হোম > বিশ্ব > এশিয়া

‘শরিয়তসম্মত কি না সন্দেহ’, আফগানিস্তানে সাময়িক নিষিদ্ধ হলো দাবা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

২০২২ সালের জুনে কান্দাহারে দাবা খেলছেন দুই আফগান। ছবি: এএফপি

ইসলামি শরিয়তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, তা নিয়ে সন্দেহ, তাই দাবা খেলা সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করল আফগানিস্তানের তালেবান সরকার। সম্প্রতি তালেবান সরকারের মিনিস্ট্রি ফর দ্য প্রোমোশন অব ভার্চু অ্যান্ড প্রিভেনশন ভাইস বা সদাচারের প্রচার ও অপচারের প্রতিরোধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এই নির্দেশনা দিয়েছে। ফলে আফগানিস্তানে দাবা ফেডারেশন ও দাবা-সংক্রান্ত সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

তালেবান সরকারের মতে, দাবা খেলা জুয়াকে উৎসাহিত করতে পারে, যা ইসলামি শরিয়ায় হারাম বা নিষিদ্ধ। তালেবান ক্রীড়া অধিদপ্তরের মুখপাত্র আতাল মাশওয়ানি গত রোববার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, দাবার ব্যাপারে ধর্মীয় কিছু বিষয় বিবেচনায় আছে এবং এটি সদাচার প্রচারের দৃষ্টিকোণ থেকে নিষিদ্ধ হয়ে থাকতে পারে। তবে সেটি এখনো নিশ্চিত নয়। তাই যত দিন না এসব বিষয় স্পষ্ট হচ্ছে, তত দিন দাবা খেলা স্থগিত থাকবে।

এএনসিএফের কর্মকর্তা আরও জানান, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব অনেক আগেই আফগান দাবা ফেডারেশনকে কার্যত অচল করে দিয়েছে। ২০২১ সালে তালেবান কাবুল দখলের পর ফেডারেশনের অনেক কর্মকর্তা দেশ ছেড়ে পালান, কারণ তাঁরা প্রাণহানির আশঙ্কায় ছিলেন। তাঁদের অনুপস্থিতিতে তালেবান নিজেদের লোকদের ফেডারেশনের দায়িত্বে বসায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক দাবা সংস্থা তাঁদের স্বীকৃতি দেয়নি।

দাবার আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এখনো গুলাম আলি মালিক জাদের নেতৃত্বাধীন পুরোনো সংস্থাকেই স্বীকৃতি দিয়ে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে, মালিক জাদ বর্তমানে জার্মানিতে বা ইউরোপের কোনো দেশে আছেন। আফগানিস্তানের স্থানীয় দাবাড়ুরা মনে করেন, তিনি আন্তর্জাতিক দাবা সংস্থাগুলোর সঙ্গে মিলে তালেবান নিযুক্ত নতুন কমিটিকে কাজ করতে বাধা দিচ্ছেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, গত দুই বছর ধরেই ফেডারেশন ঠিকঠাক কাজ করছে না। একদিকে ধর্মীয় আপত্তি, অন্যদিকে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব। সব মিলিয়ে দিনকে দিন পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছিল। ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট বহু বছর আগে বিদেশে চলে গেলেও এখনো কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ কর চলেছেন, যার ফলে মাঠপর্যায়ে খেলোয়াড়েরা চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়ছিলেন।

যদিও তালেবান বলছে, এটি স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা নয়, বরং একটি সাময়িক সিদ্ধান্ত। তবে আফগানিস্তানের জাতীয় দাবা ফেডারেশন-এএনসিএফের এক শীর্ষ কর্মকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন, ‘আফগানিস্তানে দাবার মৃত্যু হচ্ছে। অথচ আফগান সমাজের রক্তে মিশে আছে দাবা। ঘরে, যেকোনো ক্যাফেতে, এমনকি গ্রামীণ বিনোদনের আসরেও দাবা দেখা যায়। আফগানরা দাবাকে ভালোবাসে, আমরা আন্তর্জাতিক পদক জিতেছি। এটি তো আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়েরই অংশ।’

তিনি আরও বলেন, ‘তালেবানের আলেমরা যত দিন না নিশ্চিত হচ্ছেন যে দাবা হালাল, হারাম না মাকরুহ, তত দিন সব দাবা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। দাবা আর এ দেশে বৈধ হবে কি না, তা অনিশ্চিত। অথচ অনেক ইসলামি দেশে দাবা নিষিদ্ধ নয়। এটি আসলে ধর্মীয় ব্যাখ্যার বিষয়, সরাসরি ধর্মের নয়।’

এএনসিএফের সাবেক সহসভাপতি আবদুল খালিক ওয়াইস বলেন, আফগানিস্তান থেকে দাবা পুরোপুরিভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হলো। প্রাতিষ্ঠানিক সমর্থনের অভাবে আফগান সমাজ থেকে একেবারে হারিয়ে যাবে খেলাটি।

উল্লেখ্য, আগেও ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের মধ্যে তালেবান শাসনের সময় দাবা নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৯৬ সালে আফগান অলিম্পিক দল ইয়েরেভান দাবা অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে আর্মেনিয়া গিয়ে আর দেশে ফিরতে পারেননি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফগানিস্তানে দাবা কিছুটা পুনরুজ্জীবিত হয়েছিল। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের পাশাপাশি কাবুলসহ শহরাঞ্চলে ঘরোয়া প্রতিযোগিতাও জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। অনেক ক্যাফে ও পার্কে অনানুষ্ঠানিক খেলাগুলো তরুণদের মাঝে বিনোদনের সুযোগ হয়ে উঠেছিল।

স্থানীয় দাবা প্রতিযোগিতার আয়োজন করতেন এমন এক ক্যাফের কর্ণধার আজিজুল্লাহ গুলজাদা বলেন, দাবা খেলা জুয়াকে উৎসাহিত করে—এমন অভিযোগ সত্য নয়। এখানকার তরুণদের বিনোদনের কোনো সুযোগই নেই বলতে গেলে। অনেকেই ক্যাফেগুলোতে এসে চা খেতে খেতে দাবা খেলত। বিনোদনের এই সুযোগটুকুও তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হলো।

‘মান বাঁচাতে’ ইউক্রেনকে ১০৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে ইইউ

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

সমুদ্র উপকূলে পাওয়া গ্যাস বিক্রি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের

ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে বিভিন্ন দেশ থেকে ৩২ হাজারের বেশি পাকিস্তানি বহিষ্কার

কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহরে বোমা ফেলল থাইল্যান্ড

বর্তমান বাংলাদেশ একাত্তরের পর সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ: ভারতের সংসদীয় কমিটি

ক্রিপটো চুরি করে এই বছর উত্তর কোরিয়ার আয় ২.২ বিলিয়ন ডলার

বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও ধর্মীয় বক্তাদের দমনে কঠোর হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

চেলসি ক্লাব বিক্রির অর্থ ইউক্রেনকে দিতে হবে—রুশ ধনকুবেরকে ব্রিটিশ আলটিমেটাম

তাইওয়ানে বিপুল অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন, নিজের বিপদ ডেকে আনছে যুক্তরাষ্ট্র—হুমকি চীনের