ভোলার লালমোহন উপজেলায় একটি পুরোনো বটগাছ ঘিরে দেখা দিয়েছে কৌতূহল। ৩০০ বছরের পুরোনো গাছটি ঘিরে রয়েছে অসংখ্য রূপকথা।
কয়েক দশক ধরে বটগাছটিকে পূজা করে আসছেন ওই এলাকার সনাতন ধর্মের অনুসারীরা। তবে কে, কখন এই বটগাছ রোপণ করেছিলেন, তার সঠিক কোনো ইতিহাস পাওয়া যায়নি।
জনশ্রুতি রয়েছে, অমাবস্যা কিংবা পূর্ণিমার রাতে আলোকিত হয়ে ওঠে এই বটগাছ। মধ্যরাতে শোনা যায় নূপুরের আওয়াজ। গাছে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির সাপের বাস। গাছের পাশে রয়েছে বিশাল দিঘি। সেই দিঘি নিয়েও রয়েছে নানান গল্প। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে পুকুরে সোনার নৌকা ও থালাবাসন ভেসে আসার গল্প।
বটগাছ ও দিঘিটি নিয়ে অসংখ্য অলৌকিক ঘটনা পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে শুনে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ জন্য গাছটি স্থানীয়দের কাছে রহস্যঘেরা।
৩০০ বছরে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহ্য করে অক্ষত রয়েছে গাছটি। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গাছটির সৌন্দর্য অনেকটাই হারিয়ে গেছে।
ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের গজারিয়া বাজার এলাকায় লক্ষ্মীশীল বাড়ি বা বটতলা কালীবাড়ি নামক এলাকায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বটগাছটি।
ওই বাড়ির বাসিন্দারা জানান, বটগাছের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও একটি গাছ। দুটি গাছ যেন একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। গাছের পাশেই রয়েছে মন্দির। সেখানে প্রতিবছর কালী, শীতলা ও বুড়ি মায়ের পূজা হয়। বাড়িটির ঐতিহ্য ধরে রেখেছে প্রাচীন বটগাছটি।
দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসেন গাছটি দেখতে। ১০ বছর আগেও অচেনা এক বেদে সর্দার এখানে এসেছিলেন সাপ ধরতে। গভীর রাতে বটগাছটির সামনে দিয়ে চলাফেরা করতে অনেকেই ভয় পান। তবে এখানে এখন পর্যন্ত কারও কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানান স্থানীয় লোকজন। পুরোনো এ বটগাছের স্মৃতিচিহ্ন ধরে রাখার দাবি তাঁদের।
ওই বাড়ির ৮০ বছর বয়সী সন্তোষ কুমার দাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গাছটি অনেক বছরের পুরোনো। আমার পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে গাছটির গল্প শুনে বড় হয়েছি। গাছটি ঘিরে রয়েছে অনেক রূপকথা।’
স্থানীয় বাসিন্দা পাপ্পু চন্দ্র দে বলেন, ‘সেই ছোটবেলা থেকে গাছটিকে যেমন দেখে এসেছি, এখনো তেমনি রয়েছে।’
পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মহাদেব চন্দ্র ব্যাপারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লালমোহনের পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের চর জেগে ওঠার আগে থেকেই এ গাছ দেখা গেছে বলে শুনেছি। গাছটি বহু বছরের পুরোনো। প্রায় ৩০০ বছরের হবে। স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রাখতে গাছটি সংরক্ষণ করা দরকার।’