হোম > ছাপা সংস্করণ

৪ হাজার মানুষ বাস্তুহারা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধায় অসময়ে তিস্তার ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। সরকারি ও বেসরকারিভাবে ভাঙন ঠেকাতে নেওয়া ব্যবস্থা কোনো কাজে আসছে না। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের তথ্যমতে, গত ১০ বছরে জেলার সুন্দরগঞ্জে নদীভাঙনে বাস্তুহারা হয়েছে ৪ হাজার পরিবার, ৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমি এবং দেড়শ কিলোমিটার পাকা রাস্তা। স্থানীয় সাংসদ ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানান, তিস্তার ভাঙন নিয়ে জাতীয় সংসদে বেশ কয়েকবার জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশ দিয়ে কথা বলেছি। পানিসম্পদমন্ত্রীকে কয়েকবার ভাঙনকবলিত এলাকায় নিয়ে গিয়েছিলাম। গত বছর প্রায় ৫ কোটি টাকার জিও টিউব ও জিও ব্যাগ ভাঙনকবলিত এলাকায় ফেলা হয়েছে। তিস্তা রক্ষায় সরকারের ৪০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্পটির কাজ শুরু হলে হয়তো কিছুটা ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে।

জানা যায়, উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চণ্ডীপুর, শ্রীপুর, কাপাসিয়া, শান্তিরাম ও কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নে প্রতিবছর তিস্তার ভাঙনে কমপক্ষে ৩০০-৪০০ পরিবার নদীগর্ভে বিলীন হয়। বাস্তুহারা ভাঙনরোধে আজ পর্যন্ত স্থায়ীভাবে নদী খনন, ড্রেজিং, সংস্কার ও সংরক্ষণ কোনো কিছুই করা হয়নি। বন্যার সময় অস্থায়ীভাবে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়। উজান থেকে নেমে আসা পলিতে বর্তমানে তিস্তা নদী আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে অসংখ্য শাখা ও নালায় পরিণত হয়েছে। সে কারণে ভাঙনের তীব্রতা আরও বেড়ে গেছে।

তারাপুর ইউনিয়নের নিজাম খাঁ গ্রামের আকবর আলী জানান, ৪০ বছর আগে তার বাবা নদীভাঙনের শিকার হয়ে এই গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। বর্তমানে চর এলাকায় তার বাপ-দাদার ৩০ বিঘা জমি জেগে উঠেছে। ওই সমস্ত জমিতে এখন চাষাবাদ করছেন তাঁরা। তাঁর দাবি, স্থায়ীভাবে নদী খনন এবং ড্রেজিং করলে শাখা ও নালা নদীগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। পাশাপাশি জেগে ওঠা জমি আর কখনো ভাঙবে না।

কাপাসিয়া ইউনিয়নের বাদামের চর গ্রামের মোন্তাজ আলী জানান, উপজেলায় ১৬টি ইউনিয়ন ছিল। তিস্তার ভাঙনে উপজেলার ভূখণ্ড হতে একটি ইউনিয়ন বিলুপ্ত হয়ে গেছে আজ থেকে ৩৫ বছর আগে। বর্তমানে ১৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, নদীভাঙনের কষ্ট সেই জানে, নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে যার বসতবাড়ি।

মোন্তাজ আলী জানান, তাঁর বয়স এখন ৬০ বছর। এ পর্যন্ত তাঁর বসতবাড়ি ১৮ বার ভাঙনের শিকার হয়েছে।

উপজেলার নাজিমাবাদ বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, গত ৫ বছর তিস্তার ভাঙনের রূপ পরিবর্তন হয়ে গেছে। গোটা বছরে ভাঙছে নদী। গত বছরের শুরুতেই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কাশিমবাজার হাট তিস্তায় বিলীন হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে ওই এলাকার কাঁচা-পাকা রাস্তাঘাট বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন রোধের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে জিও টিউব ফেলা হলেও কোন লাভ হয়নি।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল মারুফ জানান, প্রতিবছর বন্যার সময় তিস্তার ভাঙনে অনেক পরিবার নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। পাশাপাশি আবাদি জমি, রাস্তাঘাট ভাঙনের শিকার হয়। নদী ভরে গিয়ে অসংখ্যক শাখা নদী এবং নালায় পরিণত হয়েছে। সে কারণে গোটা বছর নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান জানান, তিস্তায় প্রতিবছর বেশ কিছু পরিবার বাস্তুহারা হচ্ছে। নদী খনন, ড্রেজিং, শাসন ও সংরক্ষণে বড় প্রকল্পের প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ