পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বনকর্মীদের বিরুদ্ধে হরিণের মাংস উদ্ধারের পর সিংহভাগ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা এমন অভিযোগ করলেও বনকর্মীরা তা অস্বীকার করেছেন।
বনকর্মীরা বলছেন, গত শনিবার দুপুরে গাবুরার চৌদ্দরশি সেতুর নিচ থেকে ককসিটে থাকা ১৩ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার করেন তাঁরা। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন অফিসার সুলতান আহমেদ। বনকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান পাচারকারী চক্রের সদস্যরা।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মাছের নৌকায় সাতক্ষীরায় পাঠানোর জন্য ৪৫ কেজি হরিণের মাংস ভরা দুটি ককসিট সেতুসংলগ্ন মাছের আড়তের সামনে রাখা হয়। ককসিটের ওপরে সাতক্ষীরার এক ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বর লেখা ছিল। কিন্তু নৌকায় ওঠানোর আগেই গোপনে খবর পেয়ে বনকর্মীরা চলে এলে স্থানীয় দুজন ককসিট দুটি ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যান। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জোড়শিং এলাকার শিকারী চক্রের কাছ থেকে ওই মাংস পাচারের জন্য সংগ্রহ করে পাচারকারীরা।
বনকর্মীদের তথ্যদাতা সবুজ হোসেন বলেন, দুটি ককসিটে বস্তায় ভরে হরিণের মাংস পাচারের চেষ্টার খবর তিনিই বনকর্মীদের দেন। মাংস উদ্ধারের পর বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনে নেওয়া হয়। তিনি পরিমাপ করেননি।
প্রত্যক্ষদর্শী তাইজুল ইসলাম বলেন, অভিযানের সময় তিনি কাছাকাছি ছিলেন। দুটি ককসিটে বিপুল পরিমান মাংস দেখেছিলেন। তবে পরে মাত্র ১৩ কেজি মাংস বিনষ্টের খবরে বিস্মিত হন।
এই মাংস পাচারের ঘটনায় চৌদ্দরশি খোলপেটুয়া গ্রামের আব্দুল হালিমকে অন্যতম অভিযুক্ত করা হলেও তিনি তা অস্বীকার করেছেন। তিনি উল্টো অভিযোগ করেন, মাংস উদ্ধারের পর প্রতিপক্ষ তাঁকে আটক করে ভিডিও করে। দুটি বস্তায় ৩০ থেকে ৪০ কেজি মাংস ছিল বলে তাঁকে উল্লেখ করতে বলা হয়।
স্থানীয়দের দাবি, দুটি ককসিট থেকে ৪৫ কেজি মাংস উদ্ধার হলেও মাত্র ১৩ কেজি উদ্ধার দেখানো হয়েছে। বাকি মাংস আত্মসাৎ হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বন বিভাগের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন অফিসার সুলতান আহমেদ বলেন, ঘটনাস্থলে পরিত্যক্ত অবস্থায় ১৩ কেজি মাংস পাওয়া যায়। সেখানে কতটা মাংস ছিল বা পাচার হচ্ছিল, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্য কেউ দেয়নি।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এম এ হাসান বলেন, স্টেশন অফিসারের মাধ্যমে তিনি ১৩ কেজি সমপরিমান মাংস উদ্ধারের তথ্য পেয়েছিলেন।