রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, পূর্ব ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চল যে কোনো উপায়ে দখল করবে রাশিয়া, প্রয়োজনে সামরিক অভিযান চালিয়ে হলেও। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে–কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া সামরিক বা অন্য কোনো মাধ্যমে যেভাবেই হোক দনবাস ও নোভোরসিয়া মুক্ত করবে।’
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম তাস জানিয়েছে, এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে পুতিন পুনরায় ইঙ্গিত দিলেন, দনবাস সহ ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চল নিয়ে রাশিয়ার অবস্থান অপরিবর্তিত।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভারত সফর শুরু করেছেন পুতিন। এই সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হবেন তিনি। এর মাত্র দুই দিন আগেই তাঁকে দেখা গেছে, মস্কোতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ শান্তি দূত স্টিভ উইটকফ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনারের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে। সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধবিরতি ও সম্ভাব্য শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তাস জানিয়েছে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবারই যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর কথা ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের। সেখানে তাঁরা মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে একটি নতুন প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক করবেন। ইউক্রেনের একটি সূত্র মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানিয়েছে, এটি চলমান শান্তি উদ্যোগের আরেক দফা আলোচনা।
রাশিয়ার অন্যতম প্রধান শর্ত হলো ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে ছেড়ে দিতে হবে। এই অঞ্চলটির একটি বড় অংশ রাশিয়া ইতিমধ্যেই দখলে নিয়েছে। এ ছাড়া পুতিন তাঁর বক্তব্যে ঐতিহাসিক শব্দ ‘নোভোরসিয়া’ ব্যবহার করছেন। এই শব্দটি রুশ সাম্রাজ্যের সময় পশ্চিম দিকে বিস্তৃত অঞ্চল বোঝাতে ব্যবহৃত হতো এবং ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের সময়ও এই শব্দটি তিনি ব্যবহার করেছিলেন।
এর আগে গত বুধবার (৩ ডিসেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র–রাশিয়ার মধ্যে ভালো আলোচনা হয়েছে এবং পুতিন যুদ্ধ শেষ করতে চান। যদিও ওই আলোচনা থেকে এখনো বড় কোনো অগ্রগতি হয়নি। রুশ পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়েছেন, আলোচনায় ভূখণ্ড ইস্যু প্রধান ছিল এবং মার্কিন প্রস্তাবের কিছু অংশ গ্রহণযোগ্য হলেও কিছু রাশিয়ার পক্ষে নয়।
ইউক্রেন ইতিমধ্যে রাশিয়ার এই শর্তগুলোকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটির প্রধান আলোচক রুস্তেম উমেরভ এবং সেনাপ্রধান আন্দ্রি হনাতভ যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। চার দিন আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের উচ্চ পর্যায়ের আলোচনাকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও কার্যকর ও অগ্রগতিমূলক বলে বর্ণনা করেছিলেন। তবে চলমান এসব আলোচনার পরও যুদ্ধবিরতির বাস্তব কোনো ইঙ্গিত এখনো স্পষ্ট নয়।