২০১১ সালে এলাকাবাসী ১৪ হাজার টাকা চাঁদা তুলে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দাঁড় করান মনিরামপুরের কুচলিয়া গ্রামের প্রণব বিশ্বাসকে। ভোটারদের অকুণ্ঠ সমর্থনে প্রথমবারের ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এর পর আর তাঁকে নির্বাচনে হার মানতে হয়নি।
নাগরিক সেবায় মুগ্ধতা ছড়িয়ে টানা তিনবার নিজের কোনো টাকা খরচ ছাড়াই ওয়ার্ডবাসীর ভালোবাসায় জয়যুক্ত হন ইউপি সদস্য প্রণব বিশ্বাস।
কুচলিয়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বিজন বন্ধু বিশ্বাসের ছেলে প্রণব বিশ্বাস। হরিদাসকাটি ইউনিয়নের ৯ নম্বর (দিগঙ্গা-কুচলিয়া ও লেবুগাতি) ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তিনি। গত ২৮ নভেম্বরের নির্বাচনে ফুটবল প্রতীকে ৯৫৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন তিনি।
গত ১০ বছরে প্রণব বিশ্বাস নিজ ওয়ার্ডের ৪০ জনকে বয়স্ক, ৩০-৩২ জনকে বিধবা ও ১৩ জনকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন। মাতৃত্বকালীন ভাতা দিয়েছেন ৩০ জন প্রসূতিকে, ভিজিডি দিয়েছেন ৫৮ জনকে এবং দশ টাকার চালের কার্ড দিয়েছেন ১২০ দুস্থ ও অসহায় পরিবারকে।
ভাতার কার্ডসহ যে কোনো নাগরিক সুবিধা দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ইউপি সদস্যেদের বিরুদ্ধে উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ থাকলে এ বদনাম থেকে মুক্ত প্রণব বিশ্বাস। ভাতার কার্ডে বা নাগরিক সেবা দিয়ে টাকা নেওয়ার কোনো অভিযোগ নেই তাঁর বিরুদ্ধে। এ কারণে ওয়ার্ডবাসী নিজেদের খরচে তৃতীয়বারের মতো প্রণব বিশ্বাসকে নিজেদের প্রতিনিধি বানিয়েছেন।
লেবুগাতি গ্রামের নমিতা মণ্ডল বলেন, ‘আমার শাশুড়ি দীর্ঘদিন অসুস্থ। প্রণব মেম্বর পাঁচ-ছয় বছর আগে বিনা টাকায় তাঁকে বয়স্কভাতার কার্ড করে দিয়েছেন।’
প্রণব বিশ্বাস বলেন, ‘২০১১ সালে গ্রামের লোকজন ১৪ হাজার টাকা চাঁদা তুলে আমাকে নির্বাচনের খরচ দেন। সে বছর পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে আমি জয়ী হয়েছিলাম। ২০১৬ সালে আবার নির্বাচনী খরচের জন্য এলাকাবাসী ৩৬ হাজার টাকা দেন। তখনও নির্বাচিত হই। আর এবার ৫৭ হাজার ৫১০ টাকা খরচ দেন গ্রামবাসী। সেই টাকা ব্যায়ে আবারও জয়ী হয়েছি।’
জনপ্রিয় এ ইউপি সদস্য বলেন, ‘এ সেবায় সরকারি যে খরচ আসে তা আমি নিজের সম্মানী থেকে দেব। জনগণের খরচে ভোট করে জয়ী হয়েছি। নিজের ভাতাও তাঁদের পেছনে ব্যয় করতে চাই।’