ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে ‘অপারেশন গিদিয়নস চ্যারিয়ট’ নামে ভয়ংকর স্থল অভিযান শুরু করেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইডিএফের নির্মম বোমাবর্ষণে গত কয়েক ঘণ্টায় কমপক্ষে ১৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অকেজো হয়ে পড়েছে উত্তর গাজার সব সরকারি হাসপাতাল।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলা এখনো অব্যাহত রয়েছে। আইডিএফের ড্রোন ও ফাইটার জেট আকাশে ঘুরছে।
ইসরায়েলি হামলা গাজার উত্তরাঞ্চল, গাজা সিটি, মধ্যাঞ্চল এবং দক্ষিণের রাফাহ ও খান ইউনিসে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব অঞ্চলে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিদের বাড়ি ও ক্যাম্প লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। এই হামলায় কমপক্ষে ১৩৫ জন নিহত হয়েছে, তাদের মধ্যে চার শিশু রয়েছে।
স্থানীয় সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানায়, অনেক ফিলিস্তিনি ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নিয়মিত ও রিজার্ভ বাহিনী উত্তর ও দক্ষিণ গাজায় ‘ব্যাপক স্থল অভিযান’ শুরু করেছে। তারা হামাসের ‘৬৭০টির বেশি স্থাপনায়’ বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের দাবি, তারা এই অভিযানে কয়েক ডজন সন্ত্রাসীকে হত্যা এবং হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার বেশ কিছু এলাকা দখল করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই হামলার লক্ষ্য হামাসকে পরাজিত করা এবং গাজায় অনির্দিষ্টকালের জন্য সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখা। তিনি বলেন, ‘গাজাবাসীর নিরাপত্তার জন্য’ তাদের দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেন, এই পরিকল্পনায় পুরো গাজা দখলের কথা রয়েছে।
ইসরায়েলের পরিকল্পনায় দক্ষিণ গাজায় একটি ‘মানবিক অঞ্চল’ স্থাপনের কথা বলা হয়েছে, যেখানে সব ধরনের সাহায্য বিতরণ করা হবে। তবে এটি কোনো স্বাধীন মানবিক সংস্থার তত্ত্বাবধানে হবে না। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই পরিকল্পনার নিন্দা করে বলেন, এটি ‘বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু ও গাজার ধ্বংসের’ কারণ হবে। তিনি আরও বলেন, মানবিক সাহায্যের ওপর অবরোধ ‘আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি উপহাস’।