হোম > বিশ্ব > ইউরোপ

যাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা, তাঁর গল্পটি থেমে গেল হঠাৎ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

অ্যাঞ্জেলা রেইনার। ছবি: দ্য টাইমস

ব্রিটেনের রাজনীতিতে অ্যাঞ্জেলা রেইনারকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী নারীদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হতো। গত সপ্তাহ পর্যন্ত তিনি ছিলেন উপপ্রধানমন্ত্রী ও হাউজিং সেক্রেটারি। অনেকে মনে করতেন, ভবিষ্যতে তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অন্যতম সম্ভাব্য প্রার্থী। কিন্তু অস্বাভাবিক দ্রুত উত্থানের পর হঠাৎ করেই এল পতন।

নতুন বাড়ি কেনার সময় যথাযথ কর না দেওয়ার স্বীকারোক্তির পর তিনি সরকার ও দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। ফলে লেবার পার্টির এই হাই-প্রোফাইল এমপিকে এখন সংসদের পেছনের সারিতে ফিরে যেতে হচ্ছে।

দারিদ্র্য থেকে রাজনীতির শীর্ষে

১৯৮০ সালে গ্রেটার ম্যানচেস্টারের স্টকপোর্টে জন্ম রেইনারের। শৈশব কেটেছে দারিদ্র্য আর কষ্টে। বাবা-মা দুজনই বেকার ছিলেন। মায়ের ছিল মানসিক অসুস্থতা। ১০ বছর বয়সে আত্মহত্যাপ্রবণ মাকে পাশে শুয়ে পাহারা দেওয়ার অভিজ্ঞতার কথা একাধিকবার তিনি জানিয়েছেন। আর্থিক কষ্টের কারণে বাড়িতে গরম পানির ব্যবস্থাও ছিল না—প্রতি রোববার দাদির বাড়ি গিয়ে গোসল করতে হতো।

১৬ বছর বয়সে স্কুল ছাড়তে বাধ্য হলেও পরে পার্টটাইম পড়াশোনা করে সোশ্যাল কেয়ার বিষয়ে যোগ্যতা অর্জন করেন রেইনার। কেয়ারওয়ার্কার হিসেবে কাজের পাশাপাশি ইউনিসন নামের ট্রেড ইউনিয়নে দ্রুত নেতৃত্বের পর্যায়ে উঠে আসেন। এখানেই তিনি নিজের রাজনৈতিক যাত্রার প্রেরণা খুঁজে পান। ২০১৫ সালে ‘অ্যাশটন-আন্ডার-লাইন’ শহর থেকে লেবার পার্টির এমপি নির্বাচিত হয়ে সংসদে প্রবেশ করেন।

দ্রুত উত্থান ও প্রভাব

জেরেমি করবিনের নেতৃত্বে তিনি দ্রুত ছায়া মন্ত্রণালয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন। ২০২০ সালে লেবারের ভরাডুবির পর তিনি উপনেতা নির্বাচিত হন। কিয়ার স্টারমারের মন্ত্রিসভায় তিনি কার্যত শ্রমজীবী শ্রেণি ও দলের মূলধারার মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরিতে ভূমিকা রাখেন। স্পষ্টভাষী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগের ক্ষমতা তাঁকে দলীয় রাজনীতিতে বিশেষ মর্যাদা দেয়।

তবে সমালোচনাও কম আসেনি। কখনো কনজারভেটিভদের তীব্র ভাষায় আক্রমণ, আবার কখনো ব্যক্তিগত জীবনের কারণে তিনি আলোচনায় ছিলেন। ২০২১ সালে তখনকার প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে বিভ্রান্ত করতে সংসদে ইচ্ছাকৃতভাবে আচরণ করেছেন বলে এক সংবাদে তাঁকে নারীবিদ্বেষের শিকার হতে হয়।

পতনের কারণ

২০২৪ সালে নিজের কাউন্সিল হাউস বিক্রির সময় করসংক্রান্ত জটিলতায় তিনি তদন্তের মুখে পড়েন। যদিও কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হননি, তবে সম্প্রতি নতুন ফ্ল্যাট কেনার সময় পর্যাপ্ত কর না দেওয়ার অভিযোগে আবারও প্রশ্ন ওঠে। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের নৈতিকতাবিষয়ক উপদেষ্টা জানান, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল করেননি। কিন্তু মন্ত্রিসভার আচরণবিধির সর্বোচ্চ মান রক্ষা করতে পারেননি। এই অবস্থায় রেইনার পদত্যাগ করেন।

অকাল সমাপ্তি

৪৫ বছর বয়সে রেইনারের এমন রাজনৈতিক পতন লেবার পার্টির জন্য বড় ধাক্কা। গৃহনির্মাণে ১৫ লাখ নতুন বাড়ির অঙ্গীকার বাস্তবায়নে তিনি ছিলেন অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী। তাঁর প্রভাব ও জনপ্রিয়তা দলের জন্য মূল্যবান সম্পদ ছিল। কিয়ার স্টারমার স্বীকার করেছেন, রেইনার সামাজিক অগ্রগতির জীবন্ত প্রতীক ছিলেন।

দারিদ্র্য আর প্রতিকূলতা অতিক্রম করে লেবারের দ্বিতীয় নারী উপপ্রধানমন্ত্রী হওয়া অ্যাঞ্জেলা রেইনারের যাত্রা ব্রিটিশ রাজনীতির এক অনন্য গল্প। কিন্তু সেই গল্প আপাতত থেমে গেল অকালেই।

আদালতে শিনজো আবের পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইলেন হত্যায় অভিযুক্ত

দিল্লি সফর: ১০০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য চান পুতিন

বিমানে শালীন পোশাকের পরামর্শ মার্কিন মন্ত্রীর—প্রতিবাদে ‘অশালীন’ যাত্রীরা

মার্কিন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যোগ হতে পারে ৩০টির বেশি দেশ

মার্কিন হামলায় বেঁচে যাওয়া দুজনকে দ্বিতীয় আঘাতে হত্যা—ভিডিও ফাঁসে হইচই

পুতিনের নৈশভোজে যোগ দেবেন শশী থারুর, আমন্ত্রণ পাননি রাহুল

সিরিয়ায় নতুন বিদ্রোহের প্রস্তুতি—নেপথ্যে আসাদের নির্বাসিত গোয়েন্দাপ্রধান ও চাচাতো ভাই

পুতিনের হাতে ভগবদ্গীতা তুলে দিলেন মোদি

অস্ট্রেলিয়ায় ‘এশিয়ান এল চ্যাপোকে’ ১৬ বছরের কারাদণ্ড

ভিত্তিহীন অভিযোগে হার্ভার্ডের অধ্যাপককে গ্রেপ্তার করল মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ