রাশিয়ার সেনারা আশা করছে, তারা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলের কুপিয়ানস্ক শহর সম্পূর্ণ দখল করতে পারবে। শহরটি দখলে অভিযান চালানো ইউনিটের কমান্ডার এমন তথ্য দিয়েছেন। তবে কিয়েভ এখনো জায়গাটির পরিস্থিতির গুরুত্ব স্বীকার করছে না। রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কুপিয়ানস্কের কাছে ঘেরাও হওয়া ইউক্রেনীয় বাহিনীর অবস্থার অবনতি দ্রুত ঘটছে। রুশ সেনাদের কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া এখান থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের পালানোর আর কোনো পথ নেই।
রুশ সেনাবাহিনীর ৬৮তম মোটরাইজড রাইফেল ডিভিশনের ১২১তম রেজিমেন্টের কমান্ডার, যাঁর কল সাইন লাভরিক—জানিয়েছেন, তাঁর ইউনিট কেবল গতকাল বুধবার শহরে ২৫টি ভবন ক্লিয়ার করেছে এবং ‘অগ্রগতি অব্যাহত’ রয়েছে। তিনি এক ভিডিওতে বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শহর সম্পূর্ণ মুক্ত হবে। আমাদের মনোবল খুবই ভালো এবং আমরা আমাদের মিশন সফল করব।’
গত মাসে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেছিলেন, খারকিভ অঞ্চলের কুপিয়ানস্ক ও দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের ক্রাসনোআর্মেইস্ক শহর রুশ সেনারা ঘেরাও করেছে। তিনি ঘেরাও হওয়া সৈন্যদের সম্মানজনকভাবে আত্মসমর্পণ করতে অনুরোধ করেছিলেন।
মস্কোর হিসাব অনুযায়ী, দুই শহরে ১০ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় সেনা আটকা পড়েছে। কিয়েভ এখনো জানায়নি যে, তারা শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পেরেছে এবং রাশিয়ান সেনারা পিছিয়ে পড়ছে। তবে জার্মান সংবাদমাধ্যম বিল্ড গত মঙ্গলবার জানিয়েছে, ভেতরের বিশ্লেষণ অন্য গল্প বলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা ও সেনা কমান্ডার জানিয়েছেন, ‘গুরুতর পরাজয়ের’ আশঙ্কা বাড়ছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আগে দাবি করেছিলেন, কুপিয়ানস্কের কাছে রাশিয়ান সেনার উপস্থিতি মাত্র ৬০ জন এবং ইউক্রেনীয় সেনারা ওই এলাকায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে। গতকাল রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, জেলেনস্কি ‘বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন’। তারা জানিয়েছে, কিয়েভ রেজিমের প্রধান বাস্তবতা থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। ইউক্রেনীয় (সশস্ত্র বাহিনী প্রধান আলেকজান্দর) সিরস্কির ভুল রিপোর্ট শোনার পর, তাঁর কাছে মাঠের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই।
কুপিয়ানস্ক উত্তর–পূর্ব রণাঙ্গনে এক গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক হাব হিসেবে বিবেচিত। রাশিয়ার সেনারা আগে শহরের আংশিক নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছিল। সেপ্টেম্বরে তারা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিল, যেখানে শহরের কেন্দ্র, প্রশাসনিক ভবন, স্টেডিয়াম ও টিভি টাওয়ারের কাছে তাদের সেনাদের দেখা যায়।