ফরিদপুর-বরিশাল-কুয়াকাটা জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করতে প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার বাইপাস সড়ক হচ্ছে বরিশালের অংশে। নগরীর বাইরের গড়িয়ারপার থেকে দপদপিয়া সেতুর টোল ঘরের ৫০০ মিটার দুরে এ বাইপাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ জন্য জমি অধিগ্রহণে ব্যয় হতে পারে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। এই মহাসড়ক ফোর লেনে উন্নীতকরণের সোমবার সড়ক ও জনপথ বিভাগের সঙ্গে অংশীজনদের এক মতবিনিময় সভায় ৯৫ ভাগই নগরীর বাইরে বাইপাস সড়ক করার পক্ষে মত দিয়েছেন।
ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী কুয়াকাটা জাতীয় মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণের বরিশাল নগর অতিক্রমকারী অংশের অ্যালাইনমেন্ট নির্ধারণ বিষয়ক এ অংশীজন সভার সভাপতিত্ব করেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মো. তারেক ইকবাল। সভায় বরিশালের জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি, শিক্ষক, সুধীজনেরাও উপস্থিত থেকে মত দিয়েছেন।
সড়ক ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় বরিশাল সরকারি বিএম কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক আল আমিন সরোয়ার এ মহাসড়ক ফোর লেনে উন্নীতকরণের জন্য নগরীর বাইরে থেকে বাইপাস সড়ক করার পক্ষে মত দেন। তার মতে এটি হলে শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিতে থাকবে না, পরিবেশও দূষণ হবে না।
নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির বলেন, ফোর লেন করতে হলে বাইপাস সড়ক হতে হবে গড়িয়ারপার থেকে বাড়ইজার হাট, মহানগর কলেজের সামনে থেকে রুইয়া, টিয়াখালী থেকে পশ্চিমে। নগরীর মধ্য থেকে এই মহাসড়ক যাওয়া সম্ভব নয়। একই মত দিয়েছেন নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাকির হোসেন।
উন্নয়ন সংস্থা আভাস এর পরিচালক রহিমা সুলতানা কাজল বলেন, সড়ক পায়রা সেতুর মত দৃষ্টিনন্দন ও টেকসই হতে হবে।
জবাবে আবু হেনা বলেন, বরিশাল নগরবাসী সব সময় বাইপাস সড়কের পক্ষে। বাইপাস সড়ক নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নগরীর রাস্তা প্রশস্ত করার বিষয়ে সিটি মেয়র সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। ৪ লেন করার জন্য রেলওয়ে, বিমান, সিটি করপোরেশন, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরসহ সাধারণের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
সভায় উপস্থিত সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. শামিমুজ্জামান বলেন, বরিশালে যাতে বাইপাস সড়ক হয় সে লক্ষ্যে ২-৩ বছর আগে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আশা করেন দ্রুত ভূমি অধিগ্রহণ শুরু হলে আগামী বছর যে কোনো সময় সড়কের কাজ শুরু হবে।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সওজ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ, রোড জিজাইন ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী বুলবুল হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন প্রমুখ।
বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের জরিপকারী আরিফ হোসেন বলেন, সড়ক বিভাগের জরিপ অনুসারে নগরীর মধ্যের বর্তমান সড়ক দিয়ে ফোর লেন গেলে ১০.২০ কিলোমিটার সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ১৫ শ কোটি টাকা। কিন্তু নগরীর বাইরে বাইপাস হলে খরচ হবে ৮১৫ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত এ বাইপাস সড়কের দূরত্ব ১১.৩০ কিলোমিটার। জমি অধিগ্রহণ খরচ বেড়ে ১ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। আগামী অর্থবছরের মধ্যে বাইপাস সড়কের কাজ শুরু হতে পারে।