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্য গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংস হামলায় জড়িত ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

ফ্রান্স আগামী মাসে সৌদি আরবের সঙ্গে এক সম্মেলনের আয়োজন করতে চলেছে। যেখানে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে এগিয়ে নিতে চাপ দেওয়া হতে পারে এবং সেখানে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে। স্পেন গত বছর নরওয়ে এবং আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ গত সপ্তাহে ইসরায়েলকে ‘গণহত্যাকারী রাষ্ট্র’ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং ইউরো ভিশন গানের প্রতিযোগিতা থেকে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

গত মঙ্গলবার ইসরায়েলের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সাবেক মিত্র নেদারল্যান্ডস ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য ও সহযোগিতা চুক্তি পুনর্বিবেচনার জন্য ২৭ জন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে ১৭ জন একটি প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে। মাল্টার প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন তাঁর দেশ আগামী মাসে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।

নেতানিয়াহু এবং তাঁর সরকার সমালোচনার জবাবে ইউরোপীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ‘ইহুদি বিদ্বেষের’ অভিযোগ করেছেন এবং দাবি করেছেন, তারা তাদের দেশে মুসলিম সংখ্যালঘুদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করছে। তবে ইসরায়েল মার্চ মাসের পর প্রথমবারের মতো গাজায় কিছু সাহায্য পাঠানোর অনুমতি দিতেও রাজি হয়েছে।

গত মার্চে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কয়েকটি বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সা’আর নেতানিয়াহুকে সতর্ক করে বলেছিলেন যে, মানবিক সহায়তা স্থগিত করলে হামাস দুর্বল হবে না, বরং ইসরায়েলের মিত্রদের দূরে ঠেলে দেবে। অবশেষে, ইসরায়েলকে চাপের মুখে নতজানু হয়ে সাহায্য পুনরায় শুরু করতে হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, ‘ঠিক এটাই ঘটেছে। এটি এক বিশাল ভুল ছিল এবং এটি মূলত অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিবেচনার জন্য করা হয়েছিল।’

ট্রাম্প যদিও গাজা থেকে পুরো ২০ লাখ ফিলিস্তিনিকে বহিষ্কার করে একটি নতুন ‘রিভেরা’ তৈরির নিজের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছেন বলে মনে হচ্ছে, তবে নেতানিয়াহু গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো বলেছেন যে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ শেষ হবে না।

নেতানিয়াহু সরকার এটিকে ‘স্বেচ্ছামূলক অভিবাসনের’ জন্য সবুজ সংকেত হিসাবে দেখছে। এই পরিকল্পনা অনুসারে, প্রথমে গাজার জনগণকে একটি ‘মানবিক অঞ্চলে’ এবং তারপর বিদেশে গণহারে স্থানান্তর করা হবে। গাজাকে কার্যত ধ্বংস করাসহ যদি ইসরায়েল এই পরিকল্পনা অনুসরণ করে তাহলে এটি প্রায় নিশ্চিতভাবেই দেশটিতে এবং নেতানিয়াহুকে আন্তর্জাতিকভাবে আরও বিচ্ছিন্ন করবে।

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেই বড়দিনের আনন্দ খুঁজছে ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়

মস্কোতে বিস্ফোরণ, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত তিন

শানলিউরফা: নবীদের যে নগরে মিলেছে তিন ধর্মের মানুষ

৭ অক্টোবরের দায় এড়াতে ফন্দি খোঁজার দায়িত্ব দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু: সাবেক মুখপাত্র

বাংলাদেশের ভিসা স্থগিতে বিপাকে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা, সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বান

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত জেলেনস্কির

মসজিদে নববির মুয়াজ্জিন শেখ ফয়সাল নোমান আর নেই

চীনের ক্রমবর্ধমান সমরসজ্জার সামনে ‘অরক্ষিত’ যুক্তরাষ্ট্র

পাকিস্তানে ফিরতে চান ইমরান খানের দুই পুত্র, ভিসার আবেদন