হোম > স্বাস্থ্য

মায়েদের প্রসব-পরবর্তী চিকিৎসায় রিহ্যাবিলিটেশন মেডিসিন

ডা. প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী 

সন্তান জন্মের পর মায়েদের আকস্মিকভাবে শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তন হয়। এ সময় মায়ের শরীর দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে এবং প্রায় হাড়, মাংসপেশি, অস্থিসন্ধি, স্নায়ুসংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়। যথাযথ চিকিৎসা নিলে, সঠিক যত্ন এবং কিছু নিয়ম মেনে চললে অনেক জটিলতা এড়ানো সম্ভব। এ ক্ষেত্রে রিহ্যাবিলিটেশনমেডিসিন একটি স্বীকৃত চিকিৎসাপদ্ধতি।

প্রসবের পর ৪২ দিন পর্যন্ত সাধারণত যেসব সমস্যায় পুনর্বাসন চিকিৎসা আলোকপাত করা হয়

  • ঘাড়, পিঠ, কোমর অথবা পা ব্যথা হওয়া।
  • হাঁটু, কবজির ব্যথা।
  • হাত, পা ও আঙুলে ঝিঁঝি ধরা, অবশ হয়ে যাওয়া।
  • ক্লান্তি বোধ বা অস্বস্তি অনুভব করা।
  • অনেক ক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলো দীর্ঘমেয়াদি রূপ নিতে পারে।

কারণ

  • হরমোনজনিত।
  • মেরুদণ্ডের বক্রতার পরিবর্তন।
  • শারীরিক স্থূলতা।
  • নার্ভের ওপর অতিরিক্ত চাপ।
  • পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব।
  • অপর্যাপ্ত খাদ্য।
  • মানসিক অশান্তি।

প্রসব-পরবর্তী পুনর্বাসন চিকিৎসার উদ্দেশ্য

  • মায়েদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানো।
  • বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো।
  • প্রসব-পরবর্তী জটিলতার চিকিৎসা করা।
  • প্রসব-পরবর্তী জটিলতা কমানো।
  • দ্রুত মানসিকভাবে স্বাভাবিক পরিবেশে খাপ খাওয়ানো।

প্রসব-পরবর্তী পুনর্বাসন চিকিৎসা

চিকিৎসক রোগনির্ণয়ের জন্য অনেকটাই রোগীর উপসর্গ অনুযায়ী ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার ওপর নির্ভর করে থাকেন। তবে প্যাথলজিক্যাল কিছু পরীক্ষা করার প্রয়োজনও হতে পারে।

ওষুধ

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্বল্প মাত্রার ব্যথানাশক ওষুধ, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল, ক্যালসিয়াম ট্যাবলেটসহ অন্যান্য ওষুধ খাওয়া যাবে।

শারীরিক অনুশীলন

প্রসব-পরবর্তী সময়ে সক্রিয় মায়েদের শারীরিক ও মানসিকভাবে দ্রুত খাপ খাইয়ে নেওয়া খুব সহজ হয়। তবে শারীরিক অনুশীলন নির্ভর করে মায়ের প্রসব-পরবর্তী বিভিন্ন অবস্থার ওপর। উল্লেখ্য, প্রসবের ধরন

ও উপসর্গ অনুযায়ী ব্যায়াম এবং ব্যায়াম শুরু করার সময় নির্বাচন করে নিতে হয়। কেবল চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক বাচ্চার জন্মের পরে মৃদু শারীরিক কার্যকলাপ দিয়ে শুরু করতে হবে। আপনি নিয়মিত কয়েক মিনিট করে হাঁটা শুরু করতে পারেন এবং ধীরে ধীরে প্রতি সপ্তাহে পাঁচ থেকে সাত দিন ২০-৩০ মিনিট করে হাঁটতে পারেন।

ব্যায়ামের উপকারিতা

  • ব্যায়াম অঙ্গবিন্যাস সমর্থনকারী পেশি শক্তিশালী করে।
  • ব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করে।
  • মানসিকভাবে প্রফুল্ল রাখে।

কখন ব্যায়াম বন্ধ রাখবেন

  • বুকে-পিঠে চাপ অনুভব করলে।
  • শ্বাসকষ্ট হলে।
  • খিঁচুনি দেখা দিলে।
  • অতিরিক্ত হৃৎস্পন্দন দেখা দিলে।
  • মাথা ঘোরালে।
  • অশান্তি অনুভব হলে।

খাবার

  • শরীরের ক্ষয় পূরণের জন্য প্রসবের পর মাকে বেশি করে খাবার খেতে হবে।
  • শিশুর প্রয়োজনে মায়ের সুষম খাবার অবশ্যই খাওয়া প্রয়োজন।
  • পর্যাপ্ত পানি অথবা পানিজাতীয় খাবার খান।
  • ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার খেতে হবে।

দৈনন্দিন কাজ

পর্যাপ্ত বিশ্রাম (দুপুরের খাবারের পর ২ ঘণ্টা এবং রাতে ৬-৮ ঘণ্টা) বিশ্রাম নিতে হবে।

  • শারীরিক ও মানসিক চাপ কমাতে হবে ।
  • ভারী কাজ করা যাবে না।
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
  • সঠিক দেহভঙ্গি মেনে চলতে হবে।
  • সমতল জায়গায় হাঁটার অভ্যাস করুন।

সতর্কতা

  • যেসব ক্রিয়াকলাপে পেটে প্রচুর স্ট্রেচিং হয়, সেলাইগুলোতে খুব বেশি চাপ পড়ে, সেগুলো থেকে বিরত থাকুন।
  • চলাফেরায় তাড়াহুড়া করা যাবে না।
  • তীব্র মাত্রার কোনো ধরনের শারীরিক অনুশীলন করা যাবে না।
  • কোনোক্রমেই পেটে ঠান্ডা বা গরম সেক অথবা কোনো ম্যাসাজ করবেন না।
  • হাই হিল জুতা পরা যাবে না। কম হিলের আরামদায়ক জুতা পরুন।
  • সিজারিয়ান জন্মের পর থেকে সেলাইয়ের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
  • দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন।
  • অসমতল রাস্তা বা অত্যধিক সিঁড়ি ব্যবহার করবেন না।
  • যেকোনো বিপদ চিহ্ন দেখা দিলে দ্রুততম সময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

পরামর্শ দিয়েছন: ডা. প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী, ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিশেষজ্ঞ

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ক্যানসার রিসার্চ অ্যান্ড হাসপাতাল, ঢাকা

চেম্বার: আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর-৬, ঢাকা

জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি: অর্থায়ন বন্ধে যক্ষ্মা বিস্তারের শঙ্কা

এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৬৬.৫৭ শতাংশ

শীতে যেসব খাবার মন শান্ত রাখবে

পুরুষ বন্ধ্যত্ব: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

শীতকালীন নানা রোগ থেকে মুক্ত থাকবেন যেভাবে

রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে করণীয়

থাইরয়েড হরমোন কম থাকার লক্ষণ

ওষুধকে ফাঁকি দিতে মরার ভান করে ক্যানসার কোষ—গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য

সাধারণের স্বাস্থ্যসেবা: মিলিয়ে যাচ্ছে ‘সূর্যের হাসি’

ব্লাড ক্যানসার আর মরণব্যাধি নয়, জিন থেরাপিতে অভাবনীয় সাফল্য