হোম > স্বাস্থ্য > চিকিৎসকের পরামর্শ

দাঁতে সংক্রমণ হলে করণীয়

ডা. পূজা সাহা

প্রতীকী ছবি

বাংলা প্রবাদ আছে, দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝে না। আমাদের দেশের মানুষের ক্ষেত্রে প্রবাদটি সত্য। ক্ষয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে দাঁতের ব্যথা—সব ক্ষেত্রে অবহেলা দেখা যায়। এর কারণে দাঁতের গোড়ায় সংক্রমণ দেখা দেয়। গবেষণা বলছে, দাঁতে জীবাণুর সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হলে তা থেকে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন জটিল রোগ।

গোড়া এবং আশপাশে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় দাঁতের পাশে ও গোড়ায় পুঁজ জমে যায়। দাঁতের চারপাশের শিরা ও টিস্যুতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়াকে পেরিওডন্টাইটিস বলে।

সংক্রমণের লক্ষণ ও উপসর্গ

দাঁতের সংক্রমণের লক্ষণ হলো ক্রমাগত দাঁতে ব্যথা। এর ফলে মাড়ির নিচের শিরা-উপশিরা ফুলে যায়। দাঁতের সংক্রমণে জড়িত অন্য উপসর্গগুলো হলো—

  • দাঁতে ঠান্ডা বা গরমের স্পর্শে সংবেদনশীলতা দেখা দেওয়া।
  • জ্বরের অনুভূতি।
  • কিছু খাওয়ার সময় কামড়াতে বা চিবাতে অসুবিধা এবং ব্যথার অনুভূতি।
  • মুখে দুর্গন্ধ।
  • মুখে তিক্ত স্বাদ।

সংক্রমণের কারণ

  • মুখের যত্ন ও স্বাস্থ্যবিধির অভাব।
  • চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয় পান।
  • ধূমপান।
  • নিয়মিত চেকআপ ও পরিষ্কারের জন্য ডেন্টিস্টের কাছে না যাওয়া।
  • ডায়াবেটিস।
  • রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল হওয়া।
  • লালা উৎপাদন কমাতে পারে, এমন ওষুধ গ্রহণ করা।
  • মুখের আঘাতের চিকিৎসা না করা।
  • মাড়ির রোগ।
  • ফাটা দাঁত।

নির্ণয় ও চিকিৎসা

দাঁতে সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। দন্তচিকিৎসক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দিতে পারেন, যা থেকে সংক্রমণটির বৃদ্ধি ও ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে জানা যাবে। সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়ে থাকে দাঁতে। এ জন্য অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করতে হতে পারে। এর সঙ্গে কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে চিকিৎসা করা হয়।

প্রতিরোধ

  • একটি নরম ব্রিসলের টুথব্রাশ ও ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট দিয়ে দিনে দুবার দাঁত ব্রাশ করতে হবে।
  • দিনে অন্তত একবার দাঁত ফ্লস করতে হবে, যাতে দুই দাঁতের মাঝে জমে থাকা খাবারের অংশ পরিষ্কার হয়।
  • প্লাক ও ব্যাকটেরিয়া কমাতে অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে।
  • চিনি ও স্টার্চযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
  • নিয়মিত চেকআপ ও পরিষ্কারের জন্য ডেন্টিস্টের কাছে যেতে হবে।
  • মুখগহ্বর, মাড়ির রোগসহ অন্য কোনো রোগ থাকলে সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
  • ধূমপান বা অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে।
  • খেলাধুলার সময় মাউথ গার্ড ব্যবহার করতে হবে।
  • মুখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে পর্যাপ্ত ফল ও শাকসবজি খেতে হবে।
  • নিয়মিত ব্রাশ ও ফ্লস ধুয়ে ফেলার অভ্যাস অবশ্যই করতে হবে।

শরীরের যেকোনো অঙ্গের মতো দাঁতের যত্ন জরুরি। দাঁতে সংক্রমণ থাকা অবস্থায় কোনো রোগীর চোখ, কান, মস্তিষ্ক বা হার্টের মতো অঙ্গে অপারেশন ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ব্যথা উপশমের জন্য ‘পেইন কিলারের’ আশ্রয় না নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

গলা ও বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা: কেন হয় এবং প্রতিরোধে করণীয়

যেসব তথ্যে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না

মনমেজাজ ভালো রাখতে পুষ্টিকর খাবার জরুরি

সকালে নাশতা না খাওয়ার পাঁচ ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি

পিরিয়ডের সময় বেশি রক্তপাত হলে করণীয়

সাইনাসের সংক্রমণে চোখ ব্যথায় করণীয়

তরুণদের ডায়াবেটিস এক অশনিসংকেত

গলাব্যথার সবচেয়ে অবহেলিত কারণ টনসিলোফ্যারিঞ্জাইটিস

বিশ্ব হসপিস এবং প্যালিয়েটিভ কেয়ার দিবসে পিসিএসবি’র বিশেষ আয়োজন

দেশে বাড়ছে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ, সতর্ক থাকবেন যেভাবে