রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত বরিশালের বাবুগঞ্জের ছয় বছরের শিশু বৃষ্টি আক্তার ঢাকা মেডিকেলের শয্যায় শুয়ে শুয়ে মা-বাবাকে খুঁজে চলেছে। সে এখনো জানে না, একই দুর্ঘটনায় তার মা-বাবা আর নানাও নিহত হয়েছেন। এরই মধ্যে তাঁদের মরদেহ দাফন করা হয়ে গেছে।
রাজধানীর মাতুয়াইলে গত শুক্রবার বাসের চাপায় নিহত হন অটোরিকশার আরোহী বৃষ্টির মা শারমিন আক্তার (৩৬), বাবা রিয়াজুল ইসলাম (৪২) ও নানা আব্দুর রহমান।
নিহত রিয়াজুলের চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউসুফ খান বলেন, গতকাল শনিবার সকাল আটটার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনটি মরদেহ চরফতেপুর গ্রামে পৌঁছায়। তখন এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। শত শত মানুষ জানায় অংশ নেন। জানাজা শেষে রিয়াজুল ও শারমিনের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরে আব্দুর রহমানের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় উজিরপুরের মশাং গ্রামে। সেখানে বেলা দুইটায় জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
জানা গেছে, ক্যানসারে আক্রান্ত সাহেদা আক্তারকে দেখতে বরিশাল থেকে ঢাকায় গিয়েছিলেন স্বামী আব্দুর রহমান, মেয়ে শারমিন আক্তার ও জামাতা রিয়াজুল ইসলাম ও নাতনি বৃষ্টি আক্তার। লঞ্চে ঢাকা সদরঘাটে নেমে অটোরিকশায় করে মাতুয়াইলে আরেক ছেলে তানভীরের বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে মাতুয়াইল হাসপাতালের সামনে বাসের চাপায় ওই তিনজন নিহত হন।
নিহত দম্পতির শাহরিয়ার (১২) নামের আরেকটি ছেলে সন্তান রয়েছে। নিহত আব্দুর রহমানের ছেলে নজরুল ইসলাম বলেন, তাঁর মা সাহেদা খাতুন মহাখালী ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্বামী এবং মেয়ে ও জামাতার মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর তাঁকে জানানো হয়নি। তা ছাড়া বৃষ্টিকেও বলা হয়নি, তার মা-বাবা ও নানা মারা গেছেন। এরই মধ্যে তাঁদের মরদেহ দাফনও হয়ে গেছে। মেয়েটি তার মা-বাবার খোঁজ করছে।