মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে ভেনেজুয়েলায় সম্ভাব্য সামরিক হামলার হালনাগাদ পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন দেশের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা। গতকাল বুধবার হোয়াইট হাউসে বৈঠকে ট্রাম্পের সামনে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এসব পরিকল্পনার মধ্যে স্থলভাগে আঘাত হানার মতো বিকল্পও রাখা হয়েছে।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজের খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যুদ্ধমন্ত্রী অর্থাৎ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ, জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান ড্যান কেইনসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আগামী কয়েক দিন ভেনেজুয়েলায় সামরিক অভিযানের বিষয়ে সব ধরনের বিকল্প নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে ব্রিফ করবেন বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো।
তবে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি—বলে সিবিএস নিউজকে জানিয়েছে দুটি সূত্র। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্ররা এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক মন্তব্য করেননি। পেন্টাগনের এক মুখপাত্রও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
সূত্রগুলোর ভাষ্য, সম্ভাব্য অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সহায়তা করছে। জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না, কারণ তিনি বিদেশ সফর থেকে দেশে ফিরছিলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ সময় কানাডায় জি–৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছিলেন।
এরই মধ্যে এ সপ্তাহের শুরুতে ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন কমান্ডের আওতাভুক্ত অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। ক্যারিবিয়ান ও দক্ষিণ আমেরিকায় সামরিক কার্যক্রমের প্রধান দায়িত্ব সাউদার্ন কমান্ডের। জেরাল্ড ফোর্ডকে ওই অঞ্চলে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া একাধিক ডেস্ট্রয়ার, যুদ্ধবিমান ও বিশেষ অভিযান বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
গত দুই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী অন্তত ২১টি নৌযানে হামলা চালিয়েছে। এসব নৌযানের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পরিবহনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। এ পর্যন্ত ২০টি হামলা হয়েছে, তবে অক্টোবরের শেষ দিকে চালানো একটি অভিযানে দুটো নৌকা লক্ষ্যবস্তু ছিল। এসব হামলায় অন্তত ৮০ জন সন্দেহভাজন চোরাকারবারি নিহত হয়েছে। দুজন বেঁচে যান এবং পরবর্তীতে তাঁদের নিজ নিজ দেশ ইকুয়েডর ও কলম্বিয়ায় পাঠানো হয়। ইকুয়েডরে ফেরত পাঠানো ব্যক্তিকে পরে মুক্তি দেওয়া হয়, কারণ তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বুধবার ইন্ডিয়ানার ফোর্ট ওয়েইনে একটি প্রতিরক্ষা সম্মেলনে হেগসেথ মাদক চোরাচালানকারীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের আক্রমণাত্মক অবস্থান তুলে ধরেন। হেগসেথ বলেন, ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর জন্য আমার পরামর্শ খুব সহজ—নৌকায় উঠো না। যদি তুমি এমন কোনো নৌকা চালাও, যা আমেরিকানদের ক্ষতি করার জন্য মাদক বহন করছে, আর আমরা জানি তুমি কোনো মনোনীত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্য বা বিদেশি সন্ত্রাসী কিংবা চোরাচালানকারী—আমরা তোমাকে খুঁজে বের করব এবং হত্যা করব।’