লিবিয়ার উপকূলীয় এলাকায় অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থী বহনকারী দুটি নৌকাডুবির ঘটনায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। নিহত চারজনই বাংলাদেশি বলে জানিয়েছে লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট।
গতকাল শনিবার সংস্থাটির পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী ত্রিপোলি থেকে প্রায় ১১৮ কিলোমিটার (৭৩ মাইল) পূর্বে অবস্থিত উপকূলীয় শহর আল-খুমসের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, প্রথম নৌকাটিতে ২৬ জন যাত্রী ছিলেন, যাঁদের সবাই বাংলাদেশি। নৌকাটি ডুবে যাওয়ায় এই ২৬ জনের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
দ্বিতীয় নৌকাটিতে ৬৯ জন যাত্রী ছিল, যাদের মধ্যে দুজন মিসরীয় এবং কয়েক ডজন সুদানি নাগরিক। দ্বিতীয় নৌকাটির যাত্রীদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, সে বিষয়ে বিবৃতিতে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। তবে রেড ক্রিসেন্ট নিশ্চিত করেছে, এই ৬৯ জনের মধ্যে আটটি শিশু।
উদ্ধার অভিযানে লিবিয়ার কোস্টগার্ড এবং আল-খুমস বন্দর নিরাপত্তা সংস্থা অংশ নেয়। লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্টের প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, স্বেচ্ছাসেবকেরা উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন এবং মৃতদেহগুলো কালো প্লাস্টিকের ব্যাগে সারবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। উদ্ধার করা জীবিত ব্যক্তিরা কম্বল মুড়ি দিয়ে বসে আছেন। রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, মৃতদেহগুলো শহরের পাবলিক প্রসিকিউশনের নির্দেশ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে ন্যাটো সমর্থিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে লিবিয়া ইউরোপে পৌঁছাতে ইচ্ছুক অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য একটি প্রধান ট্রানজিট রুট হয়ে উঠেছে।
গত বুধবার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, লিবিয়ার উপকূল থেকে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত আল বুরি তেলক্ষেত্রের কাছে একটি রাবার বোট ডুবে অন্তত ৪২ জন অভিবাসী নিখোঁজ হয়েছেন, তাঁদের মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ত্রিপোলির পশ্চিম উপকূলে ৬১ জন অভিবাসীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
অভিবাসীদের ওপর নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানাতে গত সপ্তাহে জেনেভায় জাতিসংঘের এক বৈঠকে যুক্তরাজ্য, স্পেন, নরওয়ে, সিয়েরা লিওনসহ বেশ কয়েকটি রাষ্ট্র লিবিয়ার প্রতি আটক কেন্দ্রগুলো বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো এসব কেন্দ্রে অভিবাসী ও শরণার্থীদের ওপর নির্যাতন, দুর্ব্যবহার এবং হত্যাকাণ্ড চালানোর অভিযোগ করে আসছে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা