হোম > বিশ্ব > আফ্রিকা

তানজানিয়ায় নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় ৭০০ নিহতের দাবি, জাতিসংঘ বলছে ১০

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

গত বুধবার তানজানিয়ার দার এস সালামে সহিংস বিক্ষোভ চলাকালে দাঙ্গা পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায় গত বুধবারের নির্বাচনের পর ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। দেশটির প্রধান বিরোধী দল চাদেমা দাবি করেছে, এ সহিংসতায় এখন পর্যন্ত সাত শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে জাতিসংঘ জানিয়েছে, তাদের কাছে ‘বিশ্বস্ত তথ্য’ রয়েছে—এ ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছে।

আজ শুক্রবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চাদেমা দলের মুখপাত্র জন কিতোকা বলেন, দার এস সালামে প্রায় ৩৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং মওয়ানজায় নিহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। দেশজুড়ে এই সংখ্যা যোগ করলে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৭০০।

কিতোকা জানান, দলের সদস্যরা দেশজুড়ে বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শন করে এ তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এএফপি জানিয়েছে, তারা নিরাপত্তা সূত্র থেকেও একই ধরনের তথ্য পেয়েছে।

তবে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এসব তথ্য যাচাই করতে পারেনি। তানজানিয়া সরকারও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করেনি, শুধু বলেছে—দেশে কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনার পর ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়’ নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের মুখপাত্র সেইফ মাগাঙ্গো আজ জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তা বাহিনীকে আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন অপ্রয়োজনীয় বা অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ না করে এবং পরিস্থিতি শান্ত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে।’

এর আগে গত বুধবার তানজানিয়ার বাণিজ্যিক শহর দার এস সালামে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। এ শহরে ৭০ লাখের বেশি মানুষের বাস। ওই দিন নির্বাচনে প্রধান দুই বিরোধী দলকে অংশ নিতে না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ নাগরিকেরা রাস্তায় নেমেছিলেন। বিক্ষোভকারীরা বেশ কয়েকটি যানবাহন, একটি পেট্রলপাম্প ও কয়েকটি থানায় আগুন ধরিয়ে দেন।

প্রথম দিনের বিক্ষোভের পর গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল জ্যাকব জন মুকুন্দা বিক্ষোভকারীদের রাস্তা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন এবং বলেন, সামরিক বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে কাজ করবে।

রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেওয়া ভাষণে জেনারেল মুকুন্দা বলেন, গত বুধবার কিছু লোক রাস্তায় নেমে অপরাধমূলক কাজ করেছে। তারা অপরাধী এবং এই অপরাধমূলক কাজ অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে।

কিন্তু বিক্ষোভকারীরা বাণিজ্যিক রাজধানী দার এস সালামের রাস্তায় আবারও নেমেছেন। আজ তাঁরা টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা দেশটির নির্বাচন কমিশনকে ফল ঘোষণা বন্ধ করার দাবি জানান। কিন্তু সরকার সেনা মোতায়েন করে এবং দেশজুড়ে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়।

চাদেমা মুখপাত্র কিতোকা বলেন, ‘আমরা সংস্কারের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাব।’

এদিকে, সহিংসতা বাড়ার আশঙ্কায় তানজানিয়ার প্রধান মুসলিম ধর্মগুরু শেখ আবুবকর জুবাইর বিন আলি মুসলমানদের বাড়িতে জুমার নামাজ পড়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।

তানজানিয়ার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম টিবিসির তথ্যমতে, দেশের মোট ১০০টি অঞ্চলের মধ্যে প্রায় ৮০টি অঞ্চলের ফলাফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।

ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান আবারও নির্বাচনে জয়ী হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। দলটি ১৯৬১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে তানজানিয়া শাসন করছে। আগামীকাল শনিবার আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সামিয়া হাসান ২০২১ সালে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর দায়িত্ব নেন। কিন্তু এর পর থেকে তাঁর সরকার সমালোচক, সাংবাদিক ও বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচিত।

জাতিসংঘ বলছে, দেশটিতে ‘বিরোধীদের ওপর আক্রমণ, গুম ও নির্যাতনের’ ঘটনা বেড়েই চলেছে।

বুধবারের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান তাঁর প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেননি। চলতি বছরের এপ্রিলে প্রধান বিরোধী দল চাদেমা নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের জাতীয় নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়। এর কয়েক দিন আগে দলের নেতা তুনদু লিসু এক জনসভায় নির্বাচনী সংস্কারের দাবি তুললে তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে, দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল এসি‌টি ওয়াজালেন্দোর প্রার্থী লুহাগা এমপিনাকে অ্যাটর্নি জেনারেলের আপত্তির পর অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।

জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো মাসের পর মাস ধরে তানজানিয়ার নির্বাচনসংক্রান্ত সহিংসতা ও দমননীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিল। গত জুনে জাতিসংঘের নয়জন বিশেষজ্ঞ প্যানেল এক বিবৃতিতে সরকারের কর্মকাণ্ডকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করে এবং ২০১৯ সাল থেকে দুই শতাধিক গুমের ঘটনা নথিভুক্ত করার কথা জানায়।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) সেপ্টেম্বরে জানায়, তারা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অন্তত ১০টি রাজনৈতিকভাবে প্রণোদিত হামলা, হয়রানি, অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। এ ছাড়া গণমাধ্যম ও নাগরিক সংগঠনের ওপর ব্যাপক সীমাবদ্ধতাও আরোপ করা হয়েছে।

‘মান বাঁচাতে’ ইউক্রেনকে ১০৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে ইইউ

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

সমুদ্র উপকূলে পাওয়া গ্যাস বিক্রি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের

ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে বিভিন্ন দেশ থেকে ৩২ হাজারের বেশি পাকিস্তানি বহিষ্কার

কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহরে বোমা ফেলল থাইল্যান্ড

বর্তমান বাংলাদেশ একাত্তরের পর সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ: ভারতের সংসদীয় কমিটি

ক্রিপটো চুরি করে এই বছর উত্তর কোরিয়ার আয় ২.২ বিলিয়ন ডলার

বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও ধর্মীয় বক্তাদের দমনে কঠোর হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

চেলসি ক্লাব বিক্রির অর্থ ইউক্রেনকে দিতে হবে—রুশ ধনকুবেরকে ব্রিটিশ আলটিমেটাম

তাইওয়ানে বিপুল অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন, নিজের বিপদ ডেকে আনছে যুক্তরাষ্ট্র—হুমকি চীনের